নবীনগরে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী নিপীড়ন ও ধর্ষনের অভিযোগ। স্থানীয় অভিভাবকরা আতংকে
নবীনগর প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার দাসের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগের রেশ কাটতে না কাটতে এবার কনিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজী শিক্ষক কাজী মুরাদের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নবম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। এই দুইটি ঘটনায় অভিভাবকদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। পুলিশ কাজী মুরাদকে গ্রেফতার করলেও মামলার এক মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি প্রদীপ কুমার দাসকে। এই দুই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছে প্রদীপ কুমার দাস। অপর ঘটনায় গতকাল শনিবার কাজী মুরাদের বিচারের দাবীতে কনিকাড়া গ্রামবাসি মানববন্ধনের ডাক দিয়েছে।
এলাকাবাসির ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সলিমগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার দাস তার কাছে প্রাইভেট পড়তে যাওয়া মেয়েদের দীর্ঘদিন ধরে নানা কৌশলে যৌন নিপীড়ন করে আসছিলেন। এ কথা ফাঁস করলে পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকি দিতেন তিনি। শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলামের কাছে একাধিকবার এই বিষয়ে অভিযোগ করলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে সহকর্মীর পক্ষেই অবস্থান নেন। শেষ পর্যন্ত মোবাইল ফোনে তার কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক মহলে।
তাই দুই শিক্ষকেরই শাস্তি দাবি করছেন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। সহপাঠীদের যৌন হয়রানীর প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে সলিমগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। স্থানীয় সংসদ সদস্য এবাদুল করিম বুলবুলের বাড়িতে গিয়ে দুই শিক্ষকের বিচার দাবি করে তারা। এসময় স্থানীয় এমপি দুই অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। ৯ জুন সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার দাস এবং প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন যৌন হয়রানির শিকার এক শিক্ষার্থীর ভাই। মামলা এক মাস পার হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারিনি পুলিশ।
এদিকে সমঝোতার জন্য সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রদীপ দাসে সাথে দু’জন ছাত্রীর কথপোকথনের একটি অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে। অপরদিকে কনিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীর এক ছাত্রী ওই বিদ্যালয়ের ইংরেজী শিক্ষক কাজী মুরাদের নিকট প্রায় দুই মাস ধরে প্রাইভেট পড়িয়া আসিতেছে। ১ জুলাই ওই ছাত্রীকে কাজী মুরাদ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে হাসপাতাল পাড়ায় তার ভাড়া বাসায় নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। পরে ওই ছাত্রীকে রাতে নবীনগর সমবায় মার্কেটের সামনে ছেড়ে যাওয়ার সময় বিষয়টি প্রকাশ পায়। ওই রাতেই স্কুল কর্তৃপক্ষ ও আতœীয় স্বজনরা বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্ট করে ব্যার্থ হয়ে ওই শিক্ষককে ২ জুলাই থানায় সোর্পদ করে। শিক্ষকের বাড়ি উপজেলার রতনপুর গ্রামে শেখের পাড়া কাজী আসাদ উল্লাহ ছেলে। এই ঘটনায় মেয়ের চাচা বাদী হয়ে নবীনগর থানায় মামলা করে।
ইন্সেপেক্টর (তদন্ত)মো.রাজু আহম্মেদ ঘটানা দুটির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক কাজী মুরাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শিক্ষক প্রদীপ কুমার দাসকে গ্রেফতারে সাড়াশি অভিযান অব্যাহত আছে,তাকে যে কোন মুহুর্তে গ্রেফতার করা হবে।