খ.ম.হারুনুর রশীদ ঢালী : গত নির্বাচনে যিনি নির্বাচিত হয়ে সংসদ সদস্য হয়েছেন তারা এবারো দলের মনোনয়ন পাবেন, এটাই স্বাভাবিক। কারণ তার রয়েছে নির্বাচনের অভিজ্ঞতা। কিন্তু কপাল পুড়ছে কসবা-আখাউড়ার আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপির বলে সারা কসবা-আখাউড়ায় মাঠে ময়দানে এই আলোচনার তুফান বয়ে বেড়াচ্ছে। পরিবারতন্ত্র, দুর্নীতি, দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোন্দলসহ বিতর্কিত হওয়ায় দলের টিকিট তার প্রায় অনিশ্চিত। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে ৩০০ আসনে কয়েক দফা সরকারি ও বেসরকারি জরিপ, তৃণমূলের মতামত গ্রহণ এবং দলীয় মনোনয়নপত্র বিতরণ ও জমা নেয়ার কাজ শেষ করেছে মক্ষতাসীন আওয়ামী লীগ। চলছে আগামী নির্বাচনের প্রার্থী নির্বাচনের কাজ। বিতর্কিতদের জায়গায় খোঁজা হচ্ছে তরুণ, ত্যাগী, সৎ নেতাদের। তবে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া হবে তৃণমূল নেতাদের মতামতকে। পাঁচবছর মতায় থেকেও সাংগঠনিকসহ সরকারের উন্নয়নমূলক কাজে নিষ্ক্রিয়, এমন নেতাদের ভাগ্যেও এবার টিকিট জোটা দুষ্কর। আওয়ামী লীগের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, পারিবারতন্ত্র ও দলীয়কোন্দল এবং বির্তকের কারণে এবার এই সব এমপিদের মনোনয়ন দেয়া হবে না। এদের তালিকায় রয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কয়েকজন বলে বিশেষ সূত্রটি জানান। এছাড়া আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কামিটি সূত্রে প্রাপ্ত তালিকা অনুযায়ী আগামী নির্বাচনে বর্তমান সংসদ সদস্যদের বাদ দিয়ে নতুন করে নতুন মুখদের দেওয়া হবে। সেই ভাগ্যবানদের নামের তালিকা নাকি প্রধান মন্দ্রীর লেপটপে। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ কসবা-আখাউড়া আসনে এবার নতুন মুখ হিসেবে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রধান আইনজিবী এডভোকেট আনিসুল হক মনোনয়ন ৮০ভাগ নিশ্চিত বলে তৃর্ণমূল আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা জানান। তাই কসবা-আখাউড়া মাঠে ময়দানে গতকাল থেকে “আনিস ভাইয়ের সালাম নিন নৌকায় ভোট দিন ব্যানার, পোষ্টার” সরগম হয়ে গেছে। রাস্তা, ঘাটে, বাজারে, টাঙ্গানো ব্যানার শত শত জনগণ নতুন মুখের আগমনের সংবাদে ভিড় জমাচ্ছে এক নজর দেখার জন্য। সরেজমিনে প্রাপ্ত তথ্য সূত্রে জানা আনিসের আগমনের সংবাদ সর্বদলীয় ভাবে গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেছেন। আবার কয়েক স্থানে আনিসের আগমনে মিষ্টি বিতরণ করার সংবাদ পাওয়া গেছে। আবার কেউ বলছেন বর্তমান এমপি শাহ আলমের নিজের হাতে গড়া মাঠ কিন্ত পরিবারতন্ত্র, দুর্নীতি, দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোন্দলসহ বিতর্কিত হওয়ায় ত্যাগি দলীয় নেতা, সমর্থক ও বর্তমান জনগণ মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন আর এডভোকেট আনিসুল হক নতুন মুখ হলেও তার চিন্তা চেতনা, পারিবারিক মর্যাদা, কেন্দ্রীয় দলীয় মতায়, দলের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন পাবে। আর পরিবারতন্ত্র, দুর্নীতি, দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোন্দলসহ বিতর্কিত যাওয়ার প্রশ্নই উঠবে না বলে এলাকায় এলাকায় কথা হচ্ছে বলে বিশেষ সূত্রটি জানান। এদিকে আজ ২৪ নভেম্বর দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন সম্ভাব্য প্রার্থীদের চূড়ান্ত দিক নিদের্শনা দেবেন বলে জানা গেছে। আর নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করলেই দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করবে আওয়ামী লীগ। দলের মনোনয়ন বোর্ডের সঙ্গে জড়িত প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টামণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, ৩শ আসনেই প্রার্থী তালিকা প্রায় চূড়ান্ত। তফসিল ঘোষণা হলেই প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, ‘দশম জাতীয় নির্বাচনে দলের অনেক প্রার্থী পরিবর্তন হবে। বিতর্কিতরা দলের মনোনয়ন পাবেন না। তাদের জায়গায় নতুন মুখ আসবে। আসনওয়ারী প্রার্থীদের সাথে আলাপ করে দেখা যায়, যারা মনোনয়ন পত্র ক্রয় করেছেন তাদের অধিকাংশই এখন নিজের নির্বাচনী এলাকা ছেড়ে ঢাকায় অবস্থান করছেন। ভোটের আগে মাঠের লড়াইয়ে তারা মেতে উঠেছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের ঢাকার বাসা বাড়ি এবং অফিসে এ সকল সম্ভাব্য প্রার্থীদের পদচারণায় এখন মুখর হয়ে উঠছে। লবিং গ্রুপিং চলছে সমানতালে। এখন দেখার বিষয় কার ভাগ্যে জোটে দলীয় মনোনয়ন নামের সোনার হরিণটি। বিশেষ সূত্রটি জানান, দলের মনোনয়ন পাওয়ার আশায় প্রার্থীর প্রভাব শালীনেতা ও কতিপয় সমর্থকরা গত ১৫ দিন ধরে কখন সকাল আর কখন রাত হয় জানি না। পড়ে আছি ঢাকায়। সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। নিয়ত করছি পছন্দের প্রার্থীর মনোনয়ন না নিয়ে এলাকায় ফিরব না। মনোয়ন পাওয়ার আশায় লবিং করছে দিন রাত। আর ২৪ নভেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাশিদের আজ দিন পারিয়ে কাল রাত। কে পাবে কসবা-আখাউড়া আসনে মনোনয়ন নামের সোনার হরিণকে এডভোকেট শাহ আলম না এডভোকেট আনিসুল হক? |