আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রহস্যময়ভাবে কম দামে শুঁটকি আমদানি



প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে কম দামে শুঁটকি আমদানি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই এসব শুঁটকি বন্দর থেকে খালাস করে নেওয়া হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে কম দাম পাওয়ায় এসব শুঁটকি আনা হয়েছে। এছাড়া সব ধরণের নিয়ম মেনে ও কর দিয়েই শুঁটকি আমদানি করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের সাফাই গেয়েছেন স্থল বন্দরের সহকারি কমিশনার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫০ টন শুঁটকির একটি চালান গত ১১ মে থেকে আখাউড়া স্থলবন্দরে আসতে শুরু করে। এর আমদানিকারক রাফিদ এন্টারপ্রাইজ ও ইমাম ব্রাদার্স সিএন্ডএফ এজেন্ট। গত শনিবার থেকে এসব শুঁটকি বন্দর থেকে খালাস শুরু হয়। এসব শুঁটকির মধ্যে রয়েছে লইট্টা, বাসপাতি, কেচকি ইত্যাদি। স্থানীয় বাজারে এসব শুঁটকির দাম প্রতি কেজি চারশ’ থেকে ছয়শ’ টাকা। ভারতেও প্রায় একই দামে ওই শুঁটকি বিক্রি হয়। অথচ মাত্র প্রতিটন ছয়শ’ ডলার অর্থাৎ প্রতি কেজি মাত্র ৪৮ টাকা দরে শুঁটকি আমদানি করা হয়েছে।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানায়, ভারত থেকে ছয়শ’ ডলারে আনা হলেও স্থানীয়ভাবে নয়শ’ ডলার প্রতিটন হিসেব ধরে কর আদায় করা হয়েছে। দেশের অন্যান্য স্থলবন্দরের সঙ্গে সংগতি রেখেই এ দর নির্ধারণ করা হয়। সব মিলিয়ে সরকার প্রায় ২২ লাখ টাকা কর পেয়েছে।
এখানে উল্লেখ্য, ভারতীয়রা বাংলাদেশ থেকে প্রতিটন আড়াই হাজার ডলারে শুঁটকি আমদানি করে। ভারতের স্থানীয় বাজারে প্রতি টন শুঁটকি বিক্রি হয় তিন-সাড়ে তিন হাজার ডলারে। অথচ ভারতীয়রাই কিভাবে এত কম দামে শুঁটকি বিক্রি করল তা বোধগম্য নয়।
এ ব্যাপারে আমদানি-রপ্তানিকারক রাফিদ এন্টারপ্রাইজের মালিক মোঃ রাজীব ভূঁইয়া বলেন, সস্তা দরে পাওয়া গেছে বলেই ভারত থেকে শুঁটকি আনা হয়েছে। তবে খুচরা হিসেবে বিক্রি করার সময় এত কম দাম থাকবে না। কেননা কর দেওয়া, পরিবহন খরচ মিটিয়ে এমনিতেই এর দাম বেড়ে যাবে। আর আমরা এনেছি টন হিসেবে। শুঁটকি বিক্রি হবে কেজি-গ্রাম হিসেবে।
সিএন্ডএফ এজেন্ট ইমাম ব্রাদার্সের মালিক মোঃ আব্বাস উদ্দিন বলেন, আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি শুঁটকি আমদানিতে কোনো ধরণের অনিয়ম হয়নি। সব ধরনের নিয়ম মেনেই শুঁটকি আমদানি করা হয়েছে। মুনাফার জন্য নয়, এ বন্দরকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে শুঁটকি আমদানি করা হয়েছে। শুঁটকি আমদানি করে যে পরিমাণ কর দেওয়া হয়েছে তা অতীতে কখনো হয় নি।
এ ব্যাপারে আখাউড়া স্থলবন্দর কাস্টমস এর সহকারি কমিশনার মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, অন্যান্য স্থলবন্দরের সঙ্গে সংগতি রেখে শুঁটকির দর নির্ধারণ করে কর আদায় করেছি। তবে ভারতীয়রা কত দামে শুঁটকি বিক্রি করল তা আমাদের জানার বিষয় নয়। সবচেয়ে বড় কথা হল এ শুঁটকি আমদানির মধ্য দিয়ে সরকার প্রায় ২৩ লাখ টাকা কর পাচ্ছে।