নাসিরনগরে মা ও সন্তানের রহস্যজনক মৃত্যু



মোঃ আব্দুল হান্নান,নাসিরনগর:: প্রবাসীর স্ত্রী, তিন মাসের শিশু পুত্রকে হত্যা করে নিজেও আত্মহত্যা করেছে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ব্রাক্ষনবাড়িয়া জেলার নাসির নগর উপজেলার আশুরাইল বড় বাড়িতে। এলাকাবাসী, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে আনুমানিক ৪ বৎসর পূর্বে গোকর্ণ ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামের আব্বাছ আলীর কিশোরী কন্যা ফারজানা বেগম(২২), প্রেম করে বিয়ে করে তারই আপন খালাত ভাই বুড়িশ্বর ইউনিয়নের আশুরাইল(বড়বাড়ি) মৃত আবিদ মিয়ার ছেলে মোঃ নূর উদ্দিন(২৭) কে।
ফারজানার শ্বশুর বাড়ির লোকজন জানায় বিয়ের ৪ বৎসর পূর্বে নূর উদ্দিন যখন বিদেশ যেতে চায় তার আগে দিন ফারজানা এসে নূর উদ্দিনের বাড়িতে উঠে এবং বিয়ের দাবীতে অনশন শুরু করে দেয়। নূর উদ্দিন তাকে বিয়ে না করলে বিষ পানে আত্মহত্যার হুমকি দেয় । পরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর নূর উদ্দিন দুবাই চলে যায়। প্রায় আড়াই বছর পর আবার দেশে আসে।
এরই মাঝে ফারজানার গর্ভে এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। নাম রাখা হয় শফিকুল ইসলাম তানবীর। তানবীরের বয়স ৩ মাস। প্রতিবেশী প্রত্যক্ষদশীরা জানায়, আগামীকাল ১৫ আগষ্ট নূর উদ্দিনের দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। এরই মাঝে বাধা হয়ে দাড়ায় ফারজানা। ছয় মাসের ভিতরে সবকিছু ঘুছিয়ে একেবারে দেশে চলে আসবে বলে ফারজানাকে জানালেও স্বামীর কথা বিশ্বাস করতে নারাজ সে।
ঘটনার রাতে খাওয়া দাওয়ার শেষে শিশু পুত্রকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে ফারজানার দম্পত্তি। স্বামী তার কথা না শুনায় ঘুমন্ত শিশুকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। উত্তর ভিটির দরজার সামনে পিয়ারা গাছে গলায় ওড়না পিছিয়ে ফাঁসিতে জুলে থাকে। ভোরে ফারজানার ভাসুর মোঃ আলা উদ্দিন ফজরের নামায পড়তে মসজিদে রওয়ানা দেয়। হঠ্যাৎ গাছে ফারজানাকে ঝুলতে দেখে চিৎকার দিলে বাড়ির লোকজন এসে জড়ো হয়।
ফারজানা আত্মহত্যার খবর মহুর্তে সারা গ্রামে ছড়িয়ে পরে।পরে থানা পুলিশে খবর দেওয়া হলে ,নাসির নগর থানা পুলিশের এস আই মোঃ শাহজালাল,এস আই মোঃ মহিউদ্দিন (সুমন) সঙ্গীয় ফোস নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ফারজানার লাশ উদ্বার করে থানায় এনে লাশের ময়না তদন্তের জন্য ব্রাক্ষণবাড়িয়া মর্গে প্রেরন করে।
ফারজানার আত্মহত্যার বিষয়ে জানতে চাইলে এ বিষয়ে কোনরূপ মন্তব্য করতে রাজি হননি তার মামা নাসিরনগর ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের হিসাব রক্ষক মোঃ আব্দুর রহমান।
নাসিরনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আব্দুল কাদের জানান,লাশের ময়না তদন্তের জন্য ব্রাক্ষনবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন প্রকৃত ঘটনা কি খোঁজে বের করা হবে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোঃ শাহজালাল বলেন, সাধারণ ডায়েরীর ভিত্তিতে তদন্ত চলছে ;তবে ময়না তদন্তের রির্পোট আসার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।