Main Menu

ত্রান পায়নি নাসিরনগর হাওরের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক। ৬ জেলায় ত্রান বিতরন।।

+100%-

এম.ডি.মুরাদ মৃধা, নাসিরনগর প্রতিনিধি :বৃষ্টিরজল আমাগুর সব নিয়া গেছে। জমির একটা ধানও কাটতে পারি নাই। গরু খাইব কি  আর ছেলে মেয়েরে খাওয়ামু কি?  ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ যোগামো কেমনে, ব্যাংকের ঋণ, এনজিও ঋণ পরিশোধ করমো কেমনে! চোখের জল মুছতে মুছতে কথাগুলো বলছিলেন গোয়ালনগর ইউনিয়নের কৃষক আক্তার মিয়া।

হাওয়র বেষ্টিত নাসিরনগরে প্রচন্ড বর্ষন,উজান থেকে নেমে আসা পানি,মেঘনার জোয়ারের পানি হাওয়রে নেমে আসায় নাসিরনগর উপজেলার ৪টি গ্রামের প্রায় আট হাজার(৮০০০) বিঘা জমির বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।

নাসিরনগরের কৃষক লালমোহন বলেন, স্কুলে যেতে পারছেনা আমার মেয়ে। সে ৯ম শ্রেনিতে পড়ে।সারাদিন মেয়েকে নিয়ে হাওয়ে পরে থাকি। কিছু ধান কেটে আনতে পারব এই আশায়। ব্যাংক ঋন নিয়েছি এবং এনজিও হতে  ঋনি নিয়ে এখন সব হারিয়ে আমি নি:স্ব। আক্ষেপ আর বুক ভরা আর্তনাদে শুধু ভাসিয়ে নেয়া জমির দিকে তাকিয়ে ছাড়া যেন তাদের আর কিছুই করার নেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, গোয়ালনগর ,মাছমা,দাতঁমন্ডল,নাসিরনগর,ভলাকুট, চাতলপাড় গ্রামের বোরো আবাদী জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। টানা ১ সপ্তাহের ভারি বৃষ্টিপাত মেঘনা নদীর পানি ও উজান থেকে বৃষ্টির পানি নামতে থাকায় নাসিরনগরের লঙ্গন নদীর হাওর এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে আবাদী বোরো ফসলি জমি থেকে দ্রুত পানি নিস্কাশন না হওয়ায় এবং বৃষ্টি অব্যাহত থাকার কারনে  কৃষকরা আজ সব হারিয়ে পথে বসেছে।

বছরের একমাত্র ফসল বোরো কাঁচা অবস্থায় অকাল বন্যায় পানির নিচে তলিয়ে গেল। হাওরাবাসীর কান্নার বিলাপে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। অকাল বন্যায় হাওরের কৃষকের স্বপ্ন, সাধ, বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন সব শেষ হয়ে গেছে। লাখ টাকা ঋণের ঘানি জমিতে ঢেলেছেন যে কৃষক আজ সেই কৃষকের জমির কাঁচা ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। নাসিরনগরের হাওর এলাকাকে বিশেষ দুর্যোগপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করার দাবি উঠেছে।

সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জের ন্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়াও হাওরাঞ্চল। ৬ জেলার জন্য ত্রাণ বরাদ্দ করা হলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্য কোন ত্রান বরাদ্দ নেই। অথচয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের দুই তৃতীয়াংশ ও সরাইলের কিছু অংশ হাওরাঞ্চলের অন্তর্গত।

গত রোববার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, হাওর এলাকার বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য জরুরী ত্রাণ সহায়তা হিসেবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ৩ হাজার ৩ শ’ ২৪ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১ কোটি ৯৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছে। এবং দুর্গত হাওরাঞ্চলে প্রতি পরিবারে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

হাওর অঞ্চলে আকস্মিক বন্যার কারণ চিহ্নিতকরণে ১৮-সদস্য বিশিষ্ট একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে গঠিত এ কমিটি বন্যা- উত্তর দুর্যোগ মোকাবেলা এবং  ভবিষ্যতে করণীয় বিষয় নির্ধারনে সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রণয়ন করবে।

এ পর্যালোচনা সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব মোঃ মাকসুদুল হাসান খানসহ সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকার পরো মৎস্য মন্ত্রীর এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত  কোন কৃষক ত্রান পায়নি। যা নাসিরনগরের হাওয়র বেষ্টিত  অন্চলের মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: লিয়াকত আলী বলেন, আমরা নাসিরনগরের  হাওয়রের সর্বশেষ পরিস্থিতি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানিয়েছি আশা করি দ্রুত একটা ফলাফল পাব। এবং হাওয়রের পানি দূষিত হওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান ড. খলিলুর রহমান,মায়মনসিং মৎস্য গবেষণা ইন্ষিটিউড এর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা গত বৃহস্পতিবার ২০/৪/২০১৭ এসে পরিক্ষা করে গেছেন। এখানকার পানিতে কোন সমস্যা নেই বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: আনিছুজ্জামান এর সথে যোগাযোগ করতে অফিসে গেলে একজন উপসহকারী বলেন স্যার জেলায় মিটিংএ আছেন। মোবাইল ফোনে বহুবার যোগাযোগেরর চেষ্টা করেও তার সাথে কথা বলা যায় নি।






Shares