ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ সোহাগের পরিবারে আহাজারি



নিজস্ব প্রতিবেদক:: লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরের ইতালির উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের রুটি গ্রামের যুবক সোহাগ নিখোঁজ রয়েছেন।
গত ৫ আগস্ট বুধবার ভূমধ্যসাগরে প্রায় ৭’শ অভিবাসী নিয়ে এ নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে তার পরিবার। এতে বিপুল সংখ্যক অভিবাসী মারা যান। প্রায় ৪০ জন অভিবাসীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে ইতালির নৌবাহিনী।
ভূমধ্যসাগরে ডুবে যাওয়া নৌকার যাত্রী ছিলেন আখাউড়ায় উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের রুটি গ্রামের নান্নু মিয়া সরকারের ছেলে লিবিয়া প্রবাসী মো.সোহাগ (২৫)। তিনি তিন বছর আগে কাজের সন্ধানে বৈধভাবে লিবিয়া পাড়ি জমিয়েছিলেন।
সোহাগের পরিবার জানায়, লিবিয়ার আলমোজা শহরের সোহাগ একটি পেট্রোল পাম্পে চাকরি করতো। সেখানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অশান্ত হওয়ায় দালালদের প্রলোভনে পড়ে অন্যান্য অভিবাসীদের সঙ্গে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করছিল।একই ট্রলারে আরও বাংলাদেশীও ছিল। এমনই একজন হলেন হেলাল। হেলাল ফোনে সোহাগের পরিবারকে জানায়, সোহাগ সহ মোট ১৮ জন এক গ্রুপে ছিল। সোহাগ তাদের সাথে ট্রলারে উঠে। ট্রলারটি ছাড়ার ২ ঘন্টা পর ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। অতিরিক্ত যাত্রী থাকার কারনে ট্রলারের তলদেশ ফেটে যায়। ট্রলারে অবস্হানরত যাত্রীরা আতংকিত হয়ে ছোটাছুটি শুরু করলে ট্রলারটি একদিকে কাত হয়ে ডুবতে থাকে।
এই দুর্ঘটনা খবর পেয়ে ৪টি লঞ্চ ও ৩টি হেলিকপ্টারের মাধ্যমে দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে ইতালির কোস্টগাড। স্হানীয় গনমাধ্যমের খবরে বলা হয়,উল্টে যাওয়ার সময় মাছ ধরার ওই নৌকাটিতে ধারনক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি আরোহী ছিল। নৌকাটি লিবিয়া উপকূল থেকে পায় ২৫ কিলোমিটার দূরে ঝড়ো হওয়ার কবলে পড়ে উল্টে যায়।অভিবাসীদের জন্য আন্তজাতিক সংস্থা আইওএমের মূখপাত্র বিবিসিকে বলেন,এখন পযন্ত ৪০০ অভিবাসীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।এদের মধ্যে কিছু সংখ্যক লোক গুরুতর আহত । জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর’র বরাত দিয়ে আলজাজিরা বলেছে, এ পর্যন্ত ৪০ জন জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে উদ্ধারকৃত মৃতদেহের মধ্যে সোহাগের মরদেহ পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করেছে ইতালিতে অবস্থানরত কয়েকজন প্রবাসী।
শনিবার (১৫ আগস্ট) সোহাগের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, সোহাগের আত্মীয় স্বজনার তার বাড়িতে ভিড় করছে। কান্নারত পিতা-মাতাকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছেন। নিখোঁজ সোহাগের চাচা আমিনুল ইসলাম সরকার জানান, লিবিয়ায় অবস্থানরত কয়েকজন প্রবাসী তাকে ফোনে জানিয়েছেন, সোহাগ লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবিতে নিখোঁজ হয়েছেন।উল্লেখ্য, সোহাগ ধরখার ইউনিয়ন ছাএলীগের সাবেক যুগ্মআহ্বায়ক মোঃশামীম সরকারের ছোট ভাই। তিনি বর্তমানে মালেশিয়া প্রবাসী।