Main Menu

নাসিরনগর হামলা: সন্দেহভাজন কয়েকজনের নাম প্রকাশ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন

+100%-

mkডেস্ক ২৪:: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দুদের মন্দির ও ঘরবাড়িতে হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন কয়েকজনের নাম প্রকাশ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। গতকাল বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাদের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর প্রতিনিধিদলের পর্যবেক্ষণগুলো বৃহস্পতিবার দুপুরে কমিশন কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান।

কাজী রিয়াজুল হক জানান, তাদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী এ হামলায় ইন্ধনদাতা হলেন জেঠা গ্রামের মওলানা নুরুল ইসলাম, ডাকমণ্ডল গ্রামের তাজুদ্দিন আহমেদ, গৌরমন্দির সাবেক মেম্বার অলি, খরকপাড়ার ফারুক মোল্লা ও সবুজ হাজি।

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘গতকাল বুধবার আমাদের প্রতিনিধিদল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছে। তারা স্থানীয় প্রশাসনসহ ভিকটিমদের সঙ্গে কথা বলেছে। প্রতিনিধিদল উপজেলা সদরের ক্ষতিগ্রস্ত গৌর মন্দির, দত্তবাড়ি মন্দির, কালীবাড়ি মন্দির, জগন্নাথ মন্দিরসহ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর পরিদর্শন করে। এ সময় হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে কয়েকজনের বিরুদ্ধে।’

তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হবে ওয়েবসাইটে

নাসিরনগরের ঘটনা তদন্তে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদন সরকারের কাছে জমা দেয়া হয়েছে বলে জানান চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে কিছু ভিডিও চিত্রও আছে। আমরা আশা করব হামলাকারীরা যে দলেরই হোক, তাদের দৃ্ষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।’

কোনো ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখে না- গণমাধ্যমে এমন সমালোচনার কথা উল্লেখ করে মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা আনেক সময় বলেন তদন্তের কপি আলোর মুখ দেখে না। তাই আমরা তদন্তের কপি আমাদের ওয়েবসাইটে দিয়ে দেব।’

‘ঘটনা পরিকল্পিত’

ফেসবুকে কথিত ইসলাম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত রবিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ১৫টি হিন্দু মন্দির ও শতাধিক ঘরবাড়িতে হামলা হয়। পাশের জেলা হবিগঞ্জের মাধবপুরেও দুটি মন্দিরে হামলা হয়।

কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘হামলার ধরন দেখে আমরা বুঝতে পারি এ ঘটনা পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছে হামলাকারীরা। কারণ, একই সময় ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন মন্দিরে হামলা হয়েছে।’

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘যশোরাজ দাসের নামে ফেসবুকে যেসব ছবি ছড়ানোর কথা বলা হচ্ছে, সেটা তার মতো একজন নিরক্ষর তা করতে পারে না। নিশ্চয়ই অন্য কেউ ষড়যন্ত্র করে এই কাজ করেছে।’

ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি পোস্ট করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগ তুলে গত শনিবার সকালে হরিপুর ইউনিয়নের যশোরাজ দাসকে ধরে ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় রাতেই যশোরাজের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা করা হয়।

কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘হামলাকারীরা এত দিন হয় সুযোগের অপেক্ষায় ছিল, নয়তো সুযোগ নিজেরাই তৈরি করেছে। কারণ, একই সময় বিভিন্ন স্থানে হামলা হয়েছে। একেকজনকে একেক জায়গায় দায়িত্ব দিয়ে হামলা করিয়েছে।’

দায় আছে পুলিশ ও প্রশাসনের

স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ এর দায় এড়াতে পারে না বলেও মনে করেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, হামলাকারীরা এলাকায় মাইকিং করেছে। এরপরও পর্যাপ্ত পুলিশ ফোর্স না নিয়েই স্থানীয় প্রশাসন তাদের সভা করতে দিয়েছে। ফলে সভায় উস্কানিমূলক কথা বলে মন্দিরে হামলা চালাতে উদ্বুদ্ধ করার সুযোগ হয়েছে।’

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য নজরুল ইসলাম, সদস্য মো. এনামুল হক চৌধুরী, অভিযোগ ও তদন্ত বিভাগের পরিচালক শরীফউদ্দিন,  পরিচালক মো. শরীফউদ্দীন, অভিযোগ পর্যবেক্ষণ ও সমঝোতা সহকারী পরিচালক জয়দেব চক্রবর্তী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।সূত্র: ঢাকা টাইমস






Shares