Main Menu

রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও কিছু কথাঃ

+100%-

galibবাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল আছে। একজন মুসলিম হিসেবে এটা আমার জন্য্ও নিঃসন্দেহে খুশির এবং গৌরবের খবর। শুকুর আলহামদুলিল্লাহ।
এবার আসুন কিছু খারাপ কথা বলি। ৯৫% মৃসলমানের এই দেশে আমি-আপনি কতো পার্সেন্ট মুসলমান? খটকা লাগছে? একটা গল্প শুনুন,
অনেক কাল আগে মির্জা গালিবকে এক লোক প্রশ্ন করেছিলো, হুজুর আপনি হিন্দু না মুসলমান?
মির্জা গালিব উত্তর দিলেন, আধা আধা!
লোকটির মনে খটকা লাগলো। সে বললো, হুজুর, ঠিক বুঝলাম না।
মির্জা গালিব মেুচকি হেসে বললেন, মদ খাই কিন্তু শুয়োর খাই না।
এবার উত্তরটা একমাত্র আপনিই দিতে পারবেন, আপনি কতো পার্সেন্ট মুসলামান! কারন একমাত্র আপনিই জানেন- আপনি কি খান, কি খান না, কি করেন, কি করেন না।
দেশে ধর্ম নিয়ে কোন কথা উঠলেই আপনি জ্বেহাদের ডাক দেন। আপনি তীব্র কণ্ঠে শ্লোগান দেন, টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া বাংলার মাটি আপনি রক্তে ভাসিয়ে দেবেন। আসুনতো একটি দেখি জ্বেহাদ নিযে ইসলাম কি বলে!
ইসলামের ভাষায় সবচেয়ে বড়ো জ্বেহাদ হলো নিজের নফসের বিরুদ্ধে জ্বেহাদ করা। নফ্স বোঝেন তো? আপনার মনের মাঝে যতো কু-প্রবৃত্তি আছে তাদেরকেই নফ্স বলে।
এবারও একমাত্র আপনিই এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন, আপনি কতো বড়ো জ্বেহাদী/মুজাহিদ! কারন একমাত্র আপনিই জানেন আপনি আপনার নফসকে কতোটা দমন করতে পেরেছেন।

কথায় কথায় দেশে রক্তের বন্যা বইয়ে দেবার হুমকি দেন। কিন্তু কার রক্ত দিয়ে দেশ ভাসাবেন বলুন তো? নিশ্চই কোন অসহায় মায়ের সন্তানের রক্ত। ২০১৩ তে হেফাজতে ইসলাম ১৩ দফা দাবী নিয়ে মতিঝিলে অবস্থান নিয়েছিলো। আমি দেখিছি কিভাবে কোমল মতি কিশোর ছাদ্রদের জোর করে, বিভ্রান্ত করে মতিঝিল নিয়ে যাওয়া হয়ে্যিছলো। যারা কিনা জ্বেহাদরে মানেই বুঝেনি তখনো। সেদিন রাতে সমস্ত মতিঝিল এলাকায় বিদ্যুত বন্ধ করে ভোর পর্যন্ত কী অপারেশন চালানো হয়েছিলো তা জানি না। তবে কিছু পুলিশ এবং সংবাদ কর্মীর সাথে ব্যাক্তিগতভাবে কথা বলেছিলাম। তাদের বর্ণনা অতোটা সুখকর ছিলো না। সেই রাতের পর সারাদশেরে অনেক মায়ের সন্তারই আর ঘরে ফিরে যায়নি, বাবা বলে ডাকেনি।
শুনতে খুব খারাপ লাগছে? সাবজেক্টটা একটু চেঞ্জ করি।
আপনি কথায় কথায় ধর্ষণের জন্য স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অবাধ মেলামেশাপূর্ণ বেহায়া নির্লজ্জ শিক্ষা ব্যবস্থাকে দায়ী করছেন। কিন্তু আপনার মাদ্রাসার শিক্ষক কেন শুধু ছাত্রী নয়, ছাত্রকেও ধর্ষণ করে? আপনার জ্বেহাদী যৌবন শক্তির হাতে থেকে একটি ছেলে শিশুও নিরাপদ নয়। কারন আপনার থুতনিতে সুন্নাতী দাড়ী আছে, গায়ে জুব্বা-আলখাল্লা আছে, মাথায় সুন্নাতী পাগড়ী আছে। কিন্তু আপনার দিলে ঈমান নেই। তাই ঈমান প্রকাশ করতে আপনি ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার’ বলে গলা ফাটান। আর ইসলাম ধর্মের পেছনে বড় বড় বাঁশঝাড় উজার করে দেন।
এদেশের পানির ড্রেনে, পার্কের ঝোপের আড়ালে অথবা ডাস্টবিনে যেসব ব্যবহৃত কনডম পড়ে থাকে ওগুলো কিন্তু আপনার- আমার মতো মুসলমানেরই কর্ম। কারন এটি একটি ইসলামি দেশ, এদেশের রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম।
কোন মেয়ে ধর্ষিতা হলে আপনি মেয়েদের চাল-চলন, পোষাক-আসাকের দোষ দেন। ইসলাম নারীকে পর্দা করতে বলেছে, তার শরীর হেফাজত করতে বলেছে। তেমনি পুরুষদেরও তো বলেছে তাদের দৃষ্টি সংযত রাখতে। আপনি নিজের দৃষ্টি কতোটুকু সংযত করে চলেন? কোন মেয়ে টাইট কাপড় পড়লে, অথবা কারো বুক থেকে ওড়না হঠাৎ সরে গেলে আপনার চোখ কেন আটকে যায় বলুন তো? এবার কি উত্তর দেবেন জানি। বলবেন, গাছে আম পাকলে ছেলে পেলেরা একটু আকটু ঢিল মেরেই থাকে। কিন্তু গাছে ঢিল বখাটে ছেলেরাই দেয়। আপনার ঈমানও ওই আম গাছে ঢিল ছোড়া বখাটে ছেলের মতোই।

সারা জীবন ঘুষ খেয়ে ভুড়ি ফুলিয়ে, দূর্ণীতি করে, বাসার কাজের মেয়েকে গর্ভবতী করে, শেষ জীবনে সেই ঘুষের টাকায় অথবা পেনশনের টাকায় হজ্জ করে আসেন। আর ভাবেন, আর চিন্তা নাই । মক্কা-মদীনার পবিত্র মাটিতে যেয়ে তওবা পড়ে ফেলেছি। এইবার বেহেশত নিশ্চিত! বেহেশত অতো সহজ নারে ভাই। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ নিজে বলেছেন, খাস দিলে তওবা করলে তিনি শিরিক ব্যাতীত সকল পাপ ক্ষমা করে দেবেন। কিন্তু বান্দার হক তিনি কখনো ক্ষমা করতে পারবেন না। ভাই মনে আছ তো জীবনে কতো মানুষের কতো রকম হক মেরে খেয়েছেন! অথচ ধর্মের নামে কোন কথা উঠলেই আপনার মাথা নষ্ট হয়ে যায় । আপনার রক্ত টগবগ করতে থাকে। আপনি জ্বেহাদী হয়ে ওঠেন।

ওপরের কাজগুলি আপনিই করেন সেটা একবারও বলছি না। তবে এই কাজগুলি আপনার আমার চোখের সামনেই ঘটে, ঘটছে। অথচ আমরা এর কোন প্রতিবাদ করি না। ইসলাম কি বলে? অন্যায় করা, আর অন্যায়কে পশ্রয় দেয়া কি খুব বেশি পার্থক্য? এবার বলুনতো আমাদের রাষ্ট্র ধর্ম কি?

কুরআন এবং ইসলাম রক্ষার দ্বায়িত্ব আল্লাহ নিজে নিয়েছেন। কিয়ামত পর্যন্ত আল্লাহ নিজে কুরআন হেফাজত করবেন। সুতরাং আপনাকে ইসলাম রক্ষা নিয়ে এতো মাতামাতি করতে হবে না।
আপনি শুধু নিজের চরিত্রটার দিকে একটু নজর দিন। ইন-শা-আল্লাহ সব বদলে যাবে।






Shares