প্রদীপ প্রজ্বালনসহ নানা কর্মসূচিতে আখাউড়া মুক্ত দিসব পালিত
প্রদীপ প্রজ্বালন ও ব্লাক আউটসহ নানা কর্মসূচিতে আখাউড়া মুক্ত দিসব পালিত হয়েছে । দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্বালন করা হয়েছে। আখাউড়া উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের আয়োজনে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক পৌর মুক্তমঞ্চে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তাকজিল খলিফা কাজল। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা, আখাউড়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সৈয়দ জমশিদ শাহ, মুক্তিযোদ্ধা বাহার মালদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন বাবুল, যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মমিন বাবুল, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক যুবরাজ শাহ রাসেল প্রমুখ। এ সময় মোমবাতির আলো প্রজ্বালন ও পৌর এলাকার কিছু অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিলে পৌর মুক্তমঞ্চ আলোকিত হয়ে উঠে।
মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য অনুযায়ী মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আখাউড়া ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম রণাঙ্গন। ভারত সীমান্তবর্তী হওয়ায় মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে এ এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়। অগ্নিঝরা ৭১ এর ২৩ আগস্ট পাকিস্তানি বাহিনী আখাউড়া উপজেলার গঙ্গাসাগরে গণহত্যা চালায়। ওই দিন একই গ্রামের ২৭ জন সহ ৩৩ জনকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে। এরপর ১৮ এপ্রিল আখাউড়া রণাঙ্গণে পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে শহীদ হন বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল।
পরবর্তী সময়ে ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর ও ১ ডিসেম্বর উপজেলার আজমপুর ও রাজাপুর এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর তুমুল যুদ্ধ হয়। পরে ৩ ডিসেম্বর হওয়া যুদ্ধে দখলদার বাহিনীর ১১ সেনা নিহত ও মুক্তিবাহিনীর ২ জন শহীদ হন।
পরে ৪ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী মিলে আখাউড়া আক্রমণ করে। ওই দিন আজমপুরে শহীদ হন লেফটেন্যান্ট ইবনে ফজল বদিউজ্জামান। পরের দিন ৫ ডিসেম্বর সারাদিন ও রাত যুদ্ধের পর ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া শত্রুমুক্ত হয়। আখাউড়া মুক্ত করার পর মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের প্রধান জহুর আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে নিলু মিয়া, নাজির হোসেন, কামাখ্যা রঞ্জন ঘোষ, দেওয়ান খান খাদেমসহ অনেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কমান্ড’র উদ্যোগে কর্মসূচি নেওয়া হয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিশৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ ও সকাল ১০টায় আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।