নাসিরনগরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারী শিশুসহ আহত অর্ধশত
নিজস্ব প্রতিবেদক::নাসিরনগরে পূর্ব শত্রুতার জেরে সংঘর্ষ হয়েছে। ইউপি সদস্য মাসুক মিয়া ও সেলিম মিয়ার সমর্থকরা এ সংঘর্ষে জড়ান। এতে নারী ও শিশুসহ দুই পক্ষের অর্ধশত লোক আহত হয়।
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। চাতলপাড় পুলিশ ফাড়িঁর ইনচার্জ কাঞ্চন কুমার সিংহ সংঘর্ষের ঘটনা নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ১৫ বছর ধরে উচা বাড়ির সেলিম ও মৌলভি বাড়ির মাসুক মিয়ার মধ্যে শত্রুতা চলে আসছিলো। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আদালতে ৮টি মামলা চলমান। বিরোধ মেটাতে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ইউপি চেয়ারম্যান নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠকও হয়েছে। গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাসুক মিয়া ও সেলিম মিয়ার পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এদিকে শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল বেলায় মাসুক মেম্বারের পক্ষের লোক রিপন, হারিছ, ফায়জুদ্দি ও রিয়াজুল জমিতে ধানের চারা রোপন করতে যায়। তখন সেলিম মিয়ার পক্ষের লোকজন তাদের মারধর করে। মারধরের ঘটনাটি গ্রামে জানাজানি হলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে দুই পক্ষের লোকজন দেশিয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশত লোক আহত হয়। চাতলপাড় পুলিশ ফাড়িঁর থেকে পুলিশ গিয়ে সংঘর্ষ থামায়। সংঘর্ষে মাসুক মিয়ার পক্ষের ফালু মিয়াকে মুমূর্ষ অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপর আহতদের নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সেলিম মিয়ার পক্ষের আহতরা হলো-শাহীন মিয়া,জুবায়ের মিয়া,দেলোয়ার মিয়া,মহিউদ্দিন মিয়া,মো. রাজ্জাক মিয়া, সজিব মিয়া, মো. মিনর হোসেন, মোছা, নুরনাহার বেগম, মো. ফরহাদ মিয়া, মো. রিফাত মিয়া, শরীফ মিয়া, শাহজান মিয়া, ইয়াকুব মিয়া, জুনাইদ মিয়া, আওয়াল মিয়া, ইমন উদ্দিন, ছোট্টু মিয়া, জালাল মিয়া, শরিফ উদ্দিন, ওবায়দুল মিয়া, বাতেন মিয়া, নিজাম উদ্দিন ও আব্দুল বারিক মিয়া।
মাসুক মিয়ার পক্ষের আহতদের মধ্যে- রিপন মিয়া, হারিছ মিয়া, মো. ফায়জুদ্দি, মো. রিয়াজুল ও ফালু মিয়ার নাম জানা গেছে।এ বিষয়ে কথা হয় ইউপি সদস্য মাসুক মিয়ার সাথে। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, আমাদের কয়েকজন লোক সকাল বেলায় ক্ষেতে ধানের চারা লাগাইতে যায়। তখন উচা বাড়ির সেলিম মিয়ার পক্ষের কয়েকজন আমাদের পক্ষের লোকজনকে মারধর করে। পরে তারা বাড়িতে চলে আসে। এর পর বাড়িতে এসেও শতশত লোক আবার মারধর করে। এ সময় আমাদের পক্ষের ২৫জন আহত হয়।
সংঘর্ষের বিষয়ে কথা বলতে সেলিম মিয়ার সাথে যোগাযোগ করতে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি।গোয়ালনগর ইউপি পরিষদ চেয়ারম্যান আজহারুল হক বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। আমি বেশ কয়েকবার বিচার-সালিশ করেও বিরোধ মেটাতে ব্যর্থ হয়েছি। আজ আবারো দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুল্লাহ সরকার জানান, দীর্ঘদিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলমান। এরই রেশ ধরে আজকের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।