ভারতকে ট্রানজিট দিতে কাটা হচ্ছে সাড়ে তিন হাজার গাছ
ডেস্ক ২৪: ভারতকে ট্রানজিট দেবার লক্ষ্যে ভারী মালামাল পরিবহনের ক্ষমতা বাড়াতে আশুগঞ্জ-আখাউড়া সড়কের পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা সোজা করার প্রকল্প হাতে নিয়েছে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। আর এর জন্য কাটা পড়তে যাচ্ছে ওই এলাকার সাড়ে তিন হাজার গাছ। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে নির্মিতব্য পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভারী যন্ত্রাংশ (ওডিসি) পরিবহনের সুযোগ তৈরি করতেই সরকারের এ আয়োজন বলে জানা গেছে। সরকারি এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের রুপরেখা তৈরিতে হাফ ডজন বৈঠক করেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কর্মকর্তারা। আর ইতিমধ্যে ঠিকাদার নিয়োগসহ যাবতীয় প্রস্তুতি নেয়াও শুরু হয়েছে। জানা গেছে, এটি আশুগঞ্জ অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার নৌ-বন্দর স্থাপন প্রকল্পের একটি অংশমাত্র। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সড়কটি আশুগঞ্জ থেকে সুলতানপুর হয়ে আখাউড়ায় গিয়ে শেষ হবে। যার মোট দৈর্ঘ্য ৪৯ কিলোমিটার। কন্টেইনার নৌ-বন্দর স্থাপন প্রকল্পের ভারী মালামাল পরিবহনের জন্য এর মধ্যে পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা সোঁজা করতে হবে। মেরামত করতে হবে গোটা সড়কটিই। কেননা বর্তমান সড়কটি ২০-২৫ টনের বেশি ভারী মালামাল পরিবহনের উপযোগী নয়। জানা গেছে, পালাটানা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভারী মালামাল কলকাতা বা অন্য কোন বন্দর থেকে লরির মাধ্যমে প্রথমে বাংলাদেশের আশুগঞ্জ নৌবন্দরে আনা হবে। এরপর মালবাহী লরি আশুগঞ্জ-আখাউড়া সড়কপথ দিয়ে আখাউড়া সীমান্ত অতিক্রম করে ত্রিপুরা রাজ্যে যাবে। জানা গেছে রাত ১২ টা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত চলবে বিদ্যুৎতের যন্ত্রবাহী ট্রাক ও লরিগুলো। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা বন কর্মকর্তা জানান, চিহ্নিত পাঁচ কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে বেশ কয়েকটি মোড় রয়েছে। এ জন্য সুলতানপুর থেকে চীনাই সড়কের দু’পাশের অন্তত দুই হাজার ও আখাউড়া থেকে গাজীর বাজার সড়কের পাশ্ববর্তী আরো দেড় হাজারের মতো গাছ কাটতে হবে। এরমধ্যে প্রথম দুই হাজার গাছের বয়স পাঁচ বছর, বাকিগুলোর ১৫ থেকে ২০ বছর পুরনো। পুরনো গাছগুলো বিক্রি করে এর অর্থ বিতরণ করা হবে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের মাঝে। তিনি আরো জানান, তারা আপাতত মোড়ের পাশ্ববর্তী গাছগুলো কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে স্থানীয়রা জানান, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে শুধুযে হাজার তিনেক গাছ কর্তনই করতে হবে তা নয়, এর জন্য ভাঙতে হবে বেশ কিছু বসতবাড়িও। এদিকে গাছ কাটার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সাধারণ সম্পাদক ডা: মো: আব্দুল মতিন প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, উন্নয়নের পাশাপাশি সরকারের পরিবেশগত দিকও বিবেচনায় রাখা উচিত। নকশা পরিবর্তন করেও যদি গাছগুলো বাঁচানো যায় সে বিষয়টি ভেবে দেখার আহ্বান জানান তিনি। যদি তা সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে ওই এলাকায় গাছ লাগানোর একটি পরিকল্পনা নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি। |