মাদক সেবনে বাধাঁ, আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে শিশু ধর্ষণ চেষ্টার নাটক



প্রতিনিধি:ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মাদক সেবনে বাধাঁ দেওয়ায় এক আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার নাটক সাজিয়েছে মাদকসেবীরা।
শুক্রবার দুপুরে সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে উপজেলার চরচারতলা এলাকার বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কলোনী থেকে আহত অবস্থায় মো. কামাল হোসেন(৩০) নামের আনসার সদস্যকে আটক করে পুলিশ। পরে শিশুটির পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় কামালকে শনিবার দুপুরে পরিবার ও তার কর্মকর্তাদের কাছে তুলে দেওয়া হয়। এদিকে কামালকে ঘটনার সাথে সাথেই প্রাথমিকভাবে আনসার বিডিপি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে খুব শীঘ্রই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানানো হয়।
সরেজমিনে গিয়ে জানান যায়, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কলোনীতে প্রবেশ করে প্রতিনিয়ত মাদক গ্রহনের চেষ্টা করে এলাকার কিছু চিহ্নিত মাদকসেবী। বিভিন্ন সময়ে কামাল ও তার সাথের অন্য আনসার সদস্যরা তাদের বাধাঁ দিলে তাদের দেখে নেয়ার হুমকীও দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সকালে সাত বছরের একটি শিশুকে ব্যবহার করে ধর্ষণ চেষ্টার নাটক সাজানো হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর সুযোগ নিয়ে মাদকসেবীরা হামলা চালায় কামাল সহ অন্য আনসার সদস্যেদের উপর। এসময় হামলাকারীরা আনসার সদস্য নুরুদ্দিন ও কামালের ট্রাঙ্কে থাকা সার্টিফিকেট ও টাকা পয়সাও নিয়ে যায়। বেদম মারধর করা হয় তাদের। পরে পুলিশ এসে তাদের কাছ থেকে কামালকে উদ্ধার করে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ঘটনার পরে মেয়েটির বাবা থানায় কোন লিখিত অভিযোগ না দেয়ায় ছেড়ে দেয়া হয় আটক আনসার সদস্য কামালকে।
ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা ইসমাইল মিয়া শুক্রবার দুপুরে মেয়েকে ধর্ষণ চেষ্টার কথা সাংবাদিকদের কাছে বললেও পরে পরিবার ও তার মেয়ের সাথে কথা বলে তিনি জানতে পারেন বিষয়টি মিথ্যা। এবং এধরনের কোন কাজ কামাল করেনি। তাই তিনি কামালের বিরুদ্ধে কোন মামলা মোকাদ্দমা দায়ের করেনি। এলাকার কিছু লোকজন বিষয়টিকে বড় করে তুলেছে। কোন চাপে মামলা থেকে সড়ে দাড়িয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি জানান, আমাকে কেউ চাপ দেয়নি। আমি নিজেই এই মিথ্যা মামলা করা থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছি। তাছাড়া আমি গরীব মানুষ আমি এই মিথ্যা মামলা দিয়ে অন্যেকে হয়রানী করতে গিয়ে নিজেও হয়রানী হব।
পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্ত হওয়া কামাল জানান, আমি মেয়েটিকে আমার মেয়ের মত মনে করে তাকে আদর করেছি। পরে তার মা এসে আমাকে গালাগাল দিলে আমি তার কাছে সব খুলে বলি। এতেও তিনি শান্ত না হওয়ায় আমি তার কাছে ক্ষমা চাই। তিনি এক পর্যায়ে মেনে নেন। তবে এলাকার কিছু বখাটে ছেলে বিষয়টিকে অনেক বড় করে তুলেছে। বিভিন্ন সময়ে ছেলেগুলি কলোনীতে প্রবেশ করে নেশা করতে চায়। আমরা তাদের বাধাঁ দিলে তারা সেখানে প্রবেশ করতে পারে না। তাই এই ঘটনাটাকে কেন্দ্র করে তারা আমাকে মারধর করেছে। আমাদের থাকার রুমে ঢুকে বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাংচুর করে এবং টাকা পয়সা নিয়ে চলে যায়। এখন আমি চিন্তিত আমার চাকরীটা নিয়ে। আমার কোন অপরাধ না থাকার পরেও আমি মাদকসেবীদের হামলার স্বীকার হয়েছি।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন জানান, কামালের বিরুদ্ধে কেউ কোন লিখিত অভিযোগ না দেয়ায় তাকে তার পরিবার ও কর্মকর্তাদের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে উপজেলা আনসার বিডিপির প্রশিক্ষক উত্তম কুমার দেবনাথ জানান, ঘটনার সাথে সাথেই কামালকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ভূক্তভোগী পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় তাকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তার অপরাধ কতটুকু ছিল তা খতিয়ে দেখা হবে।