Main Menu

কোটা পদ্ধতি পরীক্ষা-নিরীক্ষার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

+100%-

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি পরীক্ষা-নিরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই নির্দেশ দেয়া হয় বলে বৈঠক শেষে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম।

তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি জানান, প্রসঙ্গটি মন্ত্রিসভার আলোচ্যসূচিতে ছিল না। কিন্তু একজন মন্ত্রী বিষয়টি তোলার পর এ নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

কোটা সংস্কারের দাবিতে পদযাত্রা কর্মসূচি শেষে রবিবার দুপুরের পর রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। পাঁচ ঘণ্টা সেখানে অবস্থান নিয়ে নগরীতে ভোগান্তি তৈরির পর তাদেরকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। এরপর সংঘর্ষ ছড়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়।

রাতভর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর দ্বিতীয় দিন দেশের প্রায় সব কটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বাদ দিয়ে আন্দোলনে নেমেছে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে মন্ত্রিসভায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আজকে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে কোটা পদ্ধতি পরীক্ষা নিরীক্ষার বিষয় আছে। এটা নিয়ে মন্ত্রিসভায় কিছুটা অনির্ধারিত আলোচনা হয়েছে।’

‘তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হলো এটার স্থায়ী স্টেইক হোল্ডার। তারা বিষয়টা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখবে। দেখে এটা অবহিত করবে।’

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কোন নির্দেশনা দিয়েছেন কি না এমন প্রশ্নে সচিব বলেন, ‘এটা ইনফরমাল আলোচনা তো, ইনফরমালভাবে ধরুন’- এভাবে বলেই তিনি থেমে যান।

বাংলাদেশে বর্তমানে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কোটা রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা পারিবারের জন্য ৩০ শতাংশ। এর বাইরে ১০ শতাংশ নারী কোটা, পশ্চাদপদ জেলার জন্য ১০ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য পাঁচ শতাংশ এবং এক শতাংশ কোটা আছে প্রতিবন্ধীদের জন্য।

বাংলাদেশে নানা সময় কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকারের শেষ বছরে আন্দোলন হয়েছে। শুরুর দিকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের দাবি সামনে নিয়ে এসেছিল আন্দোলনকারীরা। তবে এ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার পর চলতি বছর এই দাবিটির বদলে কোটা সংস্কারের দাবি তুলছে আন্দোলনকারীরা। আর তারা কোটা কমিয়ে ১০ শতাংশে নিয়ে আসার কথা বলছে।

শিক্ষার্থীরা যে পাঁচটি দাবি জানাচ্ছে, তার একটি অবশ্য সরকার মেনে নিয়েছে। সেটি হলো, কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সাধারণ চাকরিপ্রার্থীদের থেকে নিয়োগ দেয়া হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বিগত তিনটি বিসিএস এ মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত ছিল, মুক্তিযোদ্ধা বা অন্যান্য কোটা যদি কোটা সংশ্লিষ্টদের দিয়ে পূরণ না হয় তাহলে সেটা মেধা তালিকা থেকে যারা শীর্ষে অবস্থান করবে তাদের দিয়ে পূরণ করা হবে। এবং সেটিই করা হয়েছে।’

এই সিদ্ধান্তের ফলে ৩৩তম বিসিএসএ সাধারণ মেধা তালিকা থেকে ৭৭.৪০ শতাংশ, ৩৫ তম বিসিএসে ৬৭.৪৯ শতাংশ এবং ৩৬ তম বিসিএসে ৭০.৩৮ শতাংশ পদ পূরণ হয়েছে।

‘আসলে এখানে কোটার মাধ্যমে মেধা কখনও অবহেলিত হয় না’-এমন মন্তব্য করে সচিব বলেন, ‘যেমন ধরুন মহিলা কোটায় যারা থাকবে তাদের মধ্যে যারা মেধায় এগিয়ে তারাই পাবে। এমন নয় যে তাদের মধ্যে মেধার কোন প্রতিযোগিতা হয় না। ফলে তারা অবহেলিত হচ্ছে না। প্রতিটি সেক্টরেই মেধায় যারা অগ্রসর তারাই আসবে। কোটার দ্বারা কারও কোন মেধার ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।’

অন্য এক প্রশ্নে সচিব বলেন, ‘কোটায় পূরণ না হলে মেধায় যারা এগিয়ে থাকবে তাদের মধ্যে থেকে নেয়া হবে। এটাই তো একটি সংস্কার।’

‘কথা হচ্ছে সংবিধানে বলা হয়েছে, মেধায় যারা অগ্রসর তাদেরকে সামনে নিয়ে আসার জন্য। তবে কোটার কারণে যারা মেধাবী তারা বঞ্চিত হয়নি।’

‘দেখুন শুধুমাত্র মেধায় নিলে যারা অনগ্রসর জেলার জন্য যে জেলা কোটা রাখা হয়েছে তারা বঞ্চিত হবে। এটা তো বুঝতে হবে। তখন ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠি পাবে না। তবে আমরা বিগত মন্ত্রিপরিষদ সভায় যে সংশোধনী আনা হয়েছে তাতেই তো মেধাবীরা অনেক বেশি সুবিধা পাচ্ছে।’






Shares