Main Menu

বিজয়নগর থেকে অপহরণকৃত কিশোর ময়মনসিংহ থেকে উদ্ধার, আটক ৭

+100%-

১৩ বছরের শিশু অপহরণের ৪ দিন পর কিশোর মো. জিতু (১৩) কে উদ্ধার করেছে র‌্যাব- ১৪ ভৈরব ক্যাম্প সদস্যরা। এসময় ৭ অপহরণকারীকেও আটক করেছে তারা।  

সোমবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে ভৈরব বাসস্ট্যান্ড এলাকার দুর্জয় মোড়ে অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী দুইজনকে আটক করে র‌্যাব সদস্যরা। উদ্ধারকৃত জিতু ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার কাশিমপুর এলাকার আল আমিন মিয়ার ছেলে।

আটককৃত অপহরণকারীরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউয়া থানার খরমপুর এলাকার মৃত আব্দুল কুদ্দুস এর ছেলে মো. লোকমান হোসেন, একই এলাকার তানজু খাদেম এর ছেলে মো. ফুরখান খাদেম। এরপর তাদেরকে জিঙ্গাসাবাদে আরো ৫ অপহরণকারীসহ কিশোর জিতুকে মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) ভোরে উদ্ধার করে র‌্যাব ।

ভৈরব র‌্যাব ক্যাম্পের অধিনায়ক অতি: পুলিশ সুপার রফিউদ্দিন মোহাম্মদ যোবায়ের মঙ্গলবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, গত ২৫ জানুয়ারি জিতু নিখোঁজ হয়। নিখোঁজ হওয়ার দুই দিন পর অপহরণকারী দলের সদস্যরা অপহরণকৃত শিশু এর বাবা মো.আল আমিনকে মোবাইলে ফোন করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

বাবা মুক্তিপণের টাকা কোথায়, কবে দিবে জানতে চাইলে অপহরণকারী দলের সদস্যরা জানায় যে, কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব বাসস্ট্যান্ড এলাকার দুর্জয় মোড় হতে তাদের দলের দুই সদস্য জিতুর স্বজনদের নিয়ে ভিকটিম মোঃ জিতু মিয়ার কাছে নিয়ে যাবে এবং টাকার বিনিময়ে তাকে মুক্তি দিবে। ভিকটিমের মা’সহ স্বজনরা বিষয়টি ভৈরব র‌্যাব ক্যাম্পে কোম্পানী অধিনায়ককে জানালে অত্র এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়।

এরই প্রেক্ষিতে ভৈরব র‌্যাব ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং সিনিয়র এডি চন্দন দেবনাথ এর নেতৃত্বে আভিযানিক দলের সদস্যরা ভিকটিমের মা’সহ স্বজনদের সহায়তায় সোমবার রাতে ভৈরব বাসস্ট্যান্ড এলাকার দুর্জয় মোড়ে অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী দলের দুই সদস্যকে আটক করে। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানায় অপহরণকারী দলের অন্যান্য সদস্যরা ভিকটিমসহ ময়মনসিংহ জেলার সদর থানা এলাকায় অবস্থান করছে।

এ তথ্যের ভিত্তিতে অপহরণকারী দলের আটককৃত ২ সদস্যসহ র‌্যাবের আভিযানিক দলের সদস্যগণ ভিকটিমের স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে ময়মনসিংহ জেলার সদর থানার সম্ভুগঞ্জ ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেয়। ভিকটিমের স্বজনরাসহ র‌্যাবের ছদ্মবেশে থাকা গোয়েন্দা সদস্যরা অপহরণকারী দলের সদস্যদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে মুক্তিপণের টাকা গ্রহণের উদ্দেশ্যে ১ টি ভাড়াকৃত অটোবাইক নিয়ে অপহরণকারী দলের ৩ সদস্য সম্ভুগঞ্জ ব্রীজের উপর আসে।

পরবর্তীতে র‌্যাবের ছদ্মবেশী সদস্যগণ ভিকটিমের স্বজন সেজে ভিকটিমকে টাকার বিনিময়ে উদ্ধার করতে ভিকটিমের অবস্থান ময়মনসিংহ জেলার সদর থানার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ সংলগ্ন বিসিএস কনফিডেন্স হল রুমে পৌছায় এবং অপেক্ষমান অপহরণকারীর দলের সদস্যদের সাথে মুক্তিপণের টাকা নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে জানতে পারে যে, ভিকটিম মোঃ জিতু মিয়া পার্শ্বের একটি রুমে আটক আছে।

তাৎক্ষণিক ভৈরব র‌্যাব ক্যাম্পের দলের সদস্যরা মঙ্গলবার ভোর ৪ টায় অভিযান চালিয়ে অপহরণকারীর দলের সদস্য ময়মনসিংহ জেলার ধোপাউড়া উপজেলার চক ছত্তরপুর গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে  চান মিয়া মিয়া (কালা মিয়া), সদর থানার কেরয়াটখালী গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে মোঃ আজিজুল হাকিম (২২), তারাকান্দা থানার শিমুলতলী গ্রামের মোঃ নজরুল ইসলামের ছেলে খাইরুল ইসলাম উরফে ইমন (২২), ত্রিশাল থানার কুইষ্টা গ্রামের মোঃ নেওয়াজ আলীর ছেলে মোঃ আলমগীর হোসেন(২২), ধোপাউড়া থানার গাছুয়াপাড়া গ্রামের মৃত মাহামুদ আলী মোঃ এরশাদ আলী (২৫) কে আটক করে এবং ভিকটিম মোঃ জিতু মিয়াকে উদ্ধার করা হয়।

আটককৃত অপহরণকারীর দলের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আটককৃত মো. চান মিয়া উরফে কালু মিয়া  ৫/৬ মাস যাবৎ ভিকটিমের বাবার বাড়িতে গৃহস্থালী কাজ করত। ভিকটিমের বাবার সাথে লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে মনোমানিল্য সৃষ্টি হলে উক্ত চাঁন মিয়া অন্যান্য অপহরণকারী দলের সদস্যদের সাথে পরামর্শ করে দোকানে নাস্তা খাওয়ার কথা বলে ভিকটিম মোঃ জিতু মিয়াকে খরমপুর মাজার এলাকায় নিয়ে চেতনা নাশক ঔষধ মিশ্রিত জুস পান করিয়ে অজ্ঞান করে করে ময়মনসিংহে নিয়ে যায়।

পরবর্তীতে ভিকটিমের বাবার নিকট মোবাইল ফোনে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণের টাকা দাবি করে এবং উক্ত টাকা না দিলে ভিকটিমকে তারা খুন করবে বলে হুমকি প্রদান করে।

ভৈরব র‌্যাব ক্যাম্পের অধিনায়ক অতি: পুলিশ সুপার রফিউদ্দিন মোহাম্মদ যোবায়ের জানান, ঘটনাটি আমরা অবহিত হলে কৌশলে জিতুকে উদ্ধারসহ ৭ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানায় একটি মামলা করা হবে বলে জানান তিনি।






Shares