ধানের দাম কম হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃষকরা
প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ মোকামে প্রতিদিনই বিক্রির জন্য নিয়ে আসছেন চলতি ইরি-বোরো মৌসুমের হাজার হাজার মণ নতুন ধান। কিন্তু ধানের দাম কম হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। মাহাজন আর শ্রমিকের টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য হয়েই কম মূল্যে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকের।
কৃষকরা জানান, চলতি বছরে ডিজেল,কীটনাশকসহ সকল মালামালের দাম বেশি থাকায় অন্যান্য বছরের চেয়ে উৎপাদন খরচও বেশি হয়েছে। প্রতি মণ ধান উৎপাদন করতে আটশ থেকে সাড়ে আটশত টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু বাজারে প্রতিমণ ধান বিক্রি হচ্ছে গড়ে সাড়ে পাঁচশ থেকে সাড়ে ছয়শ টাকা। এতে করে তাদের উৎপাদন খরচই উঠবে না। তাই প্রতি মণ ধানে দেড়শ থেকে দুইশ টাকা লোকসান হচ্ছে।
এ ছাড়া নতুন ধান বাজারে আসলেও ধান ভিজা থাকার কারণে চাউল উৎপাদন কম হওয়ায় মিল মালিকরা নতুন ধান কিনতে খুব একটা আগ্রহ প্রকাশ করছেন না। তাই নতুন ধানের চাহিদা কম থাকায় বাজারে ধান এনে বেশি দামে বিক্রি করতে পারছেন না কৃষকরা। এতে ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছে তারা।
আশুগঞ্জ আড়তদার সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. শাহজাহান সিরাজ বলেন, যে অবস্থায় বাজার চলছে বর্তমানে কৃষকদের লোকসান হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে কৃষকেরা আরো লোকসানের মুখে পড়বে। তাই সরকারের উচিত কৃষককে ভর্তুকি দেয়া এবং অতিদ্রুত নীতিমালা অনুযায়ী খাদ্য গুদামে ধান-চাল ক্রয় করে ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা।
আশুগঞ্জ চাতালকল ব্যাবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক মো. জাকির হোসেন জানান, বর্তমানে খাদ্য গুদামে ধান-চাউল ক্রয়ের যে দর নির্ধারণ করেছে তা আরো বৃদ্ধি করলে কৃষক এবং মিল মালিকরা লাভবান হবে। আর না হলে কৃষক ও মিল মালিকরা লোকসানের মুখে পড়বে।
উল্লেখ্য, বৃহত্তর হাওর অঞ্চল কিশোরগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মনবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মণ ধান আশুগঞ্জ মোকামে আসে। আর এসব ধান স্থানীয় চারশতাধিক রাইছ মিলে পক্রিয়াজাত করে চাউলে রূপান্তর করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর ও ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও নৌ পথে সরবরাহ করে এসব এলাকার চাউলের চাহিদা পুরণ করে।