আশুগঞ্জ মুক্ত দিবস
খ.ম.হারুনুর রশীদ ঢালী, স্টাফ রিপোর্টার : ১০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা মুক্ত দিবস। একাত্তরের এইদিনে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী যৌথভাবে সশস্ত্র সম্মুখ যুদ্ধের মাধ্যমে পাক হানাদার বাহিনীকে বিতাড়নের মধ্য দিয়ে আশুগঞ্জকে শত্রু মুক্ত করে। তৎকালীন লে. কর্ণেল কে.এম. সফিউল্লাহ, লে. মো. হেলাল মোর্শেদ খান, মেজর আইন উদ্দিন ও মেজর নাসির প্রমুখ বীর সেনানীর সুসংঠিত নেতৃত্ব সর্বস্তরের বীর জনতা পাক সামরিক জান্তার কবল থেকে আশুগঞ্জকে মুক্ত করেছিলেন।
আশুগঞ্জকে মুক্ত করতে গিয়ে সেদিন পাক হানাদারদের সাথে যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন সুবেদার মেজর সিরাজুল ইসলাম, ল্যান্স নায়েক আব্দুল হাই, সিপাহী কফিল উদ্দিন, মুক্তিযোদ্বা আবু তাহেরসহ আরও অনেকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অধিকাংশ এলাকা মুক্ত হওয়ার পর একাত্তরের ৮ ডিসেম্বর ভারতীয় ট্যাঙ্ক বাহিনী বর্তমান আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর গ্রাম দিয়ে আশুগঞ্জ সদরে প্রবেশ করে। সর্বশেষ যুদ্ধ সংগঠিত হয় উপজেলার সোহাগপুরে। প্রায় তিনদিন তুমুল সম্মুখ যুদ্ধে অর্ধ সহস্রাধিক মিত্রবাহিনী ও পাক বাহিনীর সৈনিক নিহত হয়। সোহাগপুরের ভয়াবহ যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর তিনটি ট্যাঙ্ক ধ্বংস হয়। শেষ পর্যন্ত মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর ভয়াবহ আক্রমণে টিকতে না পেরে ১০ ডিসেম্বর দুপুরের পর থেকে পাক সেনারা পালিয়ে যেতে শুরু করে। আত্মরার জন্য পাক বাহিনী আশুগঞ্জ থেকে পালিয়ে ভৈরব যাওয়ার সময় মেঘনা নদীর উপর রেল সেতুটির একাংশ ডিনামাইট দিয়ে ধবংস করে দেয়। এতে সেতুটির দুটি স্প্যান ভেঙ্গে নদীতে পড়ে যায়। ১০ ডিসেম্বর রাতে আশুগঞ্জ সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত হয়। স্বাধীনতার পর থেকে আজ অবধি এই ১০ ডিসেম্বর আশুগঞ্জ মুক্ত দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। প্রতিবারের ন্যায় এবার দিবসটি পালনোপলে আশুগঞ্জ মুক্ত দিবস উদযাপন কমিটি আগামীকাল ১১ ডিসেম্বর দিনব্যাপি বিভিন্ন কর্মসুচি গ্রহণ করেছে। গৃহিত কর্মসুচির মধ্যে রয়েছে সকালে র্যালি, বিকালে আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।