সিলেট-আখাউড়া সেকশনে ঝুঁকিপূর্ণ শতাধিক রেলক্রসিং
ডেস্ক ২৪: সিলেট-আখাউড়া রেললাইনে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে শতাধিক রেলক্রসিং। গেট বা গেটম্যান না থাকায় এ ক্রসিংগুলো মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন সময় ঝুঁকিপূর্ণ এসব ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সিলেট-আখাউড়া রুট দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২০টি ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে অরক্ষিত ক্রসিংগুলোয় লোকজন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। চলছে বিভিন্ন ধরনের ভারী ও হালকা যানবাহন। রেল বিভাগ কিছু ক্রসিংয়ের সামনে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখলেও রেলক্রসিংয়ে গেট স্থাপনে কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। গত কয়েক বছরে এ রুটের অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে ঘটে যাওয়া কয়েকটি দুর্ঘটনায় অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন শতাধিক। রেলওয়ে সূত্র জানা যায়, শায়েস্তাগঞ্জ থেকে শ্রীমঙ্গল-কুলাউড়া হয়ে সিলেট পর্যন্ত মোট ৫১ টি রেলক্রসিং রয়েছে। এর মধ্যে অনুমোদন আছে ১৭টির। বাকি ৩৪টির কোনো অনুমোদন নেই। এর মধ্যে ২৮টি রয়েছে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের কাঁচা ও আধাপাকা সড়কের ওপর এবং ছয়টি এলজিইডির পাকা সড়কের ওপর। এ রুটে অনুমোদনপ্রাপ্ত ১৭টি ক্রসিংয়ের আটটিতে গেটম্যান আছে। বাকি নয়টিতে গেট থাকলেও কোনো গেটম্যান নেই। সিলেট-আখাউড়া সেকশনে এ রকম অরক্ষিত ক্রসিংয়ের সংখ্যা শতাধিক হবে বলে জানা গেছে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, এ সেকশনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রেলক্রসিং সমশের নগরের মনু স্টেশনের মধ্যবর্তী ই-৯১ সি রেলক্রেসিং। এখানে প্রয়াই দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ ক্রসিংয়ে ২০০২ সালে ট্রেনের সঙ্গে অটোরিকশার সংঘর্ষে পাঁচ যাত্রী মারা যান। পরবর্তী সময়ে আরেকটি দুর্ঘটনায় আরো তিনজন মারা যান। এছাড়া শ্রীমঙ্গলের সাতগাঁও ডাউন পয়েন্টের কাছে ২০০০ সালের মে মাসে ট্রেনের ধাক্কায় দুই অটোরিকশা আরোহী নিহত হন। ২০০৮ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কুলাউড়া স্কুল চৌমুহনী রেলক্রসিংয়ে সিলেটগামী আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় কুলাউড়া দমকল বাহনীর একটি পিকআপ ছিটকে পড়ে। এতে তিনজন দমকলকর্মী নিহত এবং চারজন আহত হন। এখনো এসব ক্রসিংয়ের ঝুঁকি এড়াতে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনের এক কর্মকর্তা জানান, অনুমোদিত রেলক্রসিংয়ের মধ্যে শ্রীমঙ্গল, সমশের নগর, শায়েস্তাগঞ্জ, কুলাউড়া, মাইজগাঁও, সিলেট ও মৌলভীবাজার সড়কে কয়েকটি ক্রসিংয়ে গেটম্যান ও গেট রয়েছে। বাকিগুলো অরক্ষিত। এ ব্যাপারে আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনের সুপার মো. মোতালেব হোসেন জানান, অরক্ষিত রেলক্রসিংগুলোর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তার মতে, যেসব ক্রসিং সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাস্তায়, সেগুলো মোটামুটি সুরক্ষিত। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ ও এলজিইডির রাস্তায় নির্মিত কিছু ক্রসিং ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাস্তার ক্রসিংয়ের গেটম্যানসহ যাবতীয় খরচ যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে রেলওয়ে বিভাগ পেয়ে থাকে। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ ও এলজিইডি কোনো বরাদ্দ দেয় না। ফলে এসব ক্রসিংয়ে গেট নির্মাণ ও গেটম্যান নিয়োগ প্রদানে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। |