Main Menu

নবীনগরে আওয়ামী লীগ নেত্রী খুনে আটক আনোয়ারের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

+100%-

নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক স্বপ্না আক্তারকে পূর্ববিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। একাধিক ভাড়াটে খুনি দিয়ে দলীয় লোকজনই এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।

স্বপ্না হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে এমন তথ্যই দিয়েছেন উপজেলার বাঙ্গরা গ্রামের শামসুল হকের ছেলে আনোয়ার হোসেন। গত সোমবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিনের আদালতে আনোয়ার এ জবানবন্দি দেন।

নবীনগর থানার ওসি মো. আসলাম সিকদার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করলেও ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের স্বার্থে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি।

তবে শুরু থেকেই হত্যা মামলার তদারকিতে থাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন জানান, পুলিশের কাছেও আনোয়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। আনোয়ারের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘দলীয় ও ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই আনোয়ার তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এ জন্য নাহিদ নামের একজনের সঙ্গে এক লাখ টাকায় রফা হয়। নাহিদ ও ভাড়া করা দুই ব্যক্তি মিলে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। স্বপ্নার সঙ্গে নাহিদেরও বিরোধ ছিল।’

জানা গেছে, গত ৪ জানুয়ারি গভীর রাতে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে আনোয়ারকে আটক করে পুলিশ। পরদিন সকালে তাঁকে নবীনগরে নিয়ে আসা হয়। থানায় এনে পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে তাঁকে আদালতে আনা হয়।

একাধিক সূত্র জানায়, খুন হওয়ার কয়েক দিন আগে স্বপ্না এলাকার ওয়াজ মাহফিলের দাওয়াত নিয়ে ঢাকায় যান। বনানীর একটি অফিসে গার্মেন্ট চাকুরে আনোয়ারের সঙ্গে স্বপ্নার বাগিবতণ্ডা হয়। এ সময় আনোয়ার স্বপ্নাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এ ছাড়া জিনোদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হওয়া নিয়েও ওই দুজনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। আনোয়ার মনে করতেন স্বপ্নার কারণে তাঁর পদ পাওয়া সম্ভব হবে না। সেই থেকে আনোয়ার ক্ষুব্ধ হন।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, দলীয় বিরোধের পাশাপাশি ঢাকায় বাগিবতণ্ডাকে কেন্দ্র করেই মূলত ক্ষুব্ধ হন আনোয়ার। এলাকায় এসে তিনি বাঙ্গরা গ্রামের নাহিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। নাহিদও জানায়, সে স্বপ্নার প্রতি চরম ক্ষুব্ধ। এ অবস্থায় স্বপ্নাকে খুন করার জন্য নাহিদকে এক লাখ টাকা দেন আনোয়ার। পরিকল্পনা অনুযায়ী দুজন ভাড়াটে খুনি আনে নাহিদ। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে স্বপ্না কোথায় আছেন, কোন পথে যাচ্ছেন, এসব তথ্য ভাড়াটে খুনিদের দেন নাহিদ। সে অনুযায়ী অটোরিকশায় ওঠার পর গুলি করে স্বপ্নাকে হত্যা করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নবীনগর থানার এসআই সুখেন্দু বসু জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত আনোয়ার জবানবন্দিতে যাদের নাম বলেছেন, তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

প্রসঙ্গত, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন শেষে ফেরার পথে গত বছরের ২২ নভেম্বর রাতে খুন হন স্বপ্না আক্তার। এ ঘটনায় স্বপ্নার ভাই আমীর হোসেনের করা মামলায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে বিভিন্ন সময় জিজ্ঞাসাবাদ করে।






Shares