ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে মেয়র!
সমীর চক্রবর্তী :: মঙ্গলবার বেলা ১১টা। আখাউড়া পৌর শহরের টেকনিক্যাল মাদরাসার সামনে তখন প্রচন্ড যানজট। সড়ক দিয়ে মানুষের পথ চলা দায়।
এ সময় বাসা থেকে বের হয়ে পৌর কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ একটি সভায় তার যোগদানের কথা ছিল। কিন্তু সবকাজ ফেলে তিনি নেমে পড়লেন ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে। সরাসরি যান চালকদের নির্দেশনা দিতে থাকলেন। এভাবে প্রায় আধাঘন্টা দৌড়ঝাপের পর যানজট মুক্ত হলো সড়কটি।
একই সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাওয়ার জন্য ওই পথ দিয়েই রেলওয়ে স্টেশনে যাচ্ছিলেন পৌর মেয়রের স্ত্রী এ্যাডভোকেট শাহীন আকতার। তিনিও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন মেয়রের কাজে।
তবে পৌর শহরের বাসিন্দা এবং যানবাহন চালকদের কাছে মেয়রের এ ভূমিকা নতুন কিছু নয়। শহরের যানজট দেখলেই মাঠে নেমে পড়েন মেয়র। রেলওয়ে স্টেশন রোড, আখাউড়া-চান্দুরা সড়কসহ পৌর শহরের বিভিন্ন সড়কে যানজট নিরসনে কাজ করেন।
সড়ক বাজারের ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, সেখানে অস্থায়ী ভিত্তিতে ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা লোকজন টাকার বিনিময়ে সড়কে সিএনজি অটোরিকশা দাড়িয়ে থাকার সুযোগ করে দেন। ফলে যানজট এখানে নিত্যদিনের ঘটনা। তবে মেয়র আসলেই নড়ে চড়ে বসেন তারা। কিছুক্ষনের মধ্যেই পরিস্কার হয়ে যায় সড়ক।
প্রায় প্রতিদিনই অফিসে যাওয়ার আসার সময় আধাঘন্টা থেকে এক ঘন্টা সময় মেয়র এ কাজে ব্যয় করেন। কিন্তু মেয়র চলে গেলে আবার একই অবস্থা দেখা যায় সড়কে। তাছাড়া অটোরিকশাগুলো সড়কে অবস্থান করার কারণে পথচারিদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পাশাপাশি ক্ষতির মুখে পড়েন পাশের ব্যবসায়ীরাও।
সড়ক বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নায় ভূইয়া বলেন, মেয়রের এমন উদ্যোগে আমরা অনেক খুশি। সেখানে ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা লোকজন ১০ টাকার বিনিময়ে সড়ক দখল করে অটোরিকশা রাখার সুযোগ দেন, ফলে যানজট লেগেই থাকে। তাছাড়া অনেকে ট্রেনও মিস করেন।’ তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মেয়রকে উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানান।
পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, ‘ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা লোকজন অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন। ফলে মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমাকেই যানজট নিরসনে মাঠে নামতে হয়। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকাদের নিয়ে আমরা নতুন করে ভাবছি।’