Main Menu

আশুগঞ্জে প্রবাসীর জমি প্রভাবশালীদের দখলে, আদালতের নির্দেশ অমান্য, অসহায় জনপ্রতিনিধিরাও

+100%-

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে প্রভাবশালী একটি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক প্রবাসীর জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। থানা পুলিশের সহায়তা না পেয়ে প্রবাসীর পরিবার আদালতের দারস্থ হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের হাকিম মোঃ রুহুল আমিন ওই জমিতে ফৌজদারি কার্য বিধির ১৪৫ ধারা অনুযায়ী মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতিবস্থা বজায় রাখার জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে ওই জমিতে রাস্তা নির্মাণ ও গাছ লাগিয়ে দখল করছে প্রভাবশালী মহলটি। এমনকি ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য, সংরক্ষিত ইউপি সদস্যও প্রভাবশালী মহলটির কাছে অসহায়।

মামলার আবেদন সূত্রে জানা গেছে, আশুগঞ্জের তারুয়া ইউনিয়েন তারুয়া গ্রামের ফজলু মিয়ার বাড়ির মৃত ইদ্রিস মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন দীর্ঘদিন ধরে দুবাই প্রবাসী। তার জমির (তপছিল- জে, এল, নং- ১৭. বিএস খতিয়ান নং- ১০৬৭, দাগনং ২৬০৮) উপর দিয়ে গত ২৮-১১-২০২০ ভোর ৫টার সময় পাশ^বর্তী ছাই মোল্লা বাড়ির লোকজন পারিবারিক রাস্তা নির্মাণ করা শুরু করলে জাকির হোসেনের ছোট ভাই আশিদ মিয়া তাতে বাধা দেন। এসময় ছাই মোল্লা বাড়ির জয়নাল মিয়া, আনার মিয়া, হেলাল মিয়া, দুলাল মিয়া, দানু মিয়াসহ ১০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার উপর হামলা চালায়। এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাকে রক্ষা করে। পরে স্থানীয় শালিসকারদের বিষয়টি জানিয়েও কোন সুরাহা পায়নি প্রবাসী পরিবারটি। জোর পূর্বক সেই জায়গার উপর দিয়ে রাস্তা তৈরী করেছে চক্রটি। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ গিয়ে রাস্তা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে আসে। কিন্তু পুলিশ চলে আসার পর ফের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে চক্রটি। এমনকি আদালতের স্থিতিবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ থাকলেও সেখানে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে চক্রটি।

এ ব্যাপারে জাকির হোসেনের মা সাফিয়া বেগম বলেন, আমার জমি হেরা (তারা) দখল করে নিচ্ছে। আমি, আমার ছেলে-ভাতিজা সকলে তাদের কইছি,আমডার কথা হুনেনা। পুলিশরেও হেরা ডরায় না। আমি আমার জমি ফেরত চাই।
জাকির হোসেনের ভাই আক্তার মিয়া বলেন, তাদের গোষ্ঠী বড় হওয়ায়, আমাদের জায়গা জোর করে দখল করে নিচ্ছে। আমরা স্থানীয় সরদারদের জানিয়েও কোন ফল পাইনি। আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি। তারা আইনও তোয়াক্কা করছেন না। আমরা শান্তি চাই।

তারুয়া ইউনিয়েন তারুয়া গ্রামের ফজলুর মিয়ার বাড়ি এলাকাটি ৪ নং ওয়ার্ডের আওয়তাভুক্ত। এ ঘটনার বিষয়ে ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি খবর পেয়ে গিয়ে দখলের কাজ বন্ধ রাখতে বলি। তারা আমার কথা শুনেনি। আমি এখানে অসহায়।

৪,৫,৬ সংরক্ষিত ২ নং ইউপি সদস্য নাজমা বেগম বলেন, আমি খবর পেয়ে বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানকে অবহিত করেছি। তারা চেয়ারম্যানকেই মানছে না, আমরা তো আরো নিচে, তারা আমার কথা মানবে?

এ বিষয়ে তারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিস হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি খবর পেয়ে আমার সদস্যদের সেখানে গিয়ে কাজ বন্ধ করতে বলেছি। কিন্ত তারা জবরদস্তি করে কাজ করে যাচ্ছে। তারা আমার বাধাও শুনেনি, গ্রামবাসীর বাধাও শুনেনি। কার দরবার কে মাথায় টেনে নিবে? তারা যে অন্যায় করতেছে এটা সকলেই বলতেছে, কেউ তো আর লাঠি হাতে নেয় না। জনপ্রতিনিধিরাই সেখানে অসহায় কেন? সরকারের আইন কি সেখানে চলে না? এমন প্রশ্নের উত্তরে চেয়ারম্যান বলেন, পুলিশকে জানানোর পর পুলিশ এসেছিল, কাজ বন্ধ করতে বলেছিল। কিন্তু আমার ধারনা পুলিশ বায়োস্ট (প্রভাবিত) হয়ে ধোকা দিয়ে দখল করতে সুযোগ দিয়েছে।

এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাবেদ মাহমুদ বলেন, আমরা খবর পেয়ে গিয়েছিলাম। বিষয়টি এখন আদালতে রয়েছে বলে শুনেছি। আদালত থেকে গত ৩০-১১-২০২০ তারিখে উল্লেখিত জায়গায় স্থিতিবস্থা বজায় রাখতে আশুগঞ্জ থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়ে পত্র দিয়েছে। এমন তথ্য জানানোর পর ওসি বলেন, দেখতে হবে।






Shares