কসবায় তিন ঘণ্টায় দুই হাজার ভোট
প্রতিবেদক :: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় পঞ্চম দফা উপজেলা নির্বাচনে আজ সোমবার মজলিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রথম তিন ঘণ্টায় দুই হাজার ভোট পড়েছে।
ওই কেন্দ্রে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্টদের বের করে দিয়ে ব্যালটে সিল মারার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে সরকার-দলীয় প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখল ও ভোট দেওয়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীর সমর্থকেরা।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভোট কারচুপি ও ৫৩টি কেন্দ্র দখলের অভিযোগ এনে বিএনপি-সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। দুপুর একটার দিকে জাতীয় পার্টি (জাপা) সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীও ভোট কারচুপির অভিযোগে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
মজলিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রে মোট দুই হাজার ৪০০টি ভোটের মধ্যে দুই হাজার ভোট পড়েছে।
কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. আবদুর রউফ বেলা ১১টা পর্যন্ত দুই হাজার ভোট পড়ার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে কীভাবে এত ভোট পড়ল, তা তিনি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, ‘মানুষ আসছে, ভোট দিয়ে যাচ্ছে।’
বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে মজলিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায়, সেখানে সাধারণ ভোটারের উপস্থিতি নেই। কেবল আওয়ামী লীগের প্রার্থীর লোকজনকে সেখানে দেখা যায়। কেন্দ্রের অভ্যন্তরেও কেবল তাঁদের দেখা যায়। সেখানে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীদের কোনো এজেন্ট খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে উপজেলার শিকারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই কেন্দ্রের বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীর এজেন্ট নাজমুল ও জসীম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, তাঁদের বিজিবি ও পুলিশ জোর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়।
দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার বাদশালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ওই কেন্দ্রে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ভোটাররাও কেন্দ্রে ঢুকতে পারছেন না। এ সময় নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ভোটার বলেন, ‘তাঁরা (সরকার-দলীয় প্রার্থীর সমর্থকেরা) কেন্দ্র দখল করে ভোট কাটছেন।’
কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, বেশ কয়েকজন যুবক তাঁর কাছ থেকে দুই হাজার ৫০০টি ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন। এই কেন্দ্রে দুই হাজার ৭৩৬টি ভোট রয়েছে বলে জানান তিনি।
নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইকলিল আজম, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী শরিফুল ইসলাম ও নারী ভাইস চেয়াম্যান প্রার্থী লুত্ফুর নাহার পৌরসভার সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। তাঁদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় ৫৩টি কেন্দ্র দখল করেছে। তাঁরা পুননির্বাচনের দাবি জানান।
জাপা সমর্থিত প্রার্থী তারেক আহমেদ আদেল কসবা সদরে তাঁর বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট কারচুপির অভিযোগে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।