Main Menu

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় আওয়ামীলগের প্রার্থী : জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যান। মহসিন-নিশাত ভাইস চেয়ারম্যান

+100%-

নিজস্ব প্রতিবেদক :::আগামী ৩১ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে প্রতিদ্বদ্বিতা করতে সম্পূর্ন গনতান্ত্রিক পন্থায় তৃণমূলের ভোটে আওয়ামীলীগের একক চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষনা করা হয়েছে।
প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য গত বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তনে তৃণমূলের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধান মন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও লেখক র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।   জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট সৈয়দ  এমদাদুল বারীর সভাপতিতে অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আল-মামুন সরকারের পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি, পৌর মেয়র ও  উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী মনোনয়ন কমিটির সদস্য সচিব মোঃ হেলাল উদ্দিন।
সভায় মোকতাদির চৌধুরী এমপি ও সমন্বয় কমিটির নেতারা প্রার্থীদেরকে দলের বৃহত্তর স্বার্থে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে একক প্রার্থী বাছাই করার কথা বললে  চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ হাবিবুল্লাহ বাহার ও জেলা মুজিব সেনার সভাপতি মোঃ শাহআলম সরকার নিজেদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন। বাকী চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ভোটের মাধ্যমে দলের একক চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছাই করতে দলীয় নেতাদের মতামত দেন। অপরদিকে ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীগনও তৃণমূলের ভোটের মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই করার জন্য দলীয় নেতাদের মতামত দেন। পরে প্রার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে তৃণমূলের নেতাদের ভোট গ্রহণ করা হয়।
নির্বাচনে সদর উপজেলা, শহর কমিটি, পৌর সভার ১২টি ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আওয়ামীলীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা আওয়ামীলীগের (শহরে বসবাসকারী) নেতারা তাদের ভোট প্রদান করেন।
তৃণমূলের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি শফিকুল আলম এম.এস.সি, যুগ্ম সম্পাদক তাজ মোহাম্মদ ইয়াছিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ হেলাল উদ্দিন, জেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম চৌধুরী ( খোকন), সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও মাছিহাতা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি জায়েদুল হক, ভাইস চেয়ারম্যান পদে  জেলা আওয়ামীলীগের অর্থ সম্পাদক মোঃ মহসিন মিয়া, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক শেখ মোঃ মহসিন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক মনির হোসেন এবং ওলামালীগ নেতা মাওলানা জাকির হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত ও যুগ্ম সম্পাদক শামীমা আক্তার রিনা প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। পরে প্রার্থী ও তাদের মনোনীত ব্যক্তিদের সম্মুখে সমন্বয় কমিটির নেতাদের তত্বাবধানে ভোট গননা করা হয়।
নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান পদে সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও মাছিহাতা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, ভাইস চেয়ারম্যান পদে জেলা আওয়ামীলীগের অর্থ সম্পাদক মোঃ মহসিন মিয়া ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদিকা অ্যাডভোকেট তাসলিমা সুলতানা নিশাত জয়ী হন।

দুপুর ১২টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। দুই শতাধিক ভোটার তাদের ভোট দেন। চেয়ারম্যান ও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচনে তৃণমূলের ভোটেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। চেয়ারম্যান পদে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: জাহাঙ্গীর আলম ২ ভোট বেশি পেয়ে দলের প্রার্থী মনোনীত হন। পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ ভোট বেশি পেয়ে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প সম্পাদক মো: মহসীন। তিনি পেয়েছেন ৭৫ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দলের প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম। তিনি পেয়েছেন ১৩৩ ভোট।
পরে প্রধান অতিথি প্রধান মন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও লেখক র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এম.পি বিজয়ী প্রার্থীদের নাম ঘোষনা করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোকতাদির চৌধুরী এম.পি বলেন,উপজেলা পরিষদের নির্বাচন আওয়ামীলীগের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। আপনারা ভোটের মাধ্যমে আপনাদের প্রার্থী মনোনীত করেছেন। ঐক্যবদ্ধভাবে দলের প্রার্থীদের পক্ষে সবাইকে মাঠে নামতে হবে। সদর উপজেলায় যদি দলীয় প্রার্থী বিজয়ী হতে না পারে তাহলে এলাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড বাঁধাগ্রস্ত হবে। তিনি দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মীকে দলের প্রাথীর পক্ষে কাজ করতে আহবান জানান।
তৃণমূলের ভোট গ্রহণ চলাকালে জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট এমদাদুল বারী, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পৌর মেয়র মোঃ হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমানুল হক সেন্টু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আল-মামুন সরকার, জাতীয় পরিষদ সদস্য শেখ কুতুব হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, মজিবুর রহমান বাবুল, বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ জহিরুল ইসলাম ভূইয়া, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক শেখ মোঃ আনার, মজিবুর রহমান বাবুলসহ জেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে ভোটগ্রহণ শেষে ফল ঘোষণায় অস্বচ্ছতার অভিযোগে ভোট কেন্দ্রের বাইরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আওয়ামীলগের  শিল্প বিষয়ক সম্পাদক শেখ মোঃ মহসিন। বিকেলে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল বের করে আওয়ামী লীগের একাংশ যার নেতৃত্ব দেয় তাজ মো: ইয়াছিন।  সদর হাসপাতালের সামনে সমাবেশও করে তারা। পরে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের বিরাসারে কিছু সময়ের জন্য অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা।বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, টাকার বিনিময়ে চেয়ারম্যান পদে ভোট কেনা হয়েছে। যিনি চেয়ারম্যান পদের জন্য দলের সমর্থন পেয়েছেন তাঁর বৈধ আয়ের উৎস সম্পর্কেও মানুষ জানে না। আওয়ামীলগের কোন রাজনৈতিক কমসূচীতেও তাকে দেখা যায়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের এক শতাংশ মানুষ ও তাকে চেনে না।  ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সমস্যা সম্পকে কিছুই সে জানে না। এ ধরনের ব্যক্তিকে আর যাই হোক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার কোন উন্নয়ন হবে না। ওই ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী করা হলে ভরাডুবি নিশ্চিত।

উল্লেখ্য এক মাসেরও বেশী সময়  ধরে দলের মনোনয়ন পেতে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা মাঠ চষে বেড়ান। ঘুরে বেড়ান তৃনমুলের ভোটারদের দ্বারে-দ্বারে। ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালান। পাল্লা দিয়ে ছুটেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।






Shares