বিজয়নগরে স্কুল পেল হাওরের শিক্ষার্থীরা, অন্ধকারে আলোর ছোঁয়া দিলেন মোকতাদির চৌধুরী এমপি
মো: জিয়াদুল হক বাবু :: মেঘেরে কোলে রোদ হেসেছে, বাদল গেছে টুটি, আজ আমাদের ছুটি ও ভাই আজ আমাদের ছুটি। কী করি আজ ভেবে না পাই, পথ হারিয়ে কোন বনে যাই, কোন মাঠে যে ছুটে বেড়াই সকল ছেলে জুটি, আজ আমাদের ছুটি ও ভাই, আজ আমাদের ছুটি। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের এই কবিতাটি পড়েননি এমন মানুষ মেলা ভার। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন বইয়ের গন্ধ অনেকটা আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধের ন্যায়।
ছোটবেলার সেই স্মৃতি সকলেরই মনে থাকার কথা। তবে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিতাসের অবহেলিত জনপদ পূর্বপাড়া গ্রামের কারো এ রকম স্মৃতি নেই বললেই চলে । কারণ বর্ষায় তারা থাকতেন পানি বন্দী, আর শুষ্ক মৌসুমে পায়ে হেটে কয়েক মাইল পথ পাড়ি দিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হত বলে পড়াশুনাটা সকলের ভাগ্যে জুটত না।
তবে বর্তমানে সে আধারের চিত্র পাল্টেছে। আর এ আলোর মশাল জ্বেলেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উন্নয়নের কবি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০১৮ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল পূর্বপাড়া সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়। যা বর্তমান সরকারের আমলে ১৫০০ বিদ্যালয় সরকারীকরনের আওতায় সরকারীকরণও হয়েছে।
আর হাওর বেষ্টিত অবহেলিত পূর্ব পাড়া গ্রামের শিশুরা পেল সরকারী স্কুল । ফলে অন্ধকার হতে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামে ।
বর্তমানে পূর্বপাড়া ও মোহাম্মদপুর গ্রামের অবহেলিত শিক্ষা বঞ্চিত প্রায় ২ শতাধিক শিক্ষার্থী এই স্কুলে ভর্তি হয়েছে ।ফলে দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষা বঞ্চিত এই গ্রামটিতে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে পড়ছে ।
এব্যপারে একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক জানান , আগে গ্রামে স্কুল না থাকায় কয়েক কিলোমিটার হেটে স্কুলে যেতে হত আর বৃষ্টি ও বর্ষার সময় শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ থাকত।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক বলেন , গ্রামের মধ্যে বিল থাকায় এবং রাস্তা না থাকায় এলাকার অধিকাংশ ছেলে মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ ছিল ।
উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাজহারুল হুদা বলেন, এ গ্রামের মধ্যে বিল থাকায় এবং রাস্তা না থাকায় এলাকার অধিকাংশ ছেলে মেয়েদের প্রতিদিন কয়েক কিলোমিটার পথ হেটে গিয়ে ক্লাশ করতে হত এবং বর্ষা মৌসমে শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ থাকত মাননীয় এমপি মহোদয় স্কুলটি করে দিলে শিক্ষার্থীরা পড়ার সুযোগ পেয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী আফরোজ বলেন , অবহেলিত এই গ্রামটিতে স্কুল কার্যক্রম শুরু হওয়ায় প্রায় ২০০ শতাধিক ঝরে পড়া শিক্ষার্থী স্কুলে ভর্তি হয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছে এবং স্কুলে যাতায়তের জন্য অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে চর ইসলামুর থেকে প্রায় দের কি: সড়ক স্কুল পর্যন্ত নির্মান করা হয়েছে।