মহেষপুর দাখিল মাদ্রাসা ২১ বছরেও একাডেমিক স্বীকৃতি পায়নি




উপজেলার দুর্গম হাওড় অঞ্চলে অযত্নে অবহেলায় বেড়ে উঠা, অবহেলিত ও ঝড়ে পড়া শিশু-কিশোরদের একটা অংশের পড়ালেখার সাধ ছিল, কিন্তু সাধ্য ছিলো না, তাই তাদের শিক্ষার জন্য উপজেলার মহেষপুর গ্রামের শিক্ষানুরাগী আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইদ্রিস মিয়া ১৯৯৫ সালে নিজ উদ্যোগে ৮২ শতাংশ ভূমি কিনে এলাকার বিশিষ্টজনের প্রচেষ্টায় মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে পথচলা। ২০০৬ সালে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অনুমতিক্রমে এবতেদায়ী ১ম শ্রেণি থেকে দাখিল ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। এবতেদায়ী ও দাখিল পরিক্ষায় ধারাবাহিক সাফল্যের কারণে অভিভাবকরা এ মাদ্রাসায় তাদের সন্তানদের ভর্তি করাতে আগ্রহী হয়ে উঠেন। সেই থেকে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ মাদ্রাসা একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে উঠে। শিক্ষা-সংস্কৃতির দিক থেকে উপজেলায় মাদ্রাসাটির সুনাম রয়েছে। মাদ্রাসায় বর্তমানে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। কর্মরত আছেন ১৪ জন শিক্ষক ও ৩ জন কর্মচারী।
মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো. মঞ্জুরুল ইসলাম ও শিক্ষকরা জানান, ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠাতা মারা যান। এরপর মাদ্রাসা বোর্ডের অনুমতিক্রমে প্রতিষ্ঠাতার ছেলে বিশিষ্ট সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী মো. শাহজাহান কবির মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১৫ সালে ঝড়ে মাদ্রাসার ৪টি টিনশেড ঘর ভেঙে যায়। এরপর ছাত্র-ছাত্রীদের খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে দেখে সভাপতি নিজ খরচে ৪টি টিনশেড ঘর, টেবিল, চেয়ার ও বেঞ্চগুলো মেরামত করে দেন। তিনি মাদ্রাসার জন্য ৮ কক্ষ বিশিষ্ট দোতলা (নির্মাণাধীন) একটি একাডেমিক ভবন নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি করছেন। মাদ্রাসার যাবতীয় খরচ এবং শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন তিনি এককভাবে বহন করছেন। মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পায়নি। একাডেমিক স্বীকৃতির জন্য মাদ্রাসার ফাইল উপজেলা, জেলা, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ঘুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে গেলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে হয়নি। স্বীকৃতি না হওয়ায় অর্থের অভাবে মাদ্রাসাটি পরিচালনা করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. শাহজাহান কবির বলেন, প্রতিষ্ঠানটির একাডেমিক স্বীকৃতি না হওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
« জেলা গোয়েন্দা শাখা’র হাতে মাদকসহ দু’জন নারী আটক (পূর্বের সংবাদ)