+০০০ নম্বর থেকে ফোন :: রিসিভ করলেই মৃত্যু অথবা অজ্ঞান ! গুজবে ভাসছে গোটা হবিগঞ্জ
ওয়েব থেকে নেয়া:: মোবাইল কলে জিরো নাম্বারের ফোন রিসিভ করলেই মৃত্যু অথবা শরীর জ্বলে কালো হয়ে গুরুতর আহত হওয়া। এমনই গুজব ছড়িয়ে পড়েছে পুরা হবিগঞ্জ জেলার সর্বত্র। আর এতে করে দেখা দিয়েছে চরম আতঙ্ক। গ্রামাঞ্চলে অনেকেই ফোন রিসিভ করা থেকেও বিরত রয়েছেন। তবে কিভাবে গুজব ছড়িয়েছে এর কোন ভিত্তি পাওয়া যায়নি।
গত কয়েকদিন ধরে এ প্রতিনিধির কাছে একাধিক ব্যক্তি ফোন করে জানতে চেয়েছেন যে, অমুক গ্রামে ফোন রিসিভ করে তমুক মারা গেছে, আবার কেউ বলছে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যদিও কেউ সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেনি। এমনকি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এটাকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়ে বলছেন এ ধরণের কোন রোগী আমাদের হাসপাতালে আসেনি। এ সব ঘটনা বাস্তব না-কি গুজব তা নিয়েও রয়েছে ব্যাপক আলোচনা। তবে এসব গুজব নিয়ে আতংকিত না হওয়ার জন্য সচেতন মহলের আহবান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কিছু অপ-প্রচারকারী প্রচার করছে তিন অথবা চারটি জিরোযুক্ত কোন মোবাইল নাম্বারে ফোন আসলে রিসিভ করলেই কানে বিকট আওয়াজের মাধ্যমে মোবাইল ব্যবহারকারীর মৃত্যু হয়ে যায়। এ গুজবকে অনেকেই বিশ্বাস করছেন। এমন গুজবে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকে অনেকে স্ট্যাটাস দিয়ে এর সত্যতা জানতে চাচ্ছেন। সব মিলিয়ে এ গুজব নিয়ে যেন সারা দেশেই তোলপাড় চলছে।
প্রবাসে বসবাসরত সুমন নামের এক প্রবাসী মোবাইল ফোনে আলাপকালে জানান, ভাই দেশে কি চলছে? আত্মীয়-স্বজনদের ফোন দিলে রিসিভ করেনা। তারা বলে জিরো জিরো নাম্বার থেকে কল আসলে নাকি মানুষ মারা যায়। তাই এ ভয়ে কেউ কেউ ফোনও রিসিভ করছেনা। অনেকে আবার কথিত মৃত্যুর ভয়ে মোবাইল বন্ধ করে রেখেছে। গত দু’দিন আগে সদর ইউপির আলীপুর গ্রামের জনৈক মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার স্বজনরা। তারা জানান, জিরো জিরো নাম্বারে একটি কল রিসিভ করার পর তার সারা শরীর কালো হয়ে যায়। এ ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ ইদ্রিছ আলীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এ ধরণের কোন আলামত শরীরে পরিলক্ষিত হয়নি। তিনি বলেন, মনের আতংকে এমনটা হতে পারে।
নাম অপ্রকাশের শর্তে এক গৃহবধূ জানান, মোবাইলে ফোন আসলে মানুষের নাকে কানে রক্ত বের হয়ে মারা যায়। তাই ভয়ে মোবাইল ফোনই বন্ধ করে রেখেছি। অপর এক গৃহবধূ জানান, তার অষ্টম শ্রেণী পড়–য়া মেয়ে প্রবাসের কোন কল আসলে রিসিভ বা কথা বলতে চায় না। সে নাকি শুনেছে জিরো জিরো নম্বারে ফোন রিসিভ করলে মানুষ মারা যায়। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রথীন্দ্র চন্দ্র দেব বলেন, এটা একটি গুজব ছাড়া কিছু নয়। হাসপাতালে এ ধরণের কোন রোগী আসেনি। তবে এটা একটি মানসিক রোগ। লোকের মুখে মুখে গুজব শুনে মনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এসব বিষয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানান। সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা মনে করেন, একটি বিশেষ চক্র এ সব গুজব ছড়িয়ে কোন ফায়দা নেয়ার অপচেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে সকলকে গুজবে কান না দিয়ে সর্তক থাকার আহ্বান জানান।