নাসিরনগরে অনুমতি ছাড়াই উপজেলা চত্বরে ছাত্রলীগের সম্মেলন, সেবাগ্রহীতাদের ভোগান্তি
দীর্ঘ প্রায় ১১বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা শাখা ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলন হয়েছে। সম্মেলন উপলক্ষে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে উপস্থিত হোন। তবে অনুমতি না নিয়েই সম্মেলনের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছিল উপজেলা পরিষদ চত্বর প্রাঙ্গণে। ফলে ওই চত্বরে থাকা সাতটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিসের কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি সেবাগ্রহীতারা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) দিনদুপুরে সরকারি অফিসের সামনে ঘটা করে ছাত্র সংগঠনের এমন সম্মেলনের আয়োজন করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সেবাগ্রহীতাসহ উপজেলা সদরে আসা অনেকেই। তবে এ নিয়ে নাসিরনগরের সরকারি অফিস সংশ্লিষ্টরা কোন ধরণের মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সম্মেলনের জন্য পুরো মাঠ জুড়ে বিশালাকার প্যান্ডেল নির্মাণ করে সরকারি অফিসগুলোর প্রবেশমুখ ঢেকে দেয়া হয়েছে। সম্মেলনের কারণে উপজেলা পরিষদ চত্বরে থাকা শিক্ষা অফিস, হিসাবরক্ষণ অফিস, পরিসংখ্যান অফিস, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় ও উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় তালাবদ্ধ ছিল। এছাড়া সম্মেলনের উদ্বোধনস্থল সংলগ্ন আনসার ও ভিডিপি’র কার্যালয়ে তালা ঝুলতে দেখা গেছে।
নিজ কার্য্যালয়ের সামনে এমন সমাবেশ সম্পর্কে জানতে নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান শাওনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১১ বছর পর আয়োজিত সম্মেলনে উদ্বোধক হিসেবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য বি এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম।
উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে আসা ধরমন্ডল ইউনিয়নের বাসিন্দা জামাল হোসেন বলেন, বাবার পেনশনের বিষয়ে খোঁজ নেয়ার জন্য হিসাবরক্ষণ অফিসে এসেছিলাম। কিন্তু এসে দেখলাম এই অফিসসহ আশপাশের কয়েকটি অফিস তালাবদ্ধ। তাই চলে যাচ্ছি।
নাম প্রকাশ করার না শর্তে কয়েকজন বলেন, সরকারি অফিসের মূল ফটকে যেভাবে প্যান্ডেল করা হয়েছে এবং মাইকের বিকট শব্দে আমাদের কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাসিরনগর উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক ও সম্মেলনের সভাপতি নাছির উদ্দিন রানা দাবি করেন, তারা প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষেই সম্মেলনের আয়োজন করেছেন। তিনি বলেন, ‘সরকারি অফিসগুলোর কার্যক্রমে বিঘ্ন না ঘটিয়ে সম্মেলন করার শর্তে কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে অনুমতি দিয়েছেন।’
তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ভালো বলতে পারবেন। তিনি এ বিষয়ে খোঁজ নিবেন বলে জানিয়েছেন।