Main Menu

আখাউড়ায় খাল দখলের মহোৎসব

+100%-

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার কালন্দী খাল দখলদারদের ছোবলে সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। খালের দুই পাড়ে দখলের মহোৎসব চললেও যেনো দেখার কেউ নেই।

উজানের পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট কালন্দি খালটি আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশ সীমানায় প্রবেশ করে। খালটি আখাউড়া-আগরতলা সড়কের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পৌরশহরের সড়ক বাজারের ওপর দিয়ে তিতাস নদীতে গিয়ে মিলিত হয়েছে।

আখাউড়া উপজেলা ভূমি অফিস জানায়, খালটি ৩৯ দাগে ৬৪ শতক, ১৪৯ দাগে ৪ একর ৯ শতক, ২৯৫ দাগে ৩০ শতক ও ৩৭৫ দাগে ৬৫ শতক জায়গার ওপর অবস্থান।

এক সময় উজানের বিশাল জলধারা প্রবাহিত থাকলেও দখলদারদের করাল গ্রাসে খালটি এখন মৃতপ্রায়। আখাউড়া পৌরশহরের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র এই খালটির অস্থিত্ব বিলীন হতে যাওয়ায় জনস্বাস্থ্যও এখন অনেকটা হুমকির মধ্যে।

৯০ দশকের পর থেকেই খালটির ওপরে দখলদারদের দৃষ্টি পড়ে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে দখলের পরিধি। এখন খালের দুই পাড়ই দখলে চলে গেছে। দখলদাররা ওই জায়গায় পাকা দোকান-ঘরসহ বহুতল ভবন গড়ে তুলেছেন। এমনকি খালের উপর নির্মিত ব্রিজের দুই পাশও দখল করে নিয়েছে তারা।

দখলদারদের বেশি থাবা পড়ে খালের ৩৭৫ ও ১৪৯ দাগের ওপর। এই দুই দাগের জায়গা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত।

স্থানীয়রা জানান, দখলের পুরো প্রক্রিয়াটিই চলে রাতের আঁধারে। প্রথমে বাঁশ, টিনের চাল দিয়ে মাঁচা বেধে জায়গাটি দখলে নেন। কিছুদিন পর টিনের বেড়ার আড়ালে পাকা দালান গড়ে তোলেন। দখল প্রক্রিয়া চলাকালে স্থানীয় প্রশাসন যেন অদৃষ্ট কারণেই থাকেন নীরব।

এছাড়া, এর অন্যপাশে যাদের বাড়িঘর রয়েছে তারাও দিনের পর দিন মাটি ও অবর্জনা ফেলে কৃত্রিম ভাবে খাল দখল করছে।

তবে ১/১১ এর সময় দখল থমকে দাঁড়ায়। এসময় খালের উপর অবৈধভাবে স্থাপিত কিছু পাকা স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়। এতে দখল প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু পরে আবার শুরু হয় খাল দখলের নগ্ন প্রতিযোগিতা।

দখলদাররা বেশির ভাগই এলাকার প্রভাবশালী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা। তাদের মধ্যে রাজনৈতিক মতভেদ থাকলেও দখলের ব্যাপারে তারা সবাই একাট্টা।

আখাউড়া উপজেলা ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সারোয়ার আলম বাংলানিউজকে জানান, খালের জায়গা খাস হিসাবে রেকর্ডভুক্ত না হওয়ায় আমরা দখল প্রক্রিয়ায় বাধা দিতে পারছি না। তবে একাধিক দখলবাজের বিরুদ্ধে আমরা দেওয়ানি মামলা দিয়েছি।

দখলদারা খালের জায়গা বিএস ও আরএস মূল্যে মালিকানা দাবি করছেন। তারা আরো বলেছেন, এই দাগের জায়গায় খালের কোনো অস্তিত্বই নাই।

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ খুরশিদ শাহরিয়ার বাংলানিউজকে জানান, জরিপে রেকর্ডভুক্ত না হওয়ায় দখল প্রক্রিয়া বন্ধ করা যাচ্ছে না। তারপরও জনস্বার্থে বাধা দিতে গেলে তারা আদালতে বাইলেশন মামলা করে। বিষয়টি আমি জেলা প্রসাশককে লিখিতভাবে জানিয়েছি।






Shares