বেহাল নাওঘাট সড়ক জনদুর্ভোগ চরমে
মোঃ তারিকুল ইসলাম সেলিম: বেহালদশা আশুগঞ্জের নাওঘাট-খাকচাইল সড়ক। তালশহর রেলস্টেশন থেকে খাকচাইল পর্যন্ত খানাখন্দে ভরা সড়কে এখন দুর্ভোগ চরমে। এতে মানুষের মাঝে মারাত্মক অতিষ্ঠতা দেখা দিয়েছে। সংস্কারের অভাবে সড়ক জুড়ে ভাঙ্গা উচু নিচু টিলা সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলে গর্তে পানি জমে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ডোবায় পরিনত হয়। তাতে প্রায়ই অটোরিকশা উল্টে ঘটছে দুর্ঘটনা। নজর নেই কারো। সড়কে বেহালদশার কারণে ইমারজেন্সি রোগী হাসপাতালে নিতে এ্যাম্বুলেন্স গ্রামে ঢুকতে পারে না। এ সড়কে রোগীদের নিয়ে যাওয়া অনেক ঝুঁকিপুর্ণ। বিশেষ করে সিজারিয়ান রোগীর জন্য রাস্তাটি মোটেও নিরাপদ না। মানুষের বিপদ-আপদে দিনরাত রিক্সা সিএনজি নিয়ে এলাকাবাসীর চলাচল করতে হয়। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ভাঙ্গা রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। সিএনজি, অটোরিকশা, মটরসাইকেল টিলাটাক্কুর বেয়ে চলতে গিয়ে রাস্তার ঝাকুনিতে যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে যায়। নাওঘাটসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ ভাঙ্গাচুরা সড়কে যাতায়াত করতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এতে সিএনজি, অটোরিকশা, রিকশার ড্রাইভারদের মতো অল্প আয়ের মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। সড়কের কোন কোন অংশে ভেঙ্গে পড়ে দু পায়ে রাস্তায় পরিনত হয়েছে। সড়কের ভাঙ্গা অংশে অটোরিকশা একটি প্রস্থত স্থানে থামিয়ে অন্যটি ক্রসিং করতে হয়। মাঝেমধ্যে থামানো নিয়ে অটোরিকশা চালকরা বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এছাড়া ভূঁইয়া বাড়ির তিন রাস্তার মোড় ও রেলস্টেশন সংলগ্ন দুটি পাকা ফুট ব্রিজ রয়েছে।
১৯৯৮ সালে পায়ে হেটে পারাপারের জন্য ফুট ব্রিজ দুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। ব্রিজে নিম্ন মানের মালামাল ব্যবহারের কারণে অনেকাংশে ভেঙ্গে গেছে। ফুট ব্রিজ গুলোতে গাড়ী চলে না। অটোরিকশা, মটর সাইকেল চলাচলের জন্য অনপোযোগী ও মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এলাকাবাসী ফুট ব্রিজ দুটি ভেঙ্গে সমপোযোগী ব্রিজ নির্মাণ ও সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান। আশুগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী প্রিতম ভৌমিক জানান হ্যাঁ আমি জানি; সড়ক সংস্কারের জন্য আমি স্টিমেট করে কুমিল্লা পাঠিয়ে ছিলাম। মিটিংয়ে কথাও বলেছি। কিন্তু আসলে যথাযথ তদবিরের কারণে আমাদের আশুগঞ্জ বরাদ্দ খুব কম আসে! এখানে এমপি মহোদয় তো নাই, আর যেনি আছেন উনি তো এ রাস্তাটার ব্যাপারে অবগত নয়; যে কারণে কোন ভ্রুপেক্ষ করেন না। উনার সাথে দেখাও করতে পারি নাই। যে কারণে বরাদ্দের অভাবে অনুমোদন হয় নাই। সড়কপথে প্রায় সব দিক থেকে বিচ্ছিন্ন গ্রামটির দুইযুগ আগে এ সড়কের মাধ্যেমে জেলা সদরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ তৈরি করা হয়েছে। আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়নের অন্তগত সর্বদক্ষিন-পূর্বদিকে অবস্থিত গ্রামটির উত্তরাংশে তালশহর রেলস্টেশন থেকে তালশহর বাজার পর্যন্ত মাত্র আধা কিলোমিটার রাস্তার সংযোগ না থাকা কারণে সড়কপথে আশুগঞ্জ উপজেলার সাথে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
২০২০ সালে আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দে সালাহ উদ্দিন চেয়ারম্যান এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত সড়কের এই অংশে সংযোগ স্থাপনে তালশহর হাই স্কুল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ করে কিন্তু এরই মধ্যে তার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সড়কটি নির্মাণ অসম্পন্ন থেকে যায়। ফলে গ্রামের দক্ষিন দিকে নাওঘাট-খাকচাইল সড়ক দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর, আশুগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর, তারুয়া ও আড়াইসিধা ইউনিয়ন ঘুরে গ্রামবাসীর দৈনিন্দন প্রয়োজনে উপজেলা সদর ও ইউনিয়ন পরিষদে যেতে হয়। এতে শিক্ষা, চিকিৎসা, বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমও বিঘ্নিত হচ্ছে। রাস্তাটি নিয়ে গ্রামের নেতৃত্বস্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সি ও আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের সাথে আলোচনা করেন। এ সময় হানিফ মুন্সি গ্রামবাসীকে অসমাপ্ত সড়কটির নির্মাণ সম্পন্ন করার আশ্বাস দেন। এই কাজটি সম্পন্ন হলে সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত প্রত্যাশা পূরণ হবে।