নাসিরনগরে ভাতাকার্ড পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা আত্মসাৎ
নিজস্ব প্রতিবেদক:: নাসিরনগরে বয়স্ক ও গর্ভভাতার কার্ড পাইয়ে দেয়ার কথা বলে তিন নারীর কাছ থেকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে দেলোয়ারা বেগম নামে এক নারীর বিরুদ্ধে। প্রতারণার শিকার ওই তিন নারী হলো উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়নের ব্রাহ্মণশাসন গ্রামের মাছুমা আক্তার, হোসনা বেগম ও নিছা মন বেগম। অভিযোক্ত দেলোয়ারা বেগম একই গ্রামের মৃত মনির হোসেনের স্ত্রী।
জানা গেছে, গোকর্ণ ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য নার্গিস আক্তারের কাছে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি জানানোর পরও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। পরে টাকা ফেরত পেতে গত মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে তিন ভুক্তভোগী নারী পৃথক তিনটি একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এদিকে সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য নার্গিস আক্তারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমার কাছে টাকা আত্মসাতের বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। আরেক ইউপি সদস্য নোয়াব খাঁর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দেলোয়ারা বেগম ইউপি সদস্য নোয়াব খাঁ ও সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য নার্গিস আক্তারের সাথে অভিযোক্ত দেলোয়ার বেশ সখ্যতা। দেলোয়ারা বিভিন্ন ভাতাকার্ড পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে পাড়ামহল্লায় ঘুরে বেড়ায়। এলাকার বিভিন্ন নারীদের বয়স্ক, বিধবা ও গর্ভভাতার কার্ড পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা আদায় করেন। তাদেরই একজন প্রতারণার শিকার মাসুমা আক্তার। তিনবছর আগে মাসুমাকে গর্ভভাতার কার্ড পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ৪ হাজার টাকা নেয় দেলোয়ারা। এখন পর্যন্ত ভাতা বই ও কার্ড হয়নি।
ভুক্তভোগী হোসনা বেগমের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকা অবস্থায় দেলোয়ারা আমার বাড়ি আসে এবং গর্ভভাতা কার্ড পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে। তখন প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র দেই। কিছুদিন পর আবার এসে দেলোয়ার জানায় ভাতাকার্ড পেতে ৫ হাজার টাকা লাগবে। পরে অনেক কষ্ট করে ৪ হাজার টাকা তুলে দেই তার কাছে। প্রায় চার বছর হলো এখন টাকাও ফেরত পাচ্ছিনা গর্ভভাতা কার্ডও হয়নি।
অপর ভুক্তভোগী নিছা মন বেগমের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তিন বছর আগে ব্রাহ্মণশাসন গ্রামের দেলোয়ারা বেগম আমার বাড়িতে গিয়ে বলে আপনার জন্য বিধবা ভাতাকার্ড করে দিব। তখন আমি জাতীয় পরিচয়পত্রসহ প্রয়োজনীয় দরকারী কাগজপত্র দেই। এর কয়েকদিন পর আমার কাছে ৪ হাজার টাকা দাবী করে। পরে সুদের উপর ৪ হাজার টাকা দেলোয়ারাকে দেয়। তিন বছর কেটে গেলেও ভাতাকার্ডও হয়নি এবং আমার টাকাও ফেরত দিচ্ছে না।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমা আশরাফী বলেন, তিন ভুক্তভোগী নারীদের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরই উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।