Main Menu

কোল্লাপাথর গেষ্ট হাউজে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ

+100%-

খ.ম.হারুনুর রশীদ ঢালী,কসবা : মুক্তিযুদ্ধের পবিত্র ভূমি হিসেবে খ্যাত কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের কোল্লাপাথর সমাধীস্থলে জেলা পরিষদের ডাক বাংলোতে নানা ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে জমিদানকারী মৃত আব্দুল মান্নানের পুত্র’র সঙ্গীদ্বয় ও আব্দুল করিমকে দায়ী করেছেন এলাকার শতশত নারী পুরুষ। তারা সমাধীস্থলের পবিত্রতা রক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট কৃতপক্ষ মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় এবং আইন,বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি’র হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় কোল্লাপাথরে নির্মিত জেলা পরিষদের গেস্ট হাউজটি অপরুপ কারুকার্য খচিত হলেও আবদুল করিম এতে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে এর সৌন্দর্য বিনষ্ট করছে। দুটি বিশাল বেড রুম,ড্রইং রুম,প্রদর্শনী রুপসহ বেশ কটি বাড়ান্দা, পৃথক  দুটি কিচেন রুম রয়েছে এখানে। একমাত্র কর্মচারী জমিদানকারী আব্দুল মান্নানের নাতি এবং আব্দুল করিমের পুত্র মাহবুবুর রহমান কেয়ারটেকার হিসেবে নিয়োগকৃত হলেও সে ঢাকায় অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করে। মাহবুব প্রতি মাস শেষে জেলা পরিষদে এসে বেতন উওোলন করেন। এখানে ইয়াছিন (প্রকাশ নাতি) নামে সিলেটের একটি ছেলে বসবাস করেন আব্দুল করিমের বডিগার্ড হিসেবে। ১৫/১৬ বছরের ইয়াছিন নিজেই করিমের সকল অপকর্মের সহযোগি। বিগত ৩/৪ বছরে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে এসে রাতযাপন করলেও করিম এসব রেজিস্টার রেকর্ডে না এনে ওই টাকা নিজেই আত্বসাৎ করে। রেকর্ডপত্র থেকে জানা যায় বুড়িচং উপজেলার সাব রেজিস্টার রওশন আরা তার এক সহকর্মী মহিলাসহ ১৬ ও ১৭-০২-২০১৪ইং  তারিখে অবস্থান করে পাঁচশত টাকা ভাড়া প্রদান করেন। এ বছরই ২২ মার্চ ৩ জন ও ৩১ মার্চ ২জন পরিদর্শনকারী রাত যাপন করে সর্বমোট এক হাজার টাকা ভাড়া প্রদান রেন। ২০১৩ সালে ফরহাদ ও তাহমিনা নামক দুই প্রেমিক যুগলকে এখানে রাত যাপন করতে দিলে তারা পুলিশের কাছে গ্রেফতার হন। করিম এদের নাম রেজিস্টারে উঠালেও ভাড়া রাখেননি কারণ হিসেবে জানান; রাতে পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করায় তাদের কাছ থেকে ভাড়া রাখতে পারেনি। আব্দুল রহিম নামক এক অভিযোগকারী বলেন;মাত্র দুই মাস পূর্বেও পুলিশ গোপন সংবাদের ভিওিতে দুইজন প্রেমিক যুগলকে রাত ২টায় গ্রেফতার করেছিল। তিনি জানান ইয়াছিনের মাধ্যমে করিম মদ,গাঁজ,ফেন্সিডিল,হেরোইন বিক্রি করেন।তিনি বলেন;প্রায় রাতেই এলাকার ও বাহিরের কতিপয় সস্ত্রাসী এখানে বসে মদ,গাঁজা,হিরোইন,ফেন্সিডিল ব্যবহার সহ নেশা করে। প্রতিদিন পিকনিকে আসা পার্টি থেকে করিম ১০০ থেকে১৫০০ টাকা আদায় করে। করিমের ছেলে সাবিরসহ ৪ যুবক কিছুদিন পূর্বে একটি মেয়েকে ধর্ষন করে তার গয়নাগাটি রেখে দিলেও কেউ মুখ খোলেনি প্রাণের ভয়ে। যুবকদল এই দৃশ্যপট ভিডিও করেছিল। পরে সোনার গহনার টাকা পয়সা নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালন্য সৃষ্টি হলে এরা এই ভিডিও চিত্র ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়। গ্রামের সোহানুর রহমান,রাজন মিয়া,মফিজ মিয়া জানান;এখানে মদ,গাঁজা,ফেন্সিডিল বিক্রি করা হয় ইয়াছিনের মাধ্যমে। করিমের ছোট ছেলে সাবির রহমান রেস্ট হাউজের ৩টি ফ্যান,৭/৮টি চেয়ার বিক্রি করে দিয়েছে। কোল্লাপাথর সমাধীস্থল প্রাঙ্গনে অবস্থিত পুকুরটি খননের জন্য প্রায় ৫০০ টনগম বরাদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্ত ওই পুকুর খননের নামে সংস্কার করলেও তা সরকারের নামে করিম এ যাবত দলিল করে দেননি বলেও অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছক দোকানিরা জানান;এখানে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের আড্ডা থাকে। কখনো কখনো  গোলাগুলি হয়। গত বছর কুল্লাপাথরে সিএনজি চালককে খুন করা হয়।একই এলাকায় আব্দুর রশিদ,আবুল বাশার,জাহাঙ্গীর মাস্টার জানান;প্রকৃত অর্থে করিম কোন মুক্তিযোদ্ধাই না। কসবা সদর চড়নাল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রব ফিরোজ বলেন; করিম ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৯২ সালে বেগম জিয়া কোল্লাপাথর এসেছিলেন।করিম বিএনপিকে খুশী করার জন্য সাবসেক্টর কমান্ডার যিনি কোল্লাপাথর সমাধীস্থলের গোড়াপন্তনকারী কর্ণেল এ,এইচ,এম,গাফফারের নাম ফলক ভেঙ্গে সরিয়ে ফেলেন। তিনি বলেন;এই সাব সেক্টরে আমি যুদ্ধ করেছি,আমি তাকে কখনোই মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করতে দেখিনি। সে মিথ্যা বাদী। এ দিকে এ,কে আজাদ নামে একজন সমাজ কর্মী জানান;করিমের বাড়িতে কুমিল্লা নোটারী পাবলিক একটি পাকা ঘর নির্মান করে দিয়েছে। করিম এটা কখনো স্বীকার করে  না। বরং তিনি নোটারী পাবলিকের নাম ফলক মুছে ফেলেছে। সাবরেজিস্টার রওশন আরা গেস্ট হাউজে ফ্রিজ,টিভি,চেয়ার অনুদান দিলেও তিনি দাবী করেন এ গুলো তাকে দেয়া হয়েছে। এ সমস্ত অপকর্মের ব্যাপারে সরেজমিনে গিয়ে আব্দুল করিমের সাথে রেস্ট হাউজের বিছনায় খালি গায়ে বসে বার বার তার বক্তব্য বিশ্বাস করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান। তার সামনেই রেস্ট হাউজে বসে এলাকার লোকজন তার অপকর্মের ঘটনা বর্ণনা করেন। আব্দুল করিম এই সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা,বানোয়াট ,ভিওিহীন বলে জোর গলায় দাবী করেন। কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জালাল সাইফুর রহমানের সাথে এ বিষয়ে কথা বললে তিনি করিমের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন;এ সমস্ত বিষয়ে অচিরেই প্রশাসন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।  
কোল্লাপাথর এলাকাসহ কসবার সচেতন মানুষের দাবী অবিলম্বে গেস্ট হাউজটিকে জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণে নেয়া হোক।






Shares