ঢাকাস্থ নাসিরনগরবাসীর মানববন্ধন:: নাসিরনগরের ক্ষতিগ্রস্থ হাওরবাসীকে সরকারি সহায়তার আওতায় আনার দাবী
এম.ডি.মুরাদ মৃধা, নাসিরনগর সংবাদদাতা:ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের ক্ষতিগ্রস্থ হাওরবাসীকে সরকারি সহায়তার আওতায় আনার দাবিতে বানববন্ধন করেছে ’ঢাকাস্থ নাসিরনগরবাসী’। আজ বুধবার বেলা ১১টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সামনে এ মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সরকার হাওরবাসীর জন্য জরুরী ত্রাণসহ অন্যান্য সহায়তার ব্যবস্থা নিয়েছে। এতে আমরা খুশি। তবে নাসিরনগর তথা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুর্গত হাওরবাসীর জন্য সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা না করায় আমরা দুঃখ পেয়েছি। তারা অবিলম্বে হাওরবাসীর জন্য সরকারি সহায়তা বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন।
তারা বলেন, নাসিরনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের মেদির হাওর, গোয়ালনগর ইউনিয়নের উত্তর গাভের হাওর, পাতলপুর হাওর, ভলাকুট ইউনিয়নের লঙ্গণ হাওর, চাতলপাড় ইউনিয়নের বাগাইয়া হাওর, গোর্কণ ইউনিয়নের আকাশী বিলসহ বিভিন্ন হাওরের একমাত্র বোরো ফসল তলিয়ে গেছে।
মানববন্ধনে উত্থাপিত প্রধান দাবিগুলো হলো- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার হাওরবাসীর জন্য বরাদ্দ ঘোষণা করতে হবে। হাওরবাসীর সব ধরণের ঋণ মওকুফ করে আগামী বছরের ধানচাষসহ অন্যান্য ফসলচাষের জন্য আর্থিক সহায়তা দিতে হবে। সমগ্র হাওরাঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে ফসল উৎপাদনের আগামী মৌসুম পর্যন্ত হাওরবাসীকে বিশেষ সহায়তা দিয়ে যেতে হবে ইত্যাদি।
ডেন্টিস্ট লায়ন কামাল হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে ঢাকায় বসবাসরত বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার কয়েকশত মানুষ অংশ নেন। এদেরমধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম, ঢাকাস্থ নাসিরনগর থানা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলী আশ্রাফ, ব্যাংকার রঞ্জন কুমার সরকার, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম মুনির, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইমরান হাবিব রুম্মান, আলী আজম মোল্লাহ, লায়ন সৈয়দ সাজ্জাদ মোর্শেদ সোহান, মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান টিটু, অহিদুজ্জামান টিটু, অ্যাডভোকেট শরীফ চৌধুরী, বাবুল, ফারুক আহমেদ, আতিকুল ইসলাম মানিক, কামরুল হাসান বাবু, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ । মানববন্ধনের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন সাংবাদিক ও তরুণ লেখক সোহরাব শান্ত।
উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া- এই ৭টি প্রশাসনিক জেলার বিভিন্ন অংশে বিস্তৃত রয়েছে হাওরাঞ্চল। অথচ ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়া অন্য ৬টি জেলায় সরকারি ত্রাণ বরাদ্ধ করা হয়েছে। এতে হতাশ ও ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কৃষকরা। কারণ নাসিরনগর উপজেলা হাওরাঞ্চলের অন্তর্গত।
গত রোববার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, হাওর এলাকার বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য জরুরী ত্রাণ সহায়তা হিসেবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ৩ হাজার ৩ শ’ ২৪ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১ কোটি ৯৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছে। এরমধ্যে সিলেটের জন্য ৪২৮ মেট্রিক টন চাল ও ২৪ লাখ ৩৭ হাজার টাকা, সুনামগঞ্জের জন্য ১ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন চাল ও ৭৫ লাখ টাকা, হবিগঞ্জের জন্য ৩০৩ মেট্রিক টন চাল ও ১৪ লাখ টাকা, মৌলভীবাজারের জন্য ৩৪৩ মেট্রিক টন চাল ও ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, কিশোরগঞ্জের জন্য ৫৫২ মেট্রিক টন চাল ও ৩৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং নেত্রকোনার জন্য ৪৪৮ মেট্রিক টন চাল ও ৩২ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়।
দুর্গত হাওরাঞ্চলে প্রতি পরিবারে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা তথা নাসিরনগরের দুর্গত হাওরবাসীর জন্য কোনো ত্রাণ বরাদ্দ নেই।