লিভার ঠিক রাখতে কী কী করবেন
লিভার নিয়ে আমাদের চিন্তার শেষ নেই। কী খেলে, কী করলে, লিভার সুস্থ থাকবে তাই নিয়ে মাথা ব্যথার শেষ নেই আধুনিক স্বাস্থ্য সচেতন বাঙালির। লিভার সম্পর্কে এমনই কিছু তথ্য জানাচ্ছেন চিকিত্সক পার্থ মুখোপাধ্যায়।
লিভার সুস্যেথ রাখতে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন-
১। খাওয়া দাওয়া- অতিরিক্ত তেল মশলা জাতীয় খাবার, ফ্যাট জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। যাতে কোনও ভাবেই লিভারে ফ্যাট না জমে। ফ্যাটি লিভারের কারণে প্রচুর সমস্যা দেখা দে।
২। জল- যেহেতু হেপাটাইটিস এ ও ই ভাইরাস জলের মাধ্যমে ছড়ায় তাই যেখানে সেখানে হুটহাট জল খাবেন না। জল খাওয়ার আগে তা পরিশোধিত কিনা ঠিক মতো খেয়াল রাখুন। পারলে বাইরের জল একেবারেই খাবেন না। ব্যাগে জলের বোতল রাখুন।
পড়ুন আপনার লিভার পুরোপুরি কাজ করছে তো?
৩। শরীরচর্চা- বাঙালিদের শরীর চর্চায় বরাবরের অনীহা। অতিরিক্ত আসল্য, শরীর চর্চা না করায় শরীর এবং লিভারে মেদ জমে। তাই নিয়মিত শরীরচর্চা করুন।
৪। ওষুধ- হুটহাট পেন কিলার, হজমের ওষুধ খেয়ে ফেলবেন না। এতে লিভারের ক্ষতি হয়।
পড়ুন মাত্র ২৫% কাজ করছে বিগ বি-র লিভার
৫। মদ্যপান- যাঁরা প্রতি দিন মদ্যপান করেন ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে তাঁদের অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের সমস্যা দেখা যায়। তাই যদি আপনার এই অভ্যাস থেকে থাকে তা অবিলম্বে ছাড়ুন।
৬। ভুঁড়ি- বলা হয় ভুঁড়ি যুক্ত উদর, লিভারের সর্বনাশ। অর্থাত্, যদি আপনার ভুঁড়ি থাকে তাহলে কিন্তু কমাতেই হবে।
৭। ব্লাড ট্রান্সফিউশন- হেপাটাইটিস বি ও সি রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়। যে কোনও রকম ব্লাড ট্রান্সফিউশনের ক্ষেত্রে তাই রক্তের স্ক্রিনিং অত্যন্ত জরুরি।
৮। রেজর, ক্ষত- বন্ধুর রেজর ব্যবহার করবেন না। ক্ষত স্থান থেকে যদি রক্তপাত হয় তবে সাবধান থাকুন।
৯। নিডল- ব্লাড ট্রান্সফিউশনের ক্ষেত্রে রক্তের স্ক্রিনিং যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই জরুরি ঠিক মতো পরিশোধিত নিডল ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে খেয়াল রাখা। অন্য দিকে ট্যাটু করানোর সময়ও নিডল পরিশোধিত কিনা সে দিকে খেয়াল রাখুন।
১০। গর্ভাবস্থায়- যদি আপনার শরীরে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস থাকে তবে তা গর্ভস্থ শিশুর শরীরে সংক্রমিত হতে পারে। তবে চিন্তার কিছু নেই। শিশুদের ভ্যাক্সিনেশনের মাধ্যমে তা সম্পূর্ণ নির্মূল করা যায়।
লিভার আমাদের শরীরের সব থেকে বড় ও শক্তিশালী অঙ্গ। শরীরের গঠন অনুযায়ী লিভারের ওজন সাধারণত ৮০০ থেকে ১২০০ গ্রাম হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেড় কেজির লিভারও দেখা যায়। শক্তিশালী হওয়ার কারণে লিভার খুব সহজে খারাপ হয় না। অন্য দিকে লিভার খারাপ হলে নিজে থেকেই পুনর্গঠনও হয়। লিভার ট্রান্সপ্লান্টের ক্ষেত্রেও দাতা এবং গ্রহীতা উভয়ের ক্ষেত্রেই আপনা থেকেই লিভারের পুনর্গঠন হয়।