Main Menu

বিজয়নগর সীমান্তে জ্বলছে উন্নয়নের আলো

+100%-

বিজয়নগর। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সীমান্তবর্তী এ উপজেলার আয়তন ২২১.১৭ কিমি২ (৮৫.৩৯ বর্গমাইল)। ২০১০ সালের ৩ আগষ্ট ৪৮২তম উপজেলা হিসেবে বর্তমান সরকারের অধীনেই এর জন্ম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের এই উপজেলা জন্মের আগে সদর উপজেলার অন্তর্গত ছিল। তবে নানা কারণে তা ছিল সুযোগ সুবিধা থেকে উপেক্ষিত। সে কারণে জন দাবির প্রেক্ষিতে এ উপজেলার সৃষ্টি করে সরকার। আর এ উপজেলা সৃষ্টির পেছনে বর্তমান সাংসদ র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর অবদান অনস্বীকার্য।

বিজয়নগর উপজেলার সবশেষ ইউনিয়ন বিষ্ণুপর । এরপরই প্রতিবেশী দেশ ভারত। বিষ্ণুপুরের সবশেষ গ্রাম কালাছড়া। এই কালাছড়া ছিল সবচেয়ে অবহেলিত জনপদ। তবে বর্তমানে সে অবস্থা আর নেই। যে গ্রামে সন্ধ্যা ৭টার পর মানুষ ঘুমিয়ে পড়ত আজ সেখানে শিশুরা লেখাপড়া করে রাত ৯টা / ১০টা পর্যন্ত। ২০১৭ সালে বিদ্যুৎ নামক সোনার হরিণকে নিজেদের করে পায় এ এলাকার জনগণ।

গত ৩ জানুয়ারী সরেজমিন কালাছড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে উৎসব পরিবেশ বিরাজ করছে। ঘরে ঘরে নতুন নতুন টেলিভিশন, ফ্রিজসহ নিত্য ব্যবহার্য বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী। বিদ্যুতের ফকফকা আলোতে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশুনা করতে পারছে। বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলতে গেলেই সকলের মুখে যেন এক ধরনের আত্বতৃপ্তির ছাপ। বহুদিনের সাধনার কোন কিছু পেলে যেমনটা সাধারণত হয় একেবারে সে ধরনের, যা আসলে লিখে বুঝানো সম্ভব নয়।

কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা ফিরোজ মিয়ার সাথে। পেশায় কৃষক এ ব্যক্তিকে দেখলে মনে হবে দুনিয়ায় সুখ আসলে তার পরিবারেই । স্ত্রী সন্তান নিয়ে আছেন বেশ সুখে। বিদ্যুৎ পাওয়ায় তার অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি জানান, আগে বিদ্যুতের অভাবে তারা অনেক কষ্ট করেছেন। অনেক টাকা দিয়ে বাড়িতে সৌর বিদ্যুৎ লাগিয়েছিলেন। তবে তাতে সব ধরনের সেবা পাওয়া যেত না। বর্তমানে তারা টিভি, ফ্রিজ সব চালাতে পারেন।

ফিরোজ মিয়ার স্ত্রী লাইলি বেগম বলেন, কারেন (বিদ্যুৎ) আওয়াতে (সংযোগ পাওয়ায়) আমরার অনেক সুবিধা অইছে। মানুষের মন সুখী অইছে, উন্নতও অইছে। আগে পুলাপাইন (তার ছেলে মেয়ে) সন্ধ্যা বেলা ঘুমাইযা যাইত। অহন রাইতের বেলাতও পড়ত পারে।

ফিরোজ মিয়ার প্রতিবেশী সোহেল রানা জানান, তাদের বাড়ি থেকে ৩০০ গজেরও কম দূরত্বে ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত। ছোটবেলা থেকে শহরে গেলে বিদ্যুৎ দেখতেন আর ভাবতেন কখনও কি তাদের বাড়িতে আসবে বিদ্যুৎ? আজ তার সে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তিনি সাংসদ র.আ, ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমাদের এলাকায় স্কুল হয়েছে, কলেজ হয়েছে, বিদ্যুৎ এসেছে। আমরা কি ভাবে সাংসদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাব তার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা।

নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের প্রভাব ছাত্র ছাত্রীদের উপর কি রকম তা জানতে কথা হয় কালাছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শামীমা ইয়াসমিনের সাথে। তিনি বলেন, ২০১৭ সালের এপ্রিলের দিকে আমাদের বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়। এরপর থেকে বিদ্যালয়ের উপস্থিতির হার বেড়েছে। অন্যান্য সময় গরমের কারণে ছাত্রছাত্রীরা অস্বস্তি বোধ করায় স্কুলে আসতো না বা আসলেও টিফিন পিরিওয়ডের পর চলে যেত। এখন তা আর নেই । এখন ছেলে মেয়েরা পড়াশুনায় মনযোগী হয়েছে। এ বছর এ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতভাগ পরীক্ষার্থী পাশ করেছে। একজন পেয়েছেন এ প্লাস। বিদ্যালয়ে বিদ্যুতায়ন করায় তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

একটা বিষয় স্পষ্ট, উন্নয়নের যে আলো সীমান্তে জ্বলছে, সে আলো জানান দিচ্ছে উন্নয়নের কথা, সে আলো জানান দিচ্ছে সমৃদ্ধির কথা।






Shares