সৌদি আরব: প্রবাসে মারা গেলে, মৃতদেহ দাফন বা দেশে পাঠাতে করণীয় কি?



সৌদি আরবে প্রবাসী কোন বাংলাদেশীর মৃত্যু হলে লাশ দাফন বা দেশে মৃতদেহ প্রেরণের জন্য করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছে, রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। দূতাবাসের ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বিভিন্ন অবস্থার প্রেক্ষিতে মৃতদেহ দাফন বা দেশে প্রেরণের ক্ষেত্রে দূতাবাস কি ভূমিকা রাখতে পারে এবং সেজন্য কি কি প্রয়োজন সেসবও তুলে ধরা হয়েছে।
সৌদি আরবের রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের আওতাধীন এলাকাসমূহ যেমন- রিয়াদ, আলক্বাসিম, হায়েল, ওয়াদি দাওয়াসের, দাম্মাম, আহসা, জুলফি, হাফরুল বাতিন, খাফজি, খোবার, আবক্বিক, নায়ীরিয়াহ, লায়লা আফলাজ, সাকাকা ইত্যাদি এলাকায় মৃত বাংলাদেশী নাগরিকদের মৃত্যু হলে মৃতদেহ স্থানীয়ভাবে দাফন বা বাংলাদেশে প্রেরণ করতে হলে দূতাবাসের ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ বা এনওসি এর প্রয়োজন হয়। তাছাড়া মৃতদেহ দ্রুত দাফন বা দেশে প্রেরণের জন্য দূতাবাস অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে।
মৃতদেহ দ্রুত দেশে প্রেরণ বা স্থানীয়ভাবে দাফনের জন্য দূতাবাস থেকে ‘অনাপত্তি পত্র’ বা ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ বা এনওসি ইস্যুর জন্য দূতাবাসে যেসব নথি বা কাগজের কপি সরবরাহ করতে হয়, সেগুলো হলো:
(১) মৃত ব্যক্তির পাসপোর্টের কপি।
(২) মৃত ব্যক্তির ইকামার কপি।
(৩) মৃত ব্যক্তির মৃত্যুজনিত মেডিকেল রিপোর্ট বা ট্রাফিক রিপোর্ট (সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যু হলে) যেখানে মৃত্যুর তারিখ এবং মৃত্যুবরণের স্থান ও কারণ উল্লেখ থাকবে।
(৪) মৃত ব্যক্তির স্পন্সর (কফিল/কোম্পানী) এর নাম ও ফোন নম্বর।
(৫) মৃতদেহ বাংলাদেশে পৌঁছালে লাশ গ্রহণকারী ব্যক্তির নাম ও মোবাইল নম্বর। (এক্ষেত্রে মৃতের স্ত্রীর নাম ও মোবাইল নম্বর দিলে ভাল হয়)
উপরে উল্লেখিত কাগজগুলোর কপি দূতাবাসে ফ্যাক্স (০০৯৬৬১১৪১৯২৩৮০) বা ই-মেইল (deathinfo2015@gmail.com) এর মাধ্যমে বা সংশ্লিষ্ট এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত দূতাবাস প্রতিনিধির (যিনি দূতাবাসের ইকামাধারী) মাধ্যমে পাঠালে দূতাবাস এক কর্মদিবসের মধ্যেই এনওসি ইস্যু করে থাকে।
লাশ দ্রুত দেশে পাঠানোর জন্য বা স্থানীয়ভাবে দাফনের জন্য উপরে উল্লেখিত কাগজের ভিত্তিতে এনওসি প্রদান করা হয়। লাশ পাঠানোর পর অথবা যথাশীঘ্র সম্ভব দ্বিতীয় ধাপে দূতাবাসকে নিম্নোক্ত কাগজের কপি সরবরাহ করা আবশ্যক।
(১) মৃতের গোসি নম্বর এবং গোসি কার্ডের কপি।
(২) মৃতের বকেয়া পাওনা হিসাব স্থানীয় লেবার অফিসে জমা দেয়ার স্লিপের কপি।
(৩) মৃত ব্যক্তি কোন দূর্ঘটনায় মারা গেলে সিভিল ডিফেন্স (দিফাউল মাদানী/ ট্রাফিক অফিস/পুলিশ) এর রিপোর্ট।
(৪) ডেথ সার্টিফিকেটের কপি।
মৃতদেহ দেশে প্রেরণ বা দাফনের অগ্রগতি বা কোন কারণে বিলম্ব হলে দূতাবাসে যোগাযোগ করতে হবে। এক্ষেত্রে স্পন্সরের সাথে মৃতের আত্মীয় যোগাযোগ না করে দূতাবাস মারফত যোগাযোগ করালে ভাল হয়।
মৃতব্যক্তি বিষয়ক সব বিষয়ে সহায়তার জন্য দূতাবাসের শ্রম উইং (লেবার উইং) এ যোগাযোগ করা উচিত। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মচারী বা কর্মকর্তার টেলিফোন বা মোবাইলে অফিস চলাকালীন যোগাযোগ করতে হবে। তবে জরুরী প্রয়োজনে অফিস আওয়ার ছাড়াও যে কোন সময়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
শ্রম উইং এর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নাম ও টেলিফোন/মোবাইল নম্বর।
(১) সারোয়ার আলম, কাউন্সেলর (শ্রম): ০০৯৬৬৫৩৪৮৮০৫৩৬
(২) নূর মোহাম্মদ মাসুম, প্রথম সচিব (শ্রম): ০০৯৬৬৫৩৬১৬৯৮১৩
(৩) মোহাম্মদ মীজানুর রহমান, প্রথম সচিব (শ্রম): ০০৯৬৬৫৪৯৭৩১৬৯৬
(৪) আমীনল ইসলাম, এ ও (শ্রম): ০০৯৬৬৫৯৮৬৯২৬২৭
(৫) এহসান উল্লাহ, অনুবাদক (ডেথ রিলেটেড ডেস্ক): ০০৯৬৬৫৭০২১২১৮০
(৬) শ্রম উইংয়ের ফ্যাক্স: ০০৯৬৬১১৪১৯২৩৮০
মৃতদেহ দাফন বা দেশে প্রেরণ সংক্রান্ত যেসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, তারপরও যদি কারো কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে 00966570212180 এই নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ দূতাবাস, রিয়াদ, সৌদি আরব।