নাসিরনগরে ফেইসবুকে পবিত্র কাবা শরিফ নিয়ে ব্যঙ্গ চিত্র :: বিক্ষোভ, মন্দির ভাংচুর, বিজিবি মোতায়েন
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পবিত্র কাবা শরীফ নিয়ে ব্যাঙ্গচিত্র করে পোস্ট দেয়ার অভিযোগে আটক রসরাজ দাস (৩০) নামে এক যুবকের ফাঁসির দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠেছে ব্রাহ্মণাবড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা। শনিবার বিকেল থেকেই ওই যুবকের ফাঁসির দাবিতে স্থানীয়রা সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
রবিবার সকাল থেকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ছাত্র সংঘঠন ও স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ জনতা ফের অবরোধ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করে।
এসময় ৩০টির মত বাড়িঘর-দোকানপাট এ হামলা ও ভাংচুর চালায় উত্তেজিত জনতা।
গুড়িয়ে দেয়া হয় ৬টি মন্দিরের প্রতিমা। পরে পুলিশ ৩০ রাউন্ড টিয়ারশেল ছোড়ে পরিস্থিাতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় ৬জনকে আটক করে পুলিশ।
এদিকে, নাসিরনগরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রবিবার সকাল থেকে এক প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়। পরে পরিস্থিতির অবনতি হলে আরো এক প্লাটুন বিজিবি, এক প্লাটুন র্যাব ও দুইশতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
জেলা প্রশাসক রেদওয়ানুর রহমান বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শক করেছি। সব পক্ষের সাথে কথা বলেছি। পরিস্থিতি যাতে ঘোলাটে না হয় সে বিষয়ে সজাগ থাকতে বলেছি। এ বিষয়ে সরাষ্ট্র সচিবসহ উর্ধত্বন কর্মকর্তারা নজরদারি করছেন বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
১২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. শাহ্ আলী বলেন, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুরোধক্রমে নাসিরনগরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাকি রাখতে দুই প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই বিজিবি সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেয়া হবে।
এদিকে আটক রসরাজের ফাঁসির দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরেও বিক্ষোভ করেছে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা। দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব চত্ত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশও করে তারা। পরে বিকালে কাউতলী এলাকাতেও বিক্ষোভ হয়।
নাসিরনগর উপজেলা সদরের পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে উল্লেখ করে পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, ফেসবুকে ওই পোস্টটিকে কেন্দ্র করে যারা লুটপাট ও ভাঙচুরের মতো ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে ।
উল্লেখ্য, শনিবার নাসিরনগর উজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের জগন্নাথ দাসের ছেলে রসরাজ দাস তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পবিত্র কাবা শরীফের উপরে শিবমূর্তি বসিয়ে একটি পোস্ট দেন। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করলে পুলিশ রসরাজকে আটক করে। এ ঘটনার পর থেকেই রসরাজের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষুব্দ হয়ে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দারা।