নাসিরনগরে যৌতুকের জন্য স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন



নাসিরনগর প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাসিরনগর উপজেলায় স্বামীর বিরুদ্ধে রাজিয়া বেগম (৪০) নামে নয় সন্তানের জননীকে শাবল দিয়ে আঘাত ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত সোমবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার গুনিয়াউক ইউনিয়নের গুটমা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এঘটনায় স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামী মতিউর রহমান (৫৫) ওরফে মুতি মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার নিহত গৃহবধূর ভাই সোয়াব মিয়া বাদী হয়ে নয়জনকে আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ, নিহতের পরিবার ও মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩০ বছর আগে উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের পূর্বভাগ গ্রামের মৃত মতিউর রহমানের মেয়ে মৃত রাজিয়া বেগমের সঙ্গে গুনিয়াউক ইউনিয়নের গুটমা গ্রামের মুস্তব আলীর ছেলে মতিউর রহমান ওরফে মুতি মিয়ার বিয়ে হয়। তাদের নয়টি সন্তান রয়েছে। এরমধ্যে ছেলে পাঁচজন ও মেয়ে চারজন। এর মধ্যে বড় দুই ছেলে প্রবাসী এবং বিবাহিত তিন মেয়ে তাদের শশুড় বাড়িতে থাকেন। কয়েক বছর ধরে রাজিয়াকে বাবা বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য মতিউর চাপ দেয়। এসব নিয়ে স্বামীর স্ত্রীর মধ্যে প্রায় ঝগড়া হতো। কয়েক বছর আগে এসব ঘটনায় গ্রামে সালিশ বৈঠকও হয়েছিল। সম্প্রতি বাবার বাড়ি পূর্বভাগ থেকে টাকা এনে দিতে রাজিয়াকে আবারো চাপ দেয় মতিউর। এতে অসম্মতি জানালে রাজিয়ার সঙ্গে মতিউরের কথা কাটাকাটি থেকে ঝগড়া হয়। এঘটনায় গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে নিজ বাড়িতে শাবল দিয়ে রাজিয়ার মাথায় আঘাত করে মতিউর। এতে ঘটনাস্থলেই রাজিয়া মারা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নাসিরনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনির হোসেন ভূইয়া সাম্প্রতিক দেশকালকে বলেন, নিহতের মাথার পেছনের বাম ও ডান দিকে ফুলা জখম দেখা গেছে। মতিউর যৌতুকের টাকার জন্য রাজিয়ার মাথায় শাবল দিয়ে আঘাত করে। পরে শ্বাসরোধ তাকে হত্যা করে মতিউর। তাদের দুই ছেলে প্রবাসী ও তিন মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। বাকিরা খুবই ছোট। তাই সন্তানদের মধ্যে কারো সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের বলেন, যৌতুকের জন্য স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রায় ঝগড়া হতো। এনিয়ে এলাকায় একবার সালিশ বৈঠকও হয়েছিল। এঘটনায় নিহতের ভাই সোয়াব মিয়া বাদি হয়ে মুতিসহ আটজনকে আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।