ভূমি কর্মকর্তার অনৈতিক কান্ড
নবীনগরেনবীনগরে ঘুষ না দেওয়ায় মিথ্যা তথ্য প্রেরণ মিথ্যা তথ্য প্রেরণ
প্রতিনিধি:: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে এক ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ না দেওয়ায় জমি সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য প্রেরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় জমির প্রকৃত মালিককে এখন খেসারত দিতে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের অসিত বিশ্বাসসহ তাঁর পরিবারের লোকজন পৈতৃক সূত্রে পাওয়া জমিতে বসবাস করছেন। সম্প্রতি মুজিবুর রহমান নামে এক ব্যক্তি তাদের জায়গা দখল করতে আসে। তবে এলাকাবাসীর বাঁধার মুখে তারা দখলে ব্যর্থ হয়। এ অবস্থায় মুজিবুর রহমান তার দাবিকৃত জায়গায় ১৪৪ ধারা জারির জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট আবেদন করেন। আদালত সেখানে উভয় পক্ষকে না যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে গত ২৩ আগস্ট ১৪৪ ধারা জারি করেন। এ অবস্থায় মুজিবুর রহমান জায়গাটি দখলের চেষ্টা করেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মোঃ গিয়াস উদ্দিনের একটি তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতেই আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, নালিশা ভূমিতে কোনো পক্ষই নেই। এমনটি জায়গাটি পতিত।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নালিশা ভূমির কিছু অংশে অসিত বিশ্বাসের ঘর রয়েছে। বাকি জায়গায় বাঁশ ঝাড়, তাদেরই দখলে। এলাকাবাসীর সাথে কথা বললেও জায়গাটি যে অসিত বিশ্বাসের দখলে আছে এর সত্যতা পাওয়া যায়।
কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, সিএস, বিএস (হাল জরিপে) ২৫৮ ও ২৬৪ দাগের জায়গা অসিত বিশ্বাসসহ স্বজনদের নামে বলে উল্লেখ আছে। তবে এসএ খতিয়ানে গিয়াস উদ্দিন স্বাক্ষরিত একটি কাগজে জায়গার মালিক মুজিবুর রহমান বলে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগ উঠেছে, জায়গাটি নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হলে ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মোঃ গিয়াস উদ্দিন অসিত বিশ্বাসের কাছে ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ না দিলে তদন্ত প্রতিবেদন উল্টো দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়।
এলাকার বাসিন্দা খোরশেদ খান, পরমেশ্বর চৌধুরিসহ অনেকে জানান, এ জায়গায় বছরের পর বছর ধরে অসিত বিশ্বাসসহ তাদের পরিবারের লোকজন বসবাস করছেন। অন্য কোনো পরিবারের মালিকানার কথা কারো জানা নেই। এখন জায়গাটি জবর দখলের চেষ্টা চলছে।
শিবপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহীন সরকার বলেন, ’বছরের পর বছর ধরে অসিত বিশ্বাসের পরিবার এখানে বসবাস করছেন। অন্য কেউ কোনোভাবেই এর মালিক হতে পারেন না। এখন ভূমি কর্মকর্তার কারণে জায়গাটি নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
তবে ভূমি কর্মকর্তা মোঃ গিয়াস উদ্দিন এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আমি কারো কাছে টাকা দাবি করিনি। সরজমিনে তদন্তে গেলে অসিত বিশ্বাসের লোকজন যে জায়গাটি দেখিয়েছে সেটি অবশ্যই পরিত্যক্ত জায়গা। তবে কয়দিন আগে সেখানে বালু ফেলা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।