মীর কাশেমের ফাঁসি বহাল:: রিভিউ আবেদন খারিজ
বিবিসি বাংলা:: বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিয়েছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।
ফলে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে এখন আর কোন আইনগত বাধা থাকল না।
বিচার কার্যক্রমের বিভিন্ন পর্যায় শেষে চলতি বছরের মার্চ মাসে মীর কাশেম আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
সেই রায়ের বিরুদ্ধে একটি রিভিউ আবেদন করেন মি. আলীর আইনজীবীরা।
গত রবিবার সেই আবেদনের শুনানি শেষ হয় এবং আজ সকালে তার রায় ঘোষণা করা হয়।
জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীর মামলায় ২০১৪ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছিলো।
১৯৭১ সালে চট্টগ্রামে অপহরণ করে হত্যার দু’টি অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে এই মৃত্যুদণ্ড দেয়।
তাঁর বিরুদ্ধে আনা ১৪টি অভিযোগের ১০টি প্রমাণিত হয়েছে।
মি. আলীর বিরুদ্ধে আনা ১৪টি অভিযোগই বন্দরনগরী চট্টগ্রামে নির্যাতন কেন্দ্রকে ঘিরে।
কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমসহ ছয়জনকে অপহরণের পর নির্যাতন কেন্দ্রে আটকিয়ে রেখে হত্যা করে তাদের মৃতদেহ নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে, এই অভিযোগে তিন জন বিচারকের সমন্বয়ে আদালত সর্বসম্মতিক্রমে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
মীর কাশেম আলী গ্রেফতার রয়েছেন ২০১২ সালের জুন মাস থেকে।
পরের বছর ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে তার বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছিল।
রিভিউ আবেদন খারিজ হওয়ায় মি. আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে আর কোন বাধা থাকল না।
এখন আজকের ঘোষিত রায়ের কপি প্রকাশিত হবার পরেই কারা কর্তৃপক্ষ মি. আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন।
তবে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদনের একটি সুযোগ পাবেন মি. আলী।
তিনি সেই আবেদন করলে কারা কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রপতির জবাব পাওযা পর্যন্ত অপেক্ষা করবে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে এর আগে মোট ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।
এদের মধ্যে চার জনই শীর্ষস্থানীয় ও প্রভাবশালী জামায়াত নেতা। একজন বিএনপির একজন প্রভাবশালী নেতা।
সবশেষে গত মে মাসে জামায়াতে ইসলামীর আমীর ও সাবেক চার দলীয় জোট সরকারের মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর হয়।
এর আগে গত বছর নভেম্বর মাসে একযোগে কার্যকর করা হয় বিএনপির স্থায়ী কমিউনিটির সদস্য ও চট্টগ্রামের সাবেক এমপি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং জামায়াতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা ও চার দলীয় জোট সরকারের আরেক সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের।