সরাইলে ওসি’র ডাকাতি প্রতিরোধের আশ্বাসে তিনদিন পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করলেন নৌ-মালিকরা
মোহাম্মদ মাসুদ :সরাইলে সভা করে নৌ-পথে ডাকাতি প্রতিরোধের ঘোষনা দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আলী আরশাদ। গত বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার অরুয়াইল ইউপি’র সম্মেলন কক্ষে স্থানীয় নৌ মালিকদের এক সভায় তিনি এ ঘোষনা দিয়েছেন। ওসি’র ঘোষনায় তিনদিন পর গত বৃহস্পতিবার ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে নৌ-মালিকরা। অরুয়াইল নৌ-মালিক ও বাজার কমিটি সূত্রে জানা যায়, অরুয়াইল ও পাকশিমূল এই দুই ইউনিয়নের একমাত্র বাজার হচ্ছে অরুয়াইল বাজার। দুই ইউনিয়নের মানুষের জীবন জীবিকা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের কেন্দ্র স্থল ও এটি। বাজারে রয়েছে ৭’শর অধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন ভৈরব ও আশুগ্ঞ্জ থেকে মেঘনা নদী দিয়ে কোটি কোটি টাকার মালামাল আসে এ বাজারে। বিশটির ও অধিক নৌকা চলাচল করে প্রতিদিন। নদী পথে মালামাল পরিবহন সহজ ও সাশ্রয়। কিন্তু সম্প্রতি নৌ-পথে নিয়মিত ডাকাতির কবলে পড়ছে ব্যবসায়িরা। দিনে দুপুরে কখনো যাত্রী বেশে কখনো জেলে সেজে ডাকাতরা যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে। পরে যাত্রীদের রামদা চাপাতি দিয়ে কূপিয়ে গুরুতর জখম করছে। এসব ঘটনা ঘটছে নদীর আশুগঞ্জ ও পানিশ্বর সীমানায়। গত সোমবার বিকেল ৩টায় আশুগঞ্জ থেকে অরুয়াইল গামী যাত্রীবাহী একটি নৌকায় কালাসূতা নামক স্থানে হামলা চালায় সংঘবদ্ধ ডাকাত দল। তারা মূহুর্তের মধ্যে যাত্রীদের সকল মালামাল লুটে নেয়। চাপাতি দিয়ে কূপিয়ে আহত করে বিশ যাত্রীকে। নৌকার মালিক আবদুল আজিজ (২৬) ও যাত্রী বিল্লাল (৩৫) গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে মৃর্ত্যুর যন্ত্রণায় ছটফট করছে। এ ঘটনার পর অরুয়াইলের নৌ মালিক ও সাধারন যাত্রীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষোভে সভা করে নদী পথে ওইদিন থেকেই নৌ ধর্মঘটের ডাক দেয় স্থানীয় নৌ-মালিকরা। প্রশাসন ডাকাতি প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে নদী পথে নৌকা না চালানোর ঘোষনা দেন তারা। বন্ধ হয়ে যায় নদী পথে নৌকা চলাচল। স্থবিরতা নেমে আসে বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলোতে। ওসি’র নির্দেশে ডাকাতি প্রতিরোধ ও ধর্মঘট নিরসনের লক্ষ্যে অরুয়াইল বাজার কমিটির উদ্যোগে গতকাল খিরোদ মেম্বারের সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়। বক্তব্য রাখেন- সরাইল কলেজের অধ্যক্ষ মৃধা আহমাদুল কামাল, হাজী মোঃ আবু তালেব, ব্যবসায়ি হাজী আওয়াল উদ্দিন, মোঃ সফর আলী, মোঃ সায়েদ মিয়া, মোঃ শাহের উদ্দিন ও গোপাল চন্দ্র প্রমূখ। ব্যবসায়ি ও নৌ মালিকরা বলেন, জেলা শহরের একজন ব্যবসায়ি ডাকাতির মাল সহ ধরা পড়েছিলেন। আমরা মামলা করেছিলাম। আশুগঞ্জ থানা তাকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়েছিল। প্রভাবশালী কিছু ব্যবসায়ি ওই মামলাটি প্রত্যাহার করে নিতে আমাদেরকে চাপ দিয়েছিল। আমরা রাজি হয়নি। ওই ব্যবসায়িই ডাকাতদের গড ফাদার। সে-ই এখন আমাদের নৌকায় ডাকাতি করাচ্ছে। আমরা সকলে নিরাপদ নৌপথ চাই। পুলিশের সহায়তা চাই। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আলী আরশাদ বলেন, নদী পথে ডাকাতি প্রতিরোধে আমি সকল প্রকার ব্যবস্থা নিব। দুইটি পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করব। যে কোন মূল্যে আমি ডাকাতি বন্ধ করব। হয়ত ডাকাত থাকবে নতুবা পুলিশ থাকবে। জীবন দিয়ে হলেও ডাকাতি রোধ করবই। ওসি’র এ ঘোষনায় অনেকটা স্বস্থ্যি ফিরে আসে নৌ-মালিকদের মাঝে। পরে তিনদিন পর নৌ ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে তারা।