একুশে আখাউড়া সীমান্ত খোলা হয়নি : হতাশ ২০ হাজার মানুষ
শামীম উন বাছির : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্তে এ বছর অমর একুশ উদযাপিত হয়নি। একুশ উদযাপনের সুযোগে ভারতে যাওয়ার আশায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর এলাকায় জড়ো হয়েছিলেন হাজার বিশেক মানুষ। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের অনীহার কারণে সীমান্ত এলাকায় একুশ উদযাপন না হওয়ায় বিষন্ন মনেই ফিরতে হয়েছে তাদেরকে। তবে আগামী বছর যেন আগের মতোই সীমান্তে অমর একুশ উদযাপন করা হয় সেই দাবিই জানিয়েছেন তারা।
গত শুক্রবার সকালে সরজমিনে আখাউড়া স্থলবন্দর গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার মানুষের জটলা। বিজিবি ও পুলিশ তাদেরকে শত অনুরোধ করে সরাতে পারছেন না। তাঁরা ভারতে যাওয়ার দাবি তুলেন। এক পর্যায়ে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা দফায় দফায় লাঠিচার্জ করেন।
আগতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের বেশিরভাগই ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছেন। এক পর্যায়ে প্রায় বিশ হাজার লোকের সমাগম ঘটে স্থলবন্দর এলাকায়।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ খুরশীদ শাহরিয়র, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অং সা থোয়াই লোকজনকে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করেন। বেশ কয়েকবার এ ধরণের মাইকিং করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলতে থাকে এ অবস্থা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অনীহার কারণে এ বছর আখাউড়া সীমান্তের নো-ম্যানসল্যান্ডে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের কোনো অনুষ্ঠান হয় নি। নিরাপাত্তার ‘অজুহাতে’ সে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় অনুষ্ঠান না করার জন্য ত্রিপুরা রাজ্য সরকারকে চিঠি দেয়। বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা এ নিয়ে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বললেও কোনো ফল হয় নি।
আখাউড়ার রুটি গ্রামের চিত্ত শীল বলেন, মুড়ি ও মোয়া নিয়ে ভাগ্নেকে দেখার জন্য যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এসে দেখি এবার ভারতে যেতে দেওয়া হবে না। ভারত যাব বলে এক বছর ধরেই অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু এখন না যেতে পেরে মনে খুব কষ্ট লাগছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস আবৃত্তি সংগঠনের পরিচালক মোঃ মনির হোসেন বলেন, ‘আমরা দু’বছর ধরেই ২১ ফেব্রুয়ারিতে দু’দেশের মানুষের মিলন মেলার আয়োজন করি। কিন্তু এবার ভারতীয়দের অনীহায় তা করা হয় নি। তবে দু’দেশের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় করতে এ ধরণের আয়োজন খুবই জরুরি।