এসএসসির ফরম পূরণ
আখাউড়ায় অতিরিক্ত অর্থ ফেরতের নির্দেশ
ডেস্ক ২৪:: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। চিঠিতে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে অবিলম্বে বোর্ড নির্ধারিত ফি’র অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দিতে বলা হয়েছে।
গত ১৭ নভেম্বর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ দেলোয়ার হোসেন এ চিঠি দেন। কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিতব্য ২০১৭ সনের এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হয় নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে। আখাউড়া উপজেলার ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৫টি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ শিক্ষাবোর্ডের নির্ধারিত ফি-তে ফরম পূরণ না করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ১ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার আদায় করে। কোচিং ফি, মডেল টেস্ট, বকেয়া বেতন, মিলাদের চাঁদাসহ নানা খাত দেখিয়ে এসব অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়। এতে বিপাকে পড়ে দরিদ্র পরিবারের অসহায় শিক্ষার্থীরা। অভিভাবকদের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় বিদ্যালয়গুলো।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, একজন নিয়মিত পরীক্ষার্থীর ফরম পূরণে ১৬/১৭শ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে শিক্ষা বোর্ড। বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী পরীক্ষার ফরম পূরণ ফি প্রত্যেক বিষয়ে ৮০ টাকা, ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি ৩০, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট ফি ৩৫, মূল সনদ ফি ১শ, বয়েজ স্কাউট ও গার্ল গাইড ফি ১৫, জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ফি ৫ টাকা এবং কেন্দ্র ফি ৩শ টাকা। ফরম পূরণে সবচেয়ে বেশি অর্থ আদায় করে আমোদাবাদ শাহ আলম উচ্চ বিদ্যালয়, দেবগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, খড়মপুর কল্লা শহীদ উচ্চ বিদ্যালয়, হীরাপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কর্মমঠ উচ্চ বিদ্যালয়। এসব প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীর নিকট থেকে ৩ হাজার ৫ টাকা এবং মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা বিভাগের পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩২/৩৩শ টাকা আদায় করে। কিন্তু শিক্ষার্থীদেরকে টাকা আদায়ের কোনো রশিদ দেয়নি। আমোদাবাদ শাহ আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী ইকরাম হোসেন, শাহীন চৌধুরী, সামসুল আরেফিন, শারফিন মীর জানান তারা প্রত্যেকেই ৩ হাজার ৫শ টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করেছে। পৌরশহরের দেবগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক কামরুল হাসান জানান, তিনি ৩ হাজার টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করেছেন। আমোদাবাদ শাহ আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী মো. তারেক ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের কথা অস্বীকার না করলেও কত টাকা নেওয়া হয়েছে তা জানাননি। আখাউড়া রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রাধাকৃষ্ণ নুরনিয়া জানান, ফটোকপি, বোর্ডে আসা যাওয়াসহ অন্যান্য খরচ মেটাতে ফরম পূরণে কিছু অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়েছে। ২ হাজার ৫শ টাকা নিয়েছেন বলে তিনি জানান। আখাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, বোর্ড নির্ধারিত ফি-তে ফরম পূরণ না করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করায় উপজেলার ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৫টি মাদ্রাসা প্রধানকে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে আদায়কৃত অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
৩০ নভেম্বরের মধ্যে অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দেওয়া না হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সূত্র: দৈনিক শিক্ষা