Main Menu

নতুন ধানে সয়লাব আশুগঞ্জের ধানের মোকাম ॥ দাম কম থাকায় কৃষকরা হতাশ

+100%-

শামীম উন বাছির ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ::
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের মেঘনা নদীর পাড়ের ধানের মোকাম এখন ধানে ধানে সয়লাব। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নৌকা দিয়ে বিক্রেতারা এখানে নিয়ে আসেন হাজার-হাজার টন ধান। মোকামে প্রচুর ধান উঠলেও দাম কম হওয়ায় কৃষকরা হতাশ। ধান বিক্রি করে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদেরকে। এ অবস্থায় কৃষকরা ধানের উৎপাদন খরচ কমাতে সরকারের কাছে কৃষি উপকরনের দাম কমানোর দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে প্রতিদিন এই মোকামে গড়ে এক থেকে দেড় হাজার টন ধান বিক্রি হয়। নৌ-পথে জেলার কিশোরগঞ্জ, সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনাসহ দেশের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে এখানে ধান নিয়ে আসেন কৃষকরা।

আশুগঞ্জ, সরাইলের বিভিন্ন চাতালকলসহ আশেপাশের বিভিন্ন চাতাল কলে চাল করে তা রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়।

সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রচন্ড রোদের মধ্যে মেঘনা নদীর পাড়ের ধানের মোকামের ব্যস্ততা। কেউ কেউ পাড়ে ভেড়ানো নৌকার ধান বস্তায় ভরছেন, কেউ কেউ ধানের বস্তা ওজন দিয়ে ট্রাকে তুলছেন।

মোকামে ধান নিয়ে আসা কৃষকরা জানান, প্রতি মণ ধান উৎপাদনে তাদের ব্যয় হয় ৬শত থেকে ৭শত টাকা। অথচ ধানের দাম কম থাকায় তাদেরকে প্রায় একই দামে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে। পরিবহন খরচ মিটিয়ে ধান বিক্রি করে তাদেরকে লোকসান গুনতে হচ্ছে।

মোকামে দেখা হয় হবিগঞ্জ উপজেলার লাখাই উপজেলা থেকে ধান নিয়ে আসা কৃষক হাবিব মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, তিনি তার জমিতে উৎপাদিত দেড়শ মণ ধান বাজারে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু ধানের দাম কম হওয়ায় তিনি হতাশ। ফেরত নিয়ে গেলেও আসা-যাওয়ার খরচ মিটিয়ে লোকসানটা আরো বাড়বে। এ অবস্থায় তিনি কি করবেন এ নিয়ে দোটানায় পড়েছেন।

কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলার ধান বেপারী কফিল উদ্দিন বলেন, তিনি সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা থেকে ১ হাজার ৮০ মণ ধান নিয়ে এসেছেন।

তিনি বলেন, প্রায় ৭শত টাকা মণ দরে ধান তিনি ধান কিনে এনেছেন। এখন ক্রেতারা দাম বলছেন মাত্র ৬৭৭ টাকা মন। তিনি জানান, ব্যবসায় লাভ-লোকসান আছে। বর্তমানে আনা ধান লোকসানেই বিক্রি করে দিবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এদিকে চাতাল কল মালিকরা জানান, নতুন ধান বাজারে আসলেও গুদামে পুরাতন ধান মজুদ থাকায় তারা ধান ক্রয়ে তেমন আগ্রহী নন। তারা বলেন, নতুন ভেজা ধানে চাল উৎপাদন কম হয় বলে এর দামও তুলনামূলক নিম্নমুখী। তারা বলেন, গুদামে মজুদ থাকা ধান কমে আসলে নুতন ধানের দাম কিছুটা বাড়বে।

এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ আড়ৎদার সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ শাহজাহান সিরাজি বলেন, বিদেশ থেকে আমদানি করা চালের জন্য সরবরাহ কমে যাওয়ায় মিল মালিকরা ধান কিছুটা কম কিনছে।  এছাড়া নতুন ধান ভেজা থাকায় দাম অনেকটা কম। এ অবস্থায় কৃষকদের লোকসান হচ্ছে এটা সত্য কথা। তিনি বলেন, সরকারের উচিত এ সময়ের মধ্যে ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা।






Shares