Main Menu

ইতিহাসের পাতায় বাংলাদেশ

+100%-

ঘড়ির কাঁটা তখন ২টা ১৪ মিনিট (বাংলাদেশ সময়)। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারে সবাই তাকিয়ে আছে ডিজিটাল ঘড়ির কাউন্টডাউনের দিকে। কাউন্টডাউনের সময় যখন ০০ এ সময় ফ্যালকন-৯ প্রস্তুত নেয় মহাকাশ যাত্রার। এর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ভূমি থেকে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ বাহী এই মহাকাশযানটি। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের ৫৭ তম দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিক হলো বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ সময় ১১ মে শুক্রবার দিবাগত রাত ২টায় যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হয়।

এর আগে ১০ মে বৃহস্পতিবার উৎক্ষেপণের ৫৮ সেকেন্ড আগে উৎক্ষেপণ স্থগিত করা হয় বঙ্গবন্ধু-১ বহনকারী ফ্যালকন-৯ এর। তবে ১১মে দ্বিতীয় বারের প্রচেষ্টায় এর উৎক্ষেপণ সফল হয়। এছাড়া এর আগে ৪মে বঙ্গবন্ধু-১-এর উৎক্ষেপণ পূর্ববর্তী পরীক্ষা চালায় যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স।

উড্ডয়নের পরের ৩৩ মিনিট ৩৮ সেকেন্ড

উড্ডয়নের ২ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের মাথায় প্রথম স্টেজের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাবে। এর দুই সেকেন্ডের মাথায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্টেজ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ২ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডে দ্বিতীয় স্টেজের ইঞ্জিন চালু হবে এবং নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে থাকবে। ৮ মিনিট ১০ সেকেন্ডের মধ্যে প্রথম স্টেজ ল্যান্ডিং স্টেশনে ফিরে আসবে। ৮ মিনিট ১৯ সেকেন্ড সময়ে দ্বিতীয় স্টেজের ইঞ্জিন বন্ধ হবে এবং ২৭ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডে পুনরায় সেটি চালু হবে। উড্ডয়নের ২৮ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডে দ্বিতীয় স্টেজের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে উড্ডয়নের ৩৩ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের মাথায় জিওস্টেশনারি ট্রান্সফার কক্ষপথে পৌঁছাবে বঙ্গবন্ধু-১।

ফ্যালকন-৯ রকেট ৩.৫ মেট্রিক টন ওজনের বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটটি মহাকাশে নিয়ে যাবে। মহাকাশে নির্দিষ্ট স্লটে এটি পৌঁছতে ৮ দিন সময় লাগবে। মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের অবস্থান হবে ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে।

স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যে সেবা পাওয়া যাবে

ডিজিটাল ডিভাইড দূর করতে সবচেয়ে অধিকতর কার্যকরী হবে স্যাটেলাইটি।
> বর্তমানে আমাদের দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলগুলো অন্য দেশের স্যাটেলাইট থেকে কানেকটিভিটি কিনছে। চ্যানেলগুলো এই সেবা পাবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে।
> দুর্গম অঞ্চলে সাশ্রয়ী কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে সর্বাধিক ভূমিকা রাখবে।
> ডিটিইএচ বা বিনোদনের ক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার পথ সুগম হবে।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে রয়েছে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার। এর মধ্যে ২৬টি কেইউ-ব্যান্ড ও ১৪টি সি-ব্যান্ডের। ওই ট্রান্সপন্ডারগুলোর মধ্যে প্রাথমিকভাবে ২০টি ব্যবহার করবে বাংলাদেশ। এই কক্ষপথ থেকে বাংলাদেশ ছাড়াও সার্কভুক্ত সব দেশ, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, মিয়ানমার, তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও কাজাখস্তানের কিছু অংশ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের আওতায় আসবে। তবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে এই স্যাটেলাইট দিয়ে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে না।

যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে

এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হলেও স্যাটেলাইটটি পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় ২০-২১ দিন সময় লাগবে। নিয়ন্ত্রণের জন্য গাজীপুরের জয়দেবপুরে এবং রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় ইতোমধ্যে দুটি গ্রাউন্ড স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। মূলত গাজীপুরের গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে এটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে।






Shares