নাসিরনগরে হামলা-অগ্নিসংযোগ
নাসিরনগরে বিএনপি নেতা আমিরুলের মুক্তি দাবি করেছে হিন্দু নেতারা



‘হামলার সময় আমার বাড়ি বাঁচানোর চেষ্টা করছিল আমিরুল, পুলিশ কেন ধরলো বুঝলাম না’
ডেস্ক ২৪:: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় সদর ইউনিয়নের বিএনপি সভাপতি আমিরুল হোসেন চকদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ প্রথমে দাবি করেছিল, হামলার ভিডিও ফুটেজ দেখে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে সাংবাদিকরা ফুটেজে আমিরুল হোসেনের ছবি দেখতে চাইলে পুলিশ এবার দাবি করে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারের খবরে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষ এবং নেতারা থানায় ভিড় করেন। এসময় তারা জানান, হামলার ঘটনায় আমিরুল হোসেন চকদার জড়িত থাকতে পারেন না। তারা তার মুক্তির দাবি জানান।
এদিকে বুধবার সকালে বিএনপি নেতা আমিরুল হোসেন চকদারের গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় কয়েকশ পরিবারের সঙ্গে নাসিরনগর থানায় গিয়ে হিন্দু নেতারা আমিরুলের মুক্তি দাবি করেন। তাদের দাবি, হামলার দিন হিন্দুদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন আমিরুল।
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কাজল জ্যোতি দত্ত বলেন, ‘বিএনপি নেতা আমিরুল আমার প্রতিবেশী। ঘটনার দিন তিনি আমার বাড়িটি রক্ষা করেছিলেন। পুলিশ কেন তাকে ধরে নিয়ে আসল কিছুই বুঝতে পারছি না।’উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হরিপদ পোদ্দার বলেন, ‘বিএনপি নেতা আমিরুল এলাকায় ক্লিন ইমেজের লোক। তিনি কোনও অপরাধ করতে পারেন এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।’
উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান অঞ্জন দত্ত বলেন, ‘জনগণের রাজনীতি করি। তাই জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে থানায় আসি। তিনি (আমিরুল) বিএনপির রাজনীতি করলেও ভদ্র বলেই জানি।’
উল্লেখ্য, ৩০ অক্টোবর উপজেলা সদরের দত্তপাড়া দুর্গা মন্দিরে হামলার ঘটনায় উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি কাজল জ্যোতি দত্ত ও মহাকালপাড়ার গৌর মন্দিরে হামলার ঘটনায় মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল চন্দ্র চৌধুরী অজ্ঞাতনামা ২ হাজার ৪০০ জনকে আসামি করে দুটি মামলা করেছিলেন। বাদীরা ঘটনার শুরু থেকেই গণমাধ্যমকর্মীদের বলে আসছেন, হামলাকারীরা ছিল অপরিচিত।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দুই মন্দিরে ভাঙচুর মামলার ওই দুজন বাদী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সুলতান সোহাগ উদ্দিনের আদালতে আমিরুলের পক্ষে দুটি লিখিত আবেদন জমা দেন। এ সময় উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হরিপদ পোদ্দারসহ আরও ১০-১২ জন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহকারী পুলিশ সুপার সদর সার্কেল আব্দুল করিম বলেন, ‘আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাকে ছাড়িয়ে আনতে হবে। এর বিকল্প কোনও পথ নেই।’