Main Menu

আখাউড়ায় রেলওয়ের কোটি টাকার জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণ

+100%-

প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেলওয়ে জংশন ষ্টেশনের সম্মুখের সৌন্দর্য নষ্ট করে প্রায় ৩ কোটি টাকার জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণ শুরু করেছে একটি প্রভাবশালী মহল।  গত মঙ্গল ও বুধবার গভীর রাতে একটি সংঘবদ্ধ চক্র ষ্টেশনের ১নং প্লাট ফরমের পূর্ব পাশের উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ১০০ ফুট লম্বা ও ১৩ ফুট চউড়া জায়গায় টিনের ছাউনি ও বেড়া দিয়ে ঘর নির্মাণ করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী জানিয়েছেন, জনৈক হুমায়ুন মিয়া নামে রেলওয়ে ষ্টেশনের একজন ব্যবসায়ী রেলওয়ের উচ্চ পদস্থ কিছু কর্মকর্তার সহযোগিতায় এবং সরকার দলীয় স্থানীয় কয়েকজন শীর্ষ নেতার যোগসাজসে এ দখল কার্যক্রম চালিয়েছেন।
এদিকে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন ষ্টেশনের সৌন্দর্য নষ্ট করে যাত্রী ও যান চলাচলের রাস্তায় রেলওয়ের জায়গা দখল করে দোকান নির্মানের ঘটনায় আখাউড়ার সাধারণ মানুষের মনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
রেলওয়ে জংশন স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ বছর আগে বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় বৃহৎ জংশন ষ্টেশন আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশনের আধুনিকায়ন কাজ সম্পন্ন করা হয়। এ সময় জংশন ষ্টেশনের সৌন্দর্য ও শোভাবর্ধন এবং যাত্রী সাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে ষ্টেশনের সম্মুখে প্রশস্ত রাস্তা রাখা হয়। যানবাহন পার্কিংয়ের জন্য রাস্তায় ডিভাইডার দিয়ে আলাদা আলাদা পার্কিং ব্যবস্থা করা হয়।
কিন্তু ষ্টেশনের ১নং প্লাট ফরম লাগোয়া ভ্যান ও রিক্সা পার্কিংয়ের ১০০ ফুট রাস্তায় গত মঙ্গলবার রাতে  ষ্টেশনের ব্যবসায়ী হুমায়ুন মিয়া টিনের বেড়া ও চাল দিয়ে মার্কেট নির্মানের উদ্দেশ্যে দোকানঘর তৈরি করেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে রাতের আধারে এই মহলটিই দোকান নির্মান শুরু করলে প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠে আখাউড়ার জনগণ। তখন দোকান নির্মাণ কাজ বন্ধের দাবিতে আখাউড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রতিবাদ সভা ও মিছিল করে রেলওয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট স্মারক লিপি প্রদান করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তখন এই নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে আখাউড়া পৌরশহরের খড়মপুরের বাসিন্দা কাজী শরীফ খাদেম বলেন, আখাউড়ার ঐতিহ্য রেলওয়ে স্টেশনটি কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য আজ সৌন্দর্য নষ্ট হতে যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তিনি বলেন, আখাউড়ার সর্বস্তরের রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধিদের উচিত আখাউড়ার সৌন্দর্যের স্বার্থে জনসাধারণকে নিয়ে এ ব্যাপারে আন্দোলন গড়ে তোলা।
সড়ক বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ ইয়াছিন বলেন, দেশ কি আইন কানুন বলে কিছু নেই। এভাবে মানুষের চলাচলের পথ দখল করে দোকান নির্মাণ করবে এটা কোন ভাবে মেনে নেওয়া যায় না। রেলওয়ের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ তারা যেন দখলদারের হাত থেকে রেলওয়ে স্টেশনকে রক্ষা করেন।
আখাউড়া পৌর সভার ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ মন্তাজ মিয়া বলেন, ষ্টেশনের প্রবশে পথের খোলা জায়গায় দোকান নির্মাণ করা হলে ষ্টেশনের সৌন্দর্য মারাত্মকভাবে বিনষ্ট হবে। তাছাড়া এতে যাত্রী সাধারণ এবং যানবাহান চলাচলে বিঘ্ন ঘটবে।
এ ব্যাপারে আখাউড়া সড়ক বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান বলেন, এত টাকা খরচ করে  যে দৃষ্টিনন্দন ষ্টেশন ভবন তৈরি করা হয়েছে এর সম্মুখে এধরনের মার্কেট নির্মাণ করা হলে ষ্টেশনের সৌন্দর্য নষ্ট হবে।
এ ব্যাপারে আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট মোতালেব হোসেন বলেন, এভাবে টিনশেড দিয়ে দোকান নির্মাণ করা হলে কোটি কোটি ব্যয়ে নির্মিত ষ্টেশনের সৌন্দর্য নষ্ট হবে। তবে দোকানগুলো কে তুলেছেন এ ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে পারেন নি। রেলের জায়গা লীজ দেয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। কেউ লিজ এনে থাকলে তার কিছু করার নেই বলে জানান।
এদিকে আখাউড়া জংশনের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, যান চলাচল ও যাত্রীদের যাতায়াতের পথে দোকান করা হলে ষ্টেশনের সৌন্দর্য নষ্ট হবে। তাছাড়া আগরতলা-আখাউড়া রেললাইন স্থাপনের পরিকল্পনা থাকায় ষ্টেশনটির গুরুত্ব অত্যাধিক। এজন্য এ জায়গাটি খোলামেলা থাকলে দেখতে সুন্দর লাগবে এবং যাত্রীরা আরামে যাতায়াত করতে পারবে।  তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করেছেন বলে জানান।  
এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ বশিরুল হক ভূইয়া বলেন, ষ্টেশনের সম্মুখ ভাগে এভাবে দোকান করা হলে ষ্টেশনের সৌন্দর্য ম্লান হবে। এটা কোন ভাবেই হওয়া উচিত না।






Shares