নির্বাচন সুষ্ঠু হলে, ভোট কারচুপি না হলে জাতীয় পার্টি আবারো ক্ষমতায় আসবে:: হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ
মিঠু সূত্রধর পলাশ,নবীনগর প্রতিনিধি:: সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, আমরা সকল দলের অংশ গ্রহণে একটি সুষ্ঠুু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে, ভোট কারচুপি না হলে জাতীয় পার্টি আবারো ক্ষমতায় আসবে। তিনি বলেন কে নির্বাচনে এলো আর কে এলোনা তা বিষয় না, জাতীয় পার্টি একটি নির্বাচনমুখী দল। নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতার পরিবর্তন সম্বভব নয়, তাই আমরা নির্বাচনে জয়ী হয়েই মানুষের ভাগ্যেও পরিবর্তন করতে চাই। বলেন আমরা ক্ষমতায় গেলে খুন, গুম ও সন্ত্রাস বন্ধ হবে। ব্যাংক লুট বন্ধ হবে, দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, মানুষ নতুন সরকার চায়, তাই দলকে ক্ষমতায় নিতে দলকে আরো শক্তিশালী করতে নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, দেশের সব’চে বয়োজেষ্ঠ রাজনীতিবিদ আমি, আর সব’চে বেশি নির্যাতন আর লাঞ্ছনা এবং বঞ্চনার শিকারও হয়েছি আমি। ক্ষমতা ছাড়ার পর একটি দিনের জন্যও শান্তিতে ছিলাম না, এখনো শান্তিতে নেই। তারপরও পথে নেমেছি দেশের মানুষকে মুক্তি দিতে। মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে।
তিনি বলেন দেশে এখন রাস্তার পাশে লাশ পড়ে থাকে, বিচার বার্হিভূত হত্যাকান্ড মেনে নেয়া যায়না। এভাবে একটি দেশ চলতে পারেনা।সুষ্ঠুু নির্বাচন হলে মানুষের ভোটে লাঙ্গলের বাক্স ভরে যাবে। আমরা ক্ষমতায় এলে বিচাবর্হিভূত হত্যাকান্ড বন্ধ হবে। গুম, খুন, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী বন্ধ হবে। দেশ থেকে গায়েবী মামলা দূর হবে। মানুষ সুখে শান্তিতে থাকতে পারবে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গতকাল রোববার দুপুরে ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার নাবীনগর উপজেলার সরকারী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে উপজেলা জাতীয় পার্টি আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন।
তিনি আরও বলেন,বলেন মানুষ পরিবর্তন চায়, মানুষ জাতীয় পার্টিকেই ক্ষমতায় দেখতে চায়। আমরা ৬৪ টি জেলা করেছি, ৪৬০টি উপজেলা করেছি। পর্যাপ্ত টাকা ছিলোনা তারপরও ১০ হাজার কিলোমিটার পাকা রাস্তা করেছি, ব্রীজ কালভার্ট করেছি। টাকা ছিলোনা কিন্তু মনে জোর ছিলো, তাই মানুষ জানে জাতীয় পার্টি ছাড়া আর কোন দলই উন্নয়ণ দিতে পারবেনা। জনসভায় ব্রাক্ষণবাড়িয়া-০৫ আসনে কাজী মামুনকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে লাঙ্গল প্রতিকে ভোট দিতে সবার প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন নবীনগর জাতীয় পার্টির দূগর্, এই আসনটি আমাদেরই ছিলো। এবারের নির্বাচনে নবীনগর আসনটি আমরা ফিরে পেতে চাই।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, নির্বাচনের উৎসবমূখর পরিবেশ এখন আর নেই। প্রধান দু’দলের মধ্যে সাংঘর্ষিক অবস্থা বিরাজ করছে। এ অবস্থাতেও জাতীয় পার্টির তিনশো আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি আছে। আওয়ামীলীগ এবং বিএনপিও একক ভাবে নির্বাচন করবেনা, তাই সবাই নির্বাচনে অংশ নিলে আমরাও মহাজোটের সাথে থেকেই জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করবো। বলেন প্রমান হয়েছে এরশাই দেশে সুশাসন দিতে পারে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল অমিন হাওলদার বলেন, দেশের মানুষ সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করে। এরশাদের ন’বছরের শাসনামলে দেশে স্বর্নযুগ ছিলো। দেশের মানুষ আবারো এরশাদের শাসনামলে ফিরে যেতে চায়। দেশের মানুষ আর গুম, খুন ও হত্যা, টেন্ডাবাজী চায়না। দেশের মানুষ শান্তিতে ও নিরাপদে থাকতে চায়। দু’দলের দুঃসাশন থেকে মুক্তি পেতে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
এসময় বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, এসএম ফয়সল চিশতী, মেজর (অব.) খালেদ আখতার, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, জিয়াউল হক মৃধা এমপি, পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, নূরুল ইসলাম নূরু।
উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব শফিকুল ইসলাম শফিক, সাংগঠনিক সম্পাদক ফখরুল আহসান শাহাজাদা, হেলাল উদ্দিন, কাজী আবুল খায়ের, গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় নেতা শফিকুল ইসলাম দুলাল, জামাল হোসেন, আরিফুর রহমান রুবেল, মোঃ খোরশেদ, মোঃ মাহমুদ উল্লাহ্, নাজমা বেগম, জেসমিন প্রিয়াংকা নূর।
এসময় সকাল থেকেই বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে জাতীয় পার্টি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিশাল বিশাল মিছিল নিয়ে সভাস্থলে প্রবেশ করে। পার্টির উজ্জীবিত নেতা-কর্মীরা ঢাক-ঢোল বাজিয়ে আন্দময় করে তোলে নবীনগর উপজেলা শহর। সমাবেশে ব্যাপক সংখক মাহিলা উপস্থিত ছিলেন। নবীনগরের প্রতিটি সড়কে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আগমন উপলক্ষে সুদৃশ্য অসংখ্য তোড়ন নির্মান করা হয়েছে।