আশুগঞ্জে পরকীয়া প্রেমিকার হাতে বৃদ্ধ খুন
আশুগঞ্জে পরিত্যক্ত ট্যাংকি থেকে ইসমাইল মিয়া (৪০) নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর টানপাড়া গ্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের ধারণা- পরকীয়ার বলি হয়েছেন ওই ব্যক্তি। তাকে মেরে ট্যাংকিতে ফেলেছেন তারই প্রেমিকা। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত ইসমাইল মিয়া উপজেলার লামা শরীফপুর গ্রামের মৃত উজির আলীর ছেলে। সে ছয় সন্তানের জনক। আর আটককৃতরা হলেন- টানপাড়া গ্রামের শান্তা আক্তার (৩৫) ও তার স্বামী সুমন মিয়া (৪০)।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ইসমাইল মিয়া নিখোঁজ ছিলেন। তার পরিবারের লোকজন তাকে খুঁজে না পেয়ে শুক্রবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়। এরই মধ্যে বিকাল আড়াইটার দিকে স্থানীয় লোকজন হোসেনপুর টানপাড়া গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়ির বাথরুমের টাঙ্কির ভিতরে তার লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক পরকীয়া প্রেমিকা শান্তা বেগম জানান, ইসমাইল মিয়ার সঙ্গে তার দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া প্রেম চলছিল। ইসমাইল মিয়া বিভিন্ন ছলে প্রায়ই তার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হতেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় তার রাজমিস্ত্রি স্বামী কাজের সুবাধে বাড়িতে না থাকায় ইসমাইল তার ঘরে প্রবেশ করে তার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। তিনি যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট খেয়ে যাওয়ায় শান্তার খুব কষ্ট হচ্ছিল। তাই শান্তা ইসমাইলকে ঘর থেকে বের করে দিতে চেয়েছিল। এ সময় ইসমাইল শান্তার অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া ১৪ বছরের মেয়ে কেয়াকে ঘুমের মধ্যে ঝাপটে ধরে। এতে শান্তা ক্ষিপ্ত হয়ে রাজমিস্ত্রির যন্ত্র কোটাবাড়ি দিয়ে ইসমাইলের মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে শান্তা তার পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর মেয়ের সহযোগিতায় লাশটি পার্শ্ববর্তী একটি পরিত্যক্ত বাড়ির বাথরুমের টাঙ্কিতে ফেলে দিয়ে আসেন। রাতে শান্তার স্বামী ঘরে ফেরেন। তবে মা মেয়ে স্বাভাবিক থাকেন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক সুমন মিয়া এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে জানান। তবে নিহতের ছেলে সাদ্দাম হোসেন বলেন, সুমন ও তার স্ত্রীসহ অজ্ঞাত খুনিরা আর্থিক কোনো কারণে তার পিতাকে খুন করেছে। এদিকে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে আশুগঞ্জ-সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তপন সরকার ও আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. বিল্লাল মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।