Main Menu

সুরঞ্জিত ফারুক ও রেল আমলার দুর্নীতি – সম্পূর্ন ঘটনা প্রবাহ।

+100%-


আপডেট ১২ এপ্রিল, ২০১২, ব্লগার ভাইয়েরা, এপিএস ফারুকের ড্রাইভারের বাড়ি, সুনামগঞ্জ জেলার প্রত্যন্ততম হাওর অঞ্চল ধরম পাশায়। সৎ দেশ প্রেমিক বোকা/মদন আজম খানের জন্য আপনারা কি এগিয়ে আসবেন?? আগে ঘটনা প্রবাহ দেখুনঃ

চালক আলী আজম কোথায়: বিজিবি’র সদর দপ্তরে টাকাসহ আটক তিন কর্মকর্তাকে ছেড়ে দেয়া হলেও গাড়িচালক আলী আজমকে ছাড়া হয়নি।গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, আলী আজম বর্তমানে বিজিবি’র হেফাজতে রয়েছেন।তিনি বাইরে বেরিয়ে এলে নিয়োগ-বণিজ্যের পুরো সিন্ডিকেটের মুখোশ উন্মোচিত হয়ে পড়বে।এ আতঙ্ক থেকেই প্রভাবশালী মহল তাকে অজ্ঞাত স্থানে আটক করে রেখেছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিবি’র জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মোহসীন রেজা বলেন, আমি কিছুই জানি না। তাকে আটক রাখা হয়েছে নাকি ছেড়ে দেয়া হয়েছে- কোন বিষয়েই মন্তব্য করতে পারবো না।তিনি আরও বলেন, বিজিবি সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী। কার টাকা কারা কিভাবে নিয়ে গেল সেটি দেখার দায়িত্ব পুলিশের, বিজিবি’র নয়।

রাতেই ঘটনা মিটিয়ে ফেলতে রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত দফায় দফায় ফোন করেছিলেন বিজিবি’র শীর্ষ কর্মকর্তাদের।দ্রুত ঝামেলা মিটিয়ে ফেলতে গভীর রাতে বিজিবি কার্যালয়ে পাঠিয়েছিলেন কয়েকজন বিশেষ সহকারীকেও।কিন্তু শেষ পর্যন্ত সঙ্গোপনে ঝামেলা মিটিয়ে ফেলা যায়নি গাড়িচালক আজম খানের জন্য।কারণ তিনি বিজিবি সদর দপ্তরে গাড়ি ঢুকিয়ে ফেলার পরপরই ৩ জন সিনিয়র সাংবাদিককে ফোন করে ঘটনা জানিয়ে বিজিবি কার্যালয়ে যেতে বলেন।চিৎকার করে বিজিবি কার্যালয়ে দায়িত্বরতদের দৃষ্টি আকর্ষণও করেন। চিৎকার শুনে তাদের ৪ জনকে আটক করে বিজিবি।বিজিবি কার্যালয়ে গভীর রাতে হাজির হন বেশ ক’জন শীর্ষ কর্মকর্তা। তবে বিজিবি মহাপরিচালক ওই বৈঠকে হাজির হননি।একজন কর্নেল পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে বৈঠক বসে।ঘণ্টাব্যাপী চলা বৈঠকের মাঝে কয়েক দফা ফোন করেন মন্ত্রী সুরঞ্জিত।বিজিবি’র পদস্থ কর্মকর্তারা নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে রাতেই ওই চার ব্যক্তিকে ছেড়ে দেননি।তাছাড়া বিপুল পরিমাণ টাকার বিষয়টি নিয়েও দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়েন তারা।টাকাগুলো জব্দ করা হবে কিনা তা নিয়েও দ্বিধায় পড়েন তারা।গতকাল বিজিবি’র এক কর্মকর্তা জানান, রাতে একবার সিদ্ধান্ত হয় টাকাগুলো জব্দ করা হবে।কিন্তু পরে টাকাগুলো আর গাড়ি থেকে নামানো হয়নি।মন্ত্রীর লোকজনদের নিয়ে বৈঠকের পর বিজিবি’র শীর্ষ কর্মকর্তারা আবার বৈঠকে বসেন।সিদ্ধান্ত হয় তাদের ছাড়ার আগে টাকাগুলো জব্দ করে থানায় জমা করা হবে।এছাড়া ৪ ব্যক্তির নামে থানায় জিডি করা হবে।গভীর রাতে বিজিবি সদর দপ্তরে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ আনা হবে তাদের বিরুদ্ধে।কিন্তু পরে অজ্ঞাত কারণে ওই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়।সিদ্ধান্ত হয় ভোরে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।খুব ভোরে মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বিজিবি সদর দপ্তরে গিয়েছিলেন এমন কথা গতকাল বিজিবি কার্যালয়ে শোনা যায়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজিবি সদস্য জানান খুব ভোরে সাদা একটি প্রাইভেট কার পিলখানার ৩ নম্বর গেট দিয়ে ঢুকে। গাড়িতে মন্ত্রীর মতো একজনকে দেখা যায়। অন্তত ২৫ মিনিট অবস্থান করেন ওই ব্যক্তি বেরিয়ে যান বলে জানান বিজিবি সদস্য।কিন্তু সকালেও কোন সিদ্ধান্ত আসছিল না। বেলা সাড়ে ১০টার দিকে গ্রিন সিগন্যাল পায়, এরপরই ওই চার ব্যক্তিকে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিজিবি। একজন সুবেদার মেজর পদমর্যাদার কর্মকর্তা হেলমেট পরিয়ে মোটরসাইকেলে চড়িয়ে ৪ ব্যক্তিকে বিজিবি সদর দপ্তর থেকে বের করে দেয়ার ব্যবস্থা করেন।তাদের বের করার আগে সিসি ক্যামেরায় দেখা হয় কোন কোন গেটে সাংবাদিকরা আছেন। দেখা যায় ৫নং গেট খালি। ওই চার ব্যক্তিকে ৫নং গেট দিয়ে বের করা হয় বলে জানিয়েছে সূত্র ওদিকে গতকাল দিনভর চালক আজম খানের খোঁজ মেলেনি। তাকে নিউ মার্কেট থানায় সোপর্দ করা হয়েছে- এমন কথা শোনা গেলেও নিউ মার্কেট থানা পুলিশ বিষয়টি স্বীকার করেনি।

এপিএসের প্রতিবাদ : গতকাল কালের কণ্ঠে পাঠানো প্রতিবাদপত্রে এপিএস ফারুক আটক হননি দাবি করে সোমবার রাতের ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, জিগাতলাস্থ মন্ত্রী মহোদয়ের বাসার উদ্দেশে রওনা হই।আমার গাড়ির ড্রাইভার আজম খান কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই গাড়িটি রাইফেল স্কয়ারের পাশ দিয়ে পিলখানার ভেতর ঢুকিয়ে আমাদেরকে টাকার ব্যাগ রেখে গাড়ি থেকে নেমে যেতে বলে।সে আমার মোবাইলগুলো ছিনিয়ে নেয়।সে গাড়ি থেকে নেমে বিজিবি সদস্যদের বলে, গাড়িতে অবৈধ টাকা রয়েছে।আমরা বিজিবিতে কর্মরত সেনাবাহিনীর সদস্যদের বিষয়টি জানাই এবং আমাদের অর্থ ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা প্রদানের অনুরোধ জানাই। তারা বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দেয় এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করে।অন্যদিকে ড্রাইভার আজম নিজেকে রক্ষা করার জন্য বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে সাংবাদিকদের ডেকে এনে অন্য নাটক সাজায়, যা একবারেই মিথ্যা ও সুপরিকল্পিত।তিনি আবারও দাবি করেন, গাড়িতে ২৫ লাখ টাকা ছিল।

ফারুকে নাটকঃ বিজিএসইউ’র সদস্যরা ৪ ব্যক্তিকে আটক করার পর মন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুক তালুকদার নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি তার সহকর্মী দাবি করে বেশ ক’জন সিনিয়র সাংবাদিকের নামও বলেন। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে অবশ্য তিনি মন্ত্রীর এপিএস হিসেবে নিজের পরিচয় প্রকাশ করেন। টাকার উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি প্রথমে বলেন, টাকাগুলো তার শ্যালকের।আরেকবার তিনি বলেন, বিদেশী কিছু মুদ্রা ভাঙিয়ে পাওয়া টাকাগুলো ব্যাংকে জমা দিতে ভুলে গেছেন তিনি।ভোরে জমা দেবেন। সেদিন রাতে বিজিবি সদর দপ্তরের অভ্যন্তরে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন বিজিএসইউ’র লে. পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা। তিনিই প্রথম সন্দেহজনক গতিবিধির জন্য গাড়িটির কাছে এগিয়ে যান। গাড়ির অন্যতম যাত্রী রেলওয়ের ঢাকা বিভাগের কমান্ড্যান্ট এনামুল হক বলেন, গাড়িটি ৩ নং গেটের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। তখন অনেক রাত। গেটে আর্মিরা দায়িত্ব পালন করছিল। একজন অফিসার আমাদের গাড়ির কাছে এসে পরিচয় জানতে চায়। তখন আমরা নিজেদের পরিচয় দিয়ে তার সঙ্গে কথা বলি।

যে গাড়িটি বিজিবি সদর দপ্তরে ঢুকেছিল সেটি একটি নোয়াহ মাইক্রোবাস। নম্বর ঢাকা মেট্রো-চ-১৩-৭৯৯২ গতকাল বিআরটিএতে খোঁজ নিয়ে জানা যায় গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন করা ওমর ফারুক তালুকদারের নামে। তার পিতার নাম সিরাজুল ইসলাম তালুকদার। ২০১০ সালে গাড়িটি রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে।

কমান্ড্যান্ট এনামুল হকঃ কমান্ড্যান্ট এনামুল হক বলেন, আমি আর জিএম স্যার শাহজাহানপুরে পাশাপাশি থাকি।রাতে জিএম স্যার আমাকে ফোন করে বলেন, একটু ধানমন্ডি যাবো।আমার সঙ্গে চলেন।আমি স্যারের গাড়িতে উঠি।ওই গাড়িতে টাকা ছিল কিনা তা আমি জানি না।স্যারের নিরাপত্তার জন্য আমি যাইনি।আর টাকা বা স্যারের নিরাপত্তার জন্য আমাকে নেয়া হলে গানম্যান নিতাম।এমনকি আমার ব্যক্তিগত রিভলবারটিও নিয়ে যাইনি। সায়েন্স ল্যাবরেটরির কাছে পৌঁছলে জিএম স্যারের কাছে ফোন করেন মন্ত্রীর এপিএস।তিনি তাকে ধানমন্ডিতে যেতে বলেন।আমরা ধানমন্ডি গিয়ে আমাদের গাড়ি ছেড়ে দিয়ে এপিএস-এর গাড়িতে উঠি।সেখান থেকে মন্ত্রীর বাসার দিকে রওনা দিই।কিন্তু পথে ড্রাইভার গাড়ি বিজিবি সদর দপ্তরের ভেতর ঢুকিয়ে দেয়।এনামুল বলেন, আমি সামনের সিটে বসা ছিলাম। চালককে বললাম এই ভেতরে ঢোকাচ্ছ কেন? তখন সে আমাকে বলে, আপনি নেমে যান। হেঁটে বাসায় চলে যান। কিন্তু আমি না নেমে চালককে ধমক দিই।কিন্তু তখন তাকে খুবই উগ্র দেখাচ্ছিল।সে গাড়ি বিজিবি সদর দপ্তরের ভেতরে ঢুকিয়ে এদিক-ওদিক ঘোরাতে থাকে।একবার এক জায়গায় দাঁড়িয়ে ৩ জনের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়।কিন্তু আমার ফোনটি সে নেয়নি।চালক ৩নং গেটের কাছে গাড়ি থামিয়ে কয়েকজনের কাছে ফোন করে।আপনি কারও কাছে ফোন করেছিলেন কিনা জানতে চাইলে এনামুল কোন উত্তর না দিয়ে বলেন, আমি পরিস্থিতি দেখে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম।

এপিএস এর খোজেঃ এদিকে আজ এপিএস ওমর ফারুকের ধানমণ্ডির তিন নম্বর সড়কের বাসায় গেলে গৃহকর্মী জানান, খুব সকালে ‘সাহেব’ বাসা থেকে বের হয়েছেন। তার স্ত্রীও সঙ্গে ছিলেন। বের হওয়ার সময় তারা থানায় যাওয়ার কথা বলেছেন। তবে ধানমণ্ডি, হাজারীবাগ ও নিউমার্কেট থানায় যোগাযোগ করে তার থানায় যাওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।চালক আলী আজম কোথায় আছেন তা গতকাল পর্যন্ত জানা যায়নি। এপিএস ফারুক ও কমান্ড্যান্ট এনামুল হক জানিয়েছেন, চালক আলী আজমকে বিজিবি রেখে দিয়েছে। তবে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাকে বিজিবি সদরদফতর থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। চালক আলী আজমের মোবাইল ফোন দুটিও বন্ধ রয়েছে।

সিলেট ব্যুরো জানায়, রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএস ৭০ লাখ টাকাসহ আটকের ঘটনায় গতকাল বুধবার বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সুনামগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সাংসদ নাছির উদ্দিন চৌধুরী। টাকা উদ্ধারের ঘটনাকে তিনি ‘রেলের কালো বিড়াল ধরা পড়েছে’ বলে মন্তব্য করেন। বিবৃতিতে নাছির চৌধুরী বলেন, ওই ৭০ লাখ টাকা মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএসের নয়। এটি ঘুষের টাকা। রেলওয়ের বিভিন্ন পদে চাকরির নামে এপিএসের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে উৎকোচ হিসেবে ওই টাকা নিয়েছেন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত।তিনি বলেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য নেই। ১৯৭০ সাল থেকে তিনি ৫-৬ বার এমপি হয়েছেন। এলাকার কোনো উন্নয়ন করেননি। ঘুষের টাকা গ্রহণ ছাড়াও তিনি জলমহাল ইজারা আর সরকারি জায়গা লুটপাট করেই চলেছেন। এ বিষয়ে আগামীকাল শুক্রবার ঢাকা প্রেস ক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে নাছির উদ্দিন চৌধুরী জানান।

এপিএসের নানা সম্পদ ও যে কারণে বিগড়ে যান চালক: গাড়িচালক আলী আজম এক লাখ টাকা চেয়েছিলেন। এর মধ্যে ফারুক তাকে ৫০ হাজার টাকা ভাগ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তারা চালককে ১০ হাজার টাকা দেন। এ নিয়ে পিএস ও চালকের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চালক গাড়িটি বিজিবি’র সামনে নিয়ে যায়। ওদিকে এপিএস ওমর ফারুক কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক। মোহাম্মদপুরে রয়েছে তার বাড়ি। বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পরই তিনি এ বাড়ি কেনেন। তার রয়েছে লেটেস্ট মডেলের গাড়ি। নিজের গ্রামের বাড়ি ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে তার জায়গা রয়েছে।

সূত্র জানায় , রেল মন্ত্রীর একান্ত সচিব ওমর ফারুক তালুকদারের ঘনিষ্ঠজন ছিলেন চালক আলী আজম।তাদের বাড়ি একই এলাকায়।ওমর ফারুক চালক হিসেবে চাকরি করলেও দু’জন ছিলেন বন্ধু।আলী আজমের নিয়োগ তদ্বির ও নিয়োগ-বাণিজ্যের টাকা পয়সা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দু’জনের দ্বন্দ্ব চলছিল। এ দ্বন্দের সূত্র ধরেই গত সোমবার দিবাগত রাতে তিনি ইচ্ছা করে গাড়ি বিজিবি সদর দপ্তরে ঢুকিয়েছিলেন। সেখানে প্রায় ঘণ্টাখানেক আপস-মীমাংসার চেষ্টা চালিয়ে পরে বিজিবি’র ৩ নম্বর গেটে দায়িত্ব পালনকারী বিজিবি’র সদস্যদের কাছে অবৈধ টাকার বিষয়টি ফাঁস করে দেন।

ফারুক পরিচিতিঃ বাড়ি সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সেলবরস ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামে।বাবা আহ্লাদ মিয়া তালুকদার একজন জোতদার ছিলেন।শূন্যহাতে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সানি্নধ্যে যাওয়া ওমর ফারুকের এখন ঢাকা শহরে একটি ফ্ল্যাট, গণপরিবহনের জন্য রয়েছে তিনটি গাড়ি, নিজে ব্যবহারের জন্য কিনেছেন ৩২ লাখ টাকা দামের গাড়ি। ময়মনসিংহের একটি কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করার পর ঢাকায় গিয়ে এলএলবি করেন।২০০১ সালের শুরুর দিকে বর্তমান রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপির বাসায় তার যাতায়াত। তিনি রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) ওমর ফারুক।ধর্মপাশা উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দাদা (সুরঞ্জিত) আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান থাকাকালে একটি মামলার কাজে গেলে আমাকে সহায়তা করেন। পরে ওমর ফারুক বলেন, ডিও লেটার দিলেই হবে না, টাকা লাগবে। আমি ১৫ হাজার টাকা দিলেও কোনো কাজ হয়নি।সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আইন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান হওয়ার পর সাব-রেজিস্ট্রারদের বদলি-বাণিজ্য করার জন্য ওমর ফারুককে তৎপর দেখা গেছে।এ ছাড়া গত বছরে সরকারি খাদ্য গুদামে মিলারদের চাল দেওয়ার কথা বলে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ‘ডিও লেটার বিক্রি’ করেছেন ফারুক।তিনি জানান, ওমর ফারুক তাদের বলতেন, দাদার সঙ্গে কথা বলে লাভ নেই, যা বলার আমাকে বলুন।ওমর ফারুক বিভিন্ন কাজের কথা বলে মানুষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নেন এলাকায় এমন গুঞ্জন রয়েছে বলে মন্তব্য করেন ধর্মপাশা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনীন্দ্র তালুকদার।সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত সুনামগঞ্জ জেলা বারের একজন আইনজীবী জানান, তিনি একটি দরিদ্র যুবককে চাকরির সুপারিশের জন্য নিয়ে গেলে ওমর ফারুক বলেন, টাকা ছাড়া সুপারিশ হবে না। পরে তিনি ওই যুবককে ওমর ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।জেলা আওয়ামী লীগের আরেক দায়িত্বশীল নেতা বলেন, সুনামগঞ্জে গত বছর বাতিল হওয়া সিভিল সার্জন অফিসের নিয়োগ-বাণিজ্য করেন ওমর ফারুক। কয়েক মাস চাকরি করার পর নিয়োগ বাতিল হওয়ায় এসব দরিদ্র মানুষও কষ্টের মধ্যে আছে। কেউই টাকা ফেরত পায়নি।

১১ এপ্রিল, ২০১২

ড্রাইভারের বক্তব্যঃ এপিএস ফারুকের গাড়ির ড্রাহইভার আজম খান গত রাতে এটিএন নিউজকে বিজিবি গেইটের টেলিফোনে দেওয়া বক্তব্যে বলেন, ‘রেলমন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুক গাড়িতে উঠে আমাকে বলে, “ধানমন্ডি ৩ নম্বরে যাও।” সেখানে যাওয়ার পর বলে, “গাড়ির সিটটা ভাঙো।একটা ছোট বস্তা দিয়ে বলে উঠাও।” আমি দেখি, টাকা, এরপর তিনজন লোক ওঠে। বলে, “জিগাতলার দিকে যাও।” আমি তখন বলি, “এত টাকা নিয়ে আমি গাড়ি চালাতে পারব না।অবৈধ টাকা। আমার ভয় লাগে।” এত টাকা কি করতেছেন ? এ সময় ওমর ফারুক বলেন, “কী বলো তুমি, উল্টাপাল্টা!” এ সময় আমরা বিডিআরের (বিজিবি) ৪ নম্বর গেটের সামনে ছিলাম।আমি তখন গাড়ি ভেতরে ঢুকিয়ে দিই।তারা বলে গাড়ি বের কর বের কর !আমাকে বলে, “তুমি ৩০ লাখ টাকা নিয়ে যাও।আমাদের বাইরে দিয়ে আসো।” তারা বলে, “৩০ লাখ টাকা! তোমার সারা জীবন আর কিছু করা লাগবে না।”’গাড়িচালক আজম এটিএন নিউজের কাছে দাবি করেছেন, গাড়িতে অনেক টাকা ছিল। গাড়ি নিয়ে পিলখানায় ঢুকে পড়লে ওমর ফারুক তাঁকে বলেন, ‘এখান থেকে তোমাকে ৩০ লাখ টাকা দিব, গাড়ি ঘুরিয়ে আমাদের বাইরে দিয়ে আসো।’

ঘটনাঃ জাতীয় সংসদের স্টিকারযুক্ত একটি প্রাইভেটকার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঝিগাতলার দিকের বিজিবির ৪ নম্বর গেট দিয়ে ঢুকে পরে। প্রবেশপথে বিজিবি সদস্যরা নিয়মানুযায়ী গাড়িটিতে ধীরে চলার নির্দেশ দেয়। প্রাইভেটকারটি যথারীতি থামে। গাড়িটি কোন্ সাংসদের তা জানতে চায় বিজিবি। গাড়িতে থাকা লোকজন জানায়, গাড়িটি রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের। গাড়িতে তিনি আছেন কি-না জানতে চাইলে বলা হয়, গাড়িতে মন্ত্রী নেই। গাড়িতে থাকাদের পরিচয় জেনে নেয় বিজিবি। এরপর গাড়ির আরোহীদের অনেক রাতে মন্ত্রীর গাড়ি নিয়ে বিজিবি সদর দফতরে ঢোকার কারণ জানতে চাওয়া হয়। তাঁরা জানান, গাড়িটি নিউমার্কেটের দিকের গেট দিয়ে বের হওয়ার উদ্দেশ্যে ৪ নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করেছে। গাড়িতে বসে থাকা রেলপুলিশ সদস্য ও চালকের গতিবিধি সন্দেহ হলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বিজিবি সদস্যরা বিজিবির গোয়েন্দা শাখায় বিষয়টি জানায়।এরপর অদূরে থাকা বিজিবির গোয়েন্দারা বিজিবির উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।উর্ধতন কর্মকর্তাদের গ্রিন সিগন্যালের পর গাড়িতে তল্লাশি শুরু করে বিজিবি সদস্যরা। তল্লাশির এক পর্যায়ে গাড়িতে প্যাকেটকৃত অবস্থায় থাকা ৭০ লাখ টাকা পাওয়া যায়।

এক জায়গায়ঃ রেলওয়েতে নিয়োগ-বাণিজ্যের ঘুষের টাকা প্রাইভেটকারে বস্তাভর্তি করে আনার সময় এর ভাগ চান ওই গাড়ির চালক।কিন্তু তা দিতে রাজি হননি রেলমন্ত্রীর এপিএস ও অন্যরা।এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে গাড়িচালকের কৌশলী চালেই বিজিবি সদস্যদের কাছে ধরা পড়েন সবাই।

বিজিবি ও বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে একটি প্রাইভেটকারযোগে রেলমন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুক তালুকদার, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকইউসুফ আলী মৃধা ও জিআরপি পুলিশের সদস্য এনামুল হক পিলখানা এলাকায় ৭০ লাখ টাকাসহ ধরা পড়েন।পিলখানা এলাকায় যাওয়ার আগেই গাড়িচালক মো. আজম টাকার বস্তা থেকে তাঁকে কিছু টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করলে ওমর ফারুক গাড়িচালককে বলেন, ‘তোকে তো বেতন দেওয়া হয়। আবার টাকা চাস কেন?’ ১৫-২০ মিনিটের বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে গাড়িচালক পিলখানার ধানমন্ডি গেটের সামনে আচমকা গাড়ি ঘুরিয়ে ফেলেন এবং চিৎকার দিতে থাকেন।ওই সময় বিজিবির সদস্যরা এগিয়ে এলে গাড়িচালক তাঁদের জানান, গাড়ির ভেতরে টাকা আছে।এরপর বিজিবি সদস্যরা বস্তাভরা টাকাসহ তাঁদের সবাইকে আটক করেন।

সূত্রে জানা গেছে, রেলমন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুক তালুকদার ও রেলওয়ের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা ঘুষের ৭০ লাখ টাকা রেলমন্ত্রীর বাসায় নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় রাত সাড়ে ১২ টার দিকে ওমর ফারুকের ড্রাইভার বিষয়টি জানতে পেরে তার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। ড্রাইভারকে টাকা দিতে অস্বীকার করলে ড্রাইভার গাড়িটি বিজিবির ৩ নম্বর গেটের সামনে আসলে ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়।

ওমর ফারুকের কাছে টাকাসহ আটক হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ড্রাইভার ব্ল্যাকমেইল করেছে। টাকাগুলা আমার শালা পাঠাইছে। ওখানে ২৫ লাখ টাকা ছিল।আরেক মিডিয়ায় এ ব্যাপারে এপিএস ওমর ফারুকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গাড়ি বিজিবির গেটের কাছে এলে চালক আলী আজম দ্রুত গাড়িটি বিজিবি সদর দফতরের (পিলখানা) গেটে নিয়ে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই গাড়িটি রাস্তার বাঁ পাশে থামিয়ে চালক বলতে থাকেন, ‘গাড়ি থেকে আপনারা নেমে যান।না হলে ঘুষের টাকাসহ ধরিয়ে দেব।’ এ অবস্থায় চালকের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। বিষয়টি দেখার জন্য বিজিবি সদস্যরাও এগিয়ে আসেন। এ সময় চালক চিৎকার করে বলেন, ‘গাড়িতে অবৈধ টাকা আছে।’ তার কথা শুনে বিজিবির সদস্যরা টাকার ব্যাগসহ সবাইকে আটক করে পিলখানার ভেতরে নিয়ে যান।

বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আনোয়ার হোসেন সমকালকে জানিয়েছেন, রেলমন্ত্রীর এপিএস ফারুকসহ কয়েকজনকে পরিচয়পত্র না থাকার কারণে আটক করা হয়েছিল। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর গতকাল সকালে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। টাকা উদ্ধারের ব্যাপারে তিনি বলেন, বিষয়টি গুজব।

সূত্র জানায়, সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে একটি জিপ পিলখানার ৪ নম্বর (জিগাতলা) গেটে গিয়ে থামে।এ সময় চালক আলী আজম গাড়ি থেকে নেমে সেখানে দায়িত্বরত বিজিবি সদস্যদের বলেন, গাড়িতে বিপুল পরিমাণ অবৈধ টাকা রয়েছে।তিনি গাড়িটি আটকের জন্য বিজিবি সদস্যদের অনুরোধ জানালে বিজিবি সদস্যরা গাড়ি তল্লাশি করে ৭০ লাখ টাকা উদ্ধার করেন।

প্রথমআলোঃ একটি গাড়ি। তিনজন যাত্রী। একজন চালক। কয়েক লাখ টাকা। রাত প্রায় ১১টা। ধানমন্ডি ৩ নম্বর সড়ক থেকে ছুটে চলা। গন্তব্য কাছেই, জিগাতলা। পথে বিজিবির সদর দপ্তর, পিলখানা। হঠাৎ চালকের সেখানে ঢুকে পড়া।(ঢাকা মেট্রো-চ ১৩-৭৯৯২) চালাচ্ছিলেন এপিএস ফারুকের ব্যক্তিগত চালক আজম খান। ঘটনা সম্পর্কে রেলমন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজম দুই বছর ধরে আমার গাড়ি চালায়। কিন্তু সোমবার রাতে সে আমাকে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের চেষ্টা করে। মন্ত্রী মহোদয়ের বাসায় যাওয়ার পথে হঠাৎ করে গাড়িটি সে বিজিবি সদর দপ্তরে ঢুকিয়ে দেয় এবং চেঁচামেচি করে বলতে থাকে, গাড়িতে অনেক টাকা আছে। তাঁর হইচই শুনে বিজিবির সদস্য ও সেনাসদস্যরা সেখানে আসেন। তাঁরা আমাদের বিজিবির নিরাপত্তাকক্ষে নিয়ে বসিয়ে রাখেন। গতকাল সকালে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর আমাদের ছেড়ে দেন।’

এক জায়াগায়ঃ ধানমন্ডি থেকে গাড়ি নিয়ে মন্ত্রী মহোদয়ের বাসার দিকে যাওয়ার পথে হঠাৎ করেই আজম গাড়িটি পিলখানায় ঢুকিয়ে দেয়। আমরা তখন তাকে বলি, “তুমি কই যাচ্ছ?” সে বলে, “আপনারা সবাই গাড়ি থেকে নেমে যান। নইলে আমি সিনক্রিয়েট করব।” এর পরই সে হইচই শুরু করে দিলে বিজিবির সদস্যরা এগিয়ে আসে। এরপর সারা রাত আমাদের একটি কক্ষে বসিয়ে রাখে বিজিবির সদস্যরা। তবে তারা সবাই ভালো ব্যবহার করেছে।

চালক আজম হঠাৎ করে এমন ঘটনা কেন ঘটালেন , জানতে চাইলে মন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুক বলেন, ‘আজম ইদানীং মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিল। গাড়িতে আমার ব্যক্তিগত কিছু টাকা ছিল, ২৫ লাখ। আজম বিজিবিতে আমাদের নামিয়ে দিয়ে সেই টাকা নিয়ে পালিয়ে যেতে চেয়েছিল। সে আমাদের তিনজনের মোবাইলও ছিনিয়ে নিয়েছিল।’

এক খবরেঃ বিজিবির ৪ নম্বর গেটের সামনে গিয়ে চালক আলী আজম অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন। এ সময় বিজিবি গেটে পাহারারত বিজিবি (সেনা) সদস্যরা এগিয়ে এলে ওমর ফারুক নিজেকে রেলমন্ত্রীর এপিএস পরিচয় দেন। চালক ও এপিএস অসংলগ্ন কথা বলায় তাদের গাড়ি তল্লাশি চালানোর কথা জানায় বিজিবি সদস্যরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা বিজিবি সদস্যদের দেখে নেবেন বলে হুশিয়ার করেন। এ সময় বিজিবি সদস্যরা তল্লাশি চালিয়ে গাড়িতে থাকা বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার করেন। তাদের মোবাইল জব্দ করে গাড়ির ভেতরে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়।

কোথাওঃ আমি তাকে নিয়ে যাওয়ার পথে বিজিবি গেটে পৌঁছলে আমার চালক হঠাত্ করেই গাড়িটি বিজিবি গেটে ঢুকিয়ে দেয়। সে আমাদের হুমকি দিয়ে বলে, ভালো চাইলে আপনারা গাড়ি থেকে নামেন। অন্যথায় ঘুষের টাকাসহ ধরিয়ে দেব। তখন ব্যক্তিগত টাকা নিয়ে আমি কোথায় যাব তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যাই। এ সময় বিজিবির গেট থেকে বিজিবি সদস্যরা এসে আমাদের মোবাইল ফোন জব্দ করেন। পরে আমাদের বিজিবির ৩নং গেটে নেয়া হয়। সেখানে আমি বিজিবি কর্মকর্তাদের বিষয়টি বোঝানোর পর তারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

জানা গেছে, গাড়ির চালক আলী আজমকে ৫০ হাজার টাকা ভাগ দেয়ার কথা ছিল; কিন্তু তারা চালককে ১০ হাজার টাকা দেন। এ নিয়ে পিএস ও চালকের মধ্যে বাগিবতণ্ডা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চালক গাড়িটি বিজিবির সামনে নিয়ে যায়। ৭০ নাকি ৪ কোটি ৭০ : আটক হওয়া গাড়ি থেকে ৭০ লাখ নাকি ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, তা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। ওমর ফারুক ২৫-৩০ লাখ টাকার কথা জানিয়েছেন।তবে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ওই গাড়ি থেকে ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল মুচলেকা দেয়ার সময় ৭০ লাখ টাকার কথা প্রকাশ করা হয়।বাকি ৪ কোটি টাকা কোথায় গেছে, তার হদিস পাওয়া যায়নি।

এক সূত্রে জানা যায়, বলির পাঁঠা হতে চলেছেন গাড়ির ড্রাইভার। কেন ঘুষের কথা বিজিবি সদস্যদের কাছে ফাঁস করলেন—এজন্য সবার এখন চক্ষুশূল। নির্দোষ এ ব্যক্তিকে ফাঁসিয়ে দিতে এখন নানা গল্প ফাঁদা হচ্ছে।তিনি এখনও নিউমার্কেট থানায় হাজত বাসি।আমার মনে হয় আজম একজন সৎ নাগরীক।সে এত টাকা দেখে কোন এক আবেগে এই কান্ড করে বসে।সমাজের ভালো চিন্তা করতে গিয়ে বেচারার পরিবার সহ বাকী জীবনের আর কোন সম্ভাবনা রইলো না।আমারা দাদার এপিএস ফারুকের ড্রাইভার আজম খানের সাক্ষ্যাৎকার শুনতে চাই ।

আমাদের কয়েকটা প্রশ্ন আছেঃ
১. গাড়িচালকের মাথায় হঠাৎ পিলখানায় ঢোকার কথা আসলো কেন ? সে কি এমন কোনও পরিস্থিতিতে পড়েছিল যে তার এটা ছাড়া আর কিছুই করার ছিলো না ?
২. একজন নিরাপত্তা কর্মকতা থাকা অবস্থায় একজন ড্রাইভার কিভাবে ঐ কর্মকর্তা সহ মোট তিনজন সুস্থ্য ব্যক্তিকে জিম্মি করে ? তাদের মোবাইল কেড়ে নেয়?
৩. কথায় ঘাপলা আছে, একজন বলে তাদের ৩ জনেরই মোবাইল কেড়ে নেয়া হয়েছিল আর একজন বলে আমার মোবাইল তো কাছেই ছিলো ?
৪. এরকম হাইপ্রোফাইল কর্মকর্তাদের পরিচয় নিশ্চিত হতে সারারাত লাগে ৫. টাকা যারই হোক গাড়িতে আসলো কী করে? আর গাড়ি মন্ত্রীর বাড়িমুখী এটাতো ড্রাইভারের আগে থেকেই জানা কথা, তাহলে পিলখানায় আসার আগে এমন কী হয়েছিলো যাতে করে ড্রাইভারের এমন মতিভ্রম হয়েছিল ?
৬. কেউ (যখন সে গাড়ির ড্রাইভার) টাকা ছিনতাই করতে গাড়ি নিয়ে পিলখানায় ঢোকে ?
৭. মন্ত্রী কীভাবে নিশ্চিত হলেন যে ঐ টাকা তার এপিএস এর ? আর তা-ই যদি হবে এবং তা ভালই যদি হবে তাহলে এই চট বরখাস্ত কেন ? যাতে ঐ টাকা নিয়ে রাজস্ব বিভাগের তদন্ত না হয় ?

৮. ড্রাইভার যদি টাকা চাইতো এবং তাদের মধ্যে এ নিয়ে বাকবিতন্ডা হতো তাহলে গাড়িতে বসা দক্ষ আমলা, এপিএস ও নিরাপত্তা সদস্য অবশ্যই এতটা বোকা না যে ড্রাইভারকে সিনক্রিয়েট করার সুজোগ দিত।আপনি নিজেকে এরকম একটা পরিস্থিতিতে ভেবে তারপর বলুন, কি করতেন ? অবশ্যই বলতেন, কত টাকা লগব তর ক ? সংঙ্গে সঙ্গে দিয়ে দিতেন।এরপর বাসায় নিয়া ওরে হাত পা বেঁধে পিডাইয়া হাসপাতালে পাঠাইতেন।টাকার ভাগ ওর কোন দিকে দিয়ে যে দিতেন তা আর বললাম না।

যে চোর ধরিয়ে দিল তাকেই আমরা শাস্তি দিচ্ছ, আর চোর হচ্ছে সেই শাস্তির বিচারক।আজম আমাদের ক্ষমা কোর না !

আমরা জানিনা আজম খান এখন কোথায়, কেমন আছে!!!!
কিংবা চাপ প্রয়োগ করে তাকে দিয়ে কি বলানো হবে – ‘ আমি টাকার ভাগ চেয়েছিলাম, না দেওয়াতে বিজিবি…………. এরকম একটা গল্প।”

ব্লগার ভায়েরা, একটি বার ভাবুন, আমরা কি একটি ভাল কাজকে উৎসাহিত করতে পারি না, পারি না আজম খানের এই সাহসী কাজটিকে আদর্শ হিসাবে জনমত তৈরী করতে? নাকি সেই প্রচলিত পথেই হাটবো, অন্যায় দেখেও চোখ বন্ধ রাখো, মুখ বন্ধ রাখো।প্লিজ, দু/চার বর্ণ আজম খানকে নিয়ে লিখুন।আজ, ২০১২ সালে এই অর্ধস্বাধীন দেশটাকে পূর্নস্বাধীন ও নাগরীকে মুক্তির জন্য আমাদের পূর্বপূরুষদের মত অত দুসাহসীক হতে হবে না।লক্ষ বুকের রক্ত না, আজ কেবল লক্ষ তরুনের আঙ্গুলের ডগা ফেটে টাচ প্যাড অথবা কীবোডের দুফুটা রক্তই মুক্ত করতে পারে সমস্ত অন্যায়, অনাচার, অত্যাচার, অবিচার, অপশাসন, অন্ধকার।

আজম খানকে মিডিয়ার সামনে আনুন!!!আমরা বাঙ্গালী জাতি সারা জীবন হুজুগের পিছনেই ছুটলাম। এখন ছুটছি একটি কালো বেড়াল ধরার জন্য। কিন্তু এই কালো বেড়ালটার অস্তিত্ব যে সবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে সেই আজম খানের কোন খবর কেউ কি নিচ্ছি??

ছাত্রজীবন, শিক্ষা জীবনে কেউ কখনো বলে না, আমি দূর্নীতি বাজ হবো। সবাই সৎ থাকতে চায়, আদর্শ জীবন যাপন করতে চায়।কিন্তু মওকা পেলে ঘাড় মটকাতে কেউ ছাড়ে না, সে রিক্সাওয়ালা হোক, সিএনজিওয়ালা হোক, কিংবা ডাক্তার – মোক্তার!!কিন্তু সব কিছুই স্রোতের টানে ভেসে যায়না। কেউ কেউ সকল প্রতিকূলতার মাঝেও অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ায়। তেমনি একজন, হিরো আজম খান।চাকরীর মায়া, জীবনের ঝুকি, নিজের পরিবারের বিপদ উপেক্ষা করেছে আজম খান এই বৈরী পরিবেশে এমন সাহসী কাজটি করল। আজম খান, তুমি কোথায় আছ জানিনা। জানিনা তুমি কেমন আছ! তবে এঠুকু জেনো তুমি আর একা নও।আজ আমিও আছি তোমার সাথে। “আমি”? আমরাও আছি তোমার সাথে।
ব্লগার ভাইয়েরা, আপনারাও কি আছেন??






Shares