আখাউড়ার এসএসসির ফরম ফি ৩৬০০ টাকা !! শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ।!
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়সহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এবার প্রশাসনের কড়াকড়ির পরেও অনিয়মের ঘটনায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তবে শিক্ষকরা বলছে বকেয়া থাকায় ফরম পূরণের সময় টাকার পরিমান বেড়েছে। ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে প্রতিকার পেতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সরেজমিন খোজ নেয়ার সময় এই তথ্য জানাগেছে। আজ সকাল সাড়ে ১১টায় আখাউড়া হীরাপুর শহীদ নোয়াব মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা দিয়ে সন্তানের ফরম পূরন করেছেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস উদ্দিন ভুইয়া। তার কন্যা প্রতিবন্ধী হওয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ১ হাজার টাকা কম রেখেছেন তবে অন্যদের নিকট থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকা নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন। এছাড়াও সাদিয়া আক্তার ও আদ্রিসা ইসলামসহ বেশ কিছু ছাত্র ছাত্রীদের সাথে কথা বলে জানাগেছে ফরম পুরণের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের নিকট থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকা নিয়েছেন। রিতা আক্তার নামে এক ছাত্রী জানিয়েছেন, স্কুলে সাংবাদিক এসেছে দেখে তাদের কয়েকজনের নিকট থেকে ২ হাজার টাকা নিয়েছে। শুধু তাই নয়, এক ছাত্রী অভিযোগ করেছে তার নিকট থেকে রিসিড ছাড়াই ফরম পুরনের জন্য ৩ হাজার ৬০০ টাকা নেয়া হয়েছে।
এদিকে দুপুরে দেবগ্রাম পাইলট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে একই চিত্র দেখাগেছে। সেখানেও ফরম পুরণের জন্য ছাত্র ছাত্রী ও অভিভাবকদের নিকট থেকে ৩ হাজার টাকা করে নেয়া হচ্ছে। উপজেলার অন্যান্য স্কুলগুলোতেও একই চিত্র বিরাজ করছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ ফি নির্ধারিত করেছে। বিজ্ঞান বিভাগে এক হাজার ৮৩৫ টাকা এবং মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে এক হাজার ৭১৫ টাকা। কিন্তু সরকারি নির্দেশ অমান্য করে নানা অজুহাতে বাড়তি ফি আদায় করছে স্কুলগুলো।
আখাউড়া টেকনিক্যাল মাদ্রাসার এক ছাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, মানবিক বিভাগের জন্য মাদ্রাসায় বিভিন্ন অজুহাত কোচিং ফি এই ফি সেই ফি এর কথা বলে তার কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ১৭১৫ টাকার পরিবর্তে ৩৭৫০ টাকা চাওয়া হয়েছে। কয়েকজন ছাত্র মিলে শিক্ষকদের কাছে গিয়ে টাকা কম নেওয়ার অনুরোধ করলে শিক্ষকগন বলে দেন টাকা দিতে পারলে পরিক্ষায় অংশ্রগ্রহন করতে পারবে নতুবা পরিক্ষায় অংশ্রগ্রহন করতে দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে আখাউড়া হীরাপুর শহীদ নোয়াব মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: নুর ই আলম জানান, বিশেষ ক্লাস ফি ও অন্যান্য বকেয়াসহ নেয়ার কারণে ফরম পুরণের সময় টাকার পরিমান বেড়েছে। তার স্কুলে কোন অনিয়ম হচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন। দেবগ্রাম পাইলট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ মাহফুজ না থাকায় সহকারী প্রধান শিক্ষক মো: শাহ আলম বলেছেন, বিশেষ ক্লাস ও বকেয়া টাকার জন্য ফরম পুরণের সময় টাকার পরিমান বেড়েছে।
এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামছুজ্জামান বলেছেন, বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ফি রশিদের মাধ্যমে লেনদেনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে স্কুলগুলোতে। লেনদেনের ক্ষেত্রে কেউ অসৎ উপায় অবলম্বন করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।