বৈরী আবহাওয়ায় আশুগঞ্জের ৪ শতাধীক চাতালকল বন্ধ, নষ্ট হচ্ছে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের ধান
আল মামুন : বৈরী আবহাওয়ার কারনে দেশের অন্যতম বৃহত্তম ধান-চালের মোকাম ব্রাহ্মনবাড়িয়ার আশুগঞ্জের ৪ শতাধীক চাতালকল গত ৫/৬ দিন যাবত বন্ধ রয়েছে। এতে করে নষ্ট হচ্ছে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের ধান। চাতাল মালিকরা নষ্ট হওয়া ধান নিয়ে পড়েছেন বিপাকে।
চাতাল মালিকদের দাবী প্রতিদিন বৃষ্টির কারণে প্রতিটি চাতাল কলের প্রায় ৫০হাজার টাকর ক্ষতি হচ্ছে। আর এসব চাতালকলে কর্মরত প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক ৫/৬ দিন যাবত কাজ না থাকায় অর্ধাহারে অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
সরজমিনে আশুগঞ্জের বিভিন্ন চাতাল কলে গিয়ে দেখা যায়, গত কয়েকদিনের বৈরী আবহাওয়া এবং টানা বর্ষণের কারণে রোদ্র না উঠায় চাতাল মাঠে ছড়িয়ে রাখা হয়েছে নষ্ঠ হয়ে যাওয়া শত শত মণ ধান। হাউজের সিদ্ধ করা ধান খোলা মাঠে টুপরি দিয়ে ঢেকে রাখতে হচ্ছে। এতে করে অধিকাংশ চাতালকলের হাজার হাজার মণ ভিজা ধানের মধ্যে চারা জেগে উঠেছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকা মূল্যের সিদ্ব্ ও কাচাঁ ধান। তাছাড়া ধান শুকাতে না পারায় চাতাল কলগুলোতে ধান মাড়াই করে চাউল উৎপাদন করতে পারছেনা। যার কারনে বাজারে চাউলের সরবরাহও কমে গেছে। আর নষ্ট হয়ে যাওয়া অধিকাংশ ধানেই দুগন্ধ ছুটে গেছে। এসব ধান মারাই করে যে চাল উৎপাদিত হয়ে বাজারে আসবে তাতে দুগন্ধ থেকে যাবে। তাই এসব চাল বাজারে বিক্রি করতে হবে অর্ধেক দামে। এতে করে কয়েক কোটি টাকার লোকসানের আশংকা করছেন এখানকার চাতাল ব্যবসায়ীরা।
চাতালকল মালিক হেবজু মিয়া জানান, গত কয়েকদিনের বিরামহীন বৃষ্ঠির কারনে আমার প্রায় ১০০০ মণ সিদ্ব ধান নষ্ঠ হয়ে গেছে। এই ক্ষতি আমি কিভাবে পূরন করবো বুঝতে পারছি না। অন্যদিকে হাউজের ধান রোদ্র না থাকায় চারা জেগে গেছে। এতে করে মোটা অঙ্কের টাকা ক্ষতি হচ্ছে আমাদের।
আবেদ ভূইয়া অটো রাইস মিলের ম্যানেজার রুহুল আমিন জানান, আমাদের ২টি মাঠের প্রায় ৯০০ মণ ধান বৃষ্ঠির কারনে নষ্ঠ হয়ে গেছে। এসব ধান থেকে যে চাল হবে তাতে দুগন্ধ থেকে যাবে। তাই এসব চাল বিক্রি করতে হবে অর্ধেক দামে। এতে করে প্রতিদিন আমদের ৪০/৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হচ্ছে।
আশুগঞ্জ চাতালকলে কর্মরত শ্রমিকরা জানান, বৃষ্টির কারণে ধান শুকানো না যাওয়া তাদের কাজ বন্ধ রয়েছে। গত তিন দিন ধরে বেকার বসে থেকে তাদের অপূরনীয় ক্ষতি হচ্ছে। এতে করে তাদের হাতে খরচের টাকাও নেই। অন্যদিকে মালিকদের অপূরনীয় ক্ষতির কারনে তাদের কাছেও টাকা পাওয়া যাচ্ছেনা।
এ ব্যাপারে চাতালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন জানান, গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষনের কারণে উপজেলার চাতালকল গুলোর সিদ্ধ করা ধান শুকানো না যাওয়ায় এই পর্যন্ত প্রায় ৯ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টি না থামলে আমাদের ক্ষতির পরিমান আরো বাড়বে। বৃষ্টির কারনে কাজ না থাকায় চাতাল শ্রমিকরাও অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে।